বলিপাড়ার বড় প্রযোজনা সংস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম নাম করণ জোহরের ধর্মা প্রোডাকশন। তবে শুরুতে এই প্রযোজনা সংস্থার পথচলা এতটাও মসৃণ ছিল না। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ধর্মা প্রোডাকশনের সেই কঠিন দিনের কথা তুলে ধরেছেন পরিচালক নিখিল আডবানি। সেসময় করণের বাবা, ধর্মা প্রোডাকশনের তৎকালীন মালিক যশ জোহরকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
লেহরেন রেট্রো-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিখিল বলেন, ‘আমার মনে আছে করণ (জোহর) আমাকে বলেছিলেন যে একটা সময় ছিল যখন তিনি তাঁর লাইট, ক্যামেরা বিক্রি করে দিয়েছিলেন। বাড়ি বন্ধক রেখেছিলেন। সেসময় হিরু আন্টির হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। সেসময় অমিতজি যশ কাকার সঙ্গে দেখা করে তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘হিরু কেমন আছে?’। তাঁরা দুজনেই খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন কারণ তাঁরা স্কুলের বন্ধু ছিলেন। যশ কাকা তাঁকে (অমিতাভ) বলেন, ‘ও ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি’। আর তখনই অমিতজি শুটিং ছেড়ে হাসপাতালে তাঁকে দেখতে ছুটে যান।’
আরও পড়ুন-পদত্যাগ ঘোষণার দু'দিন পর ফের কিন্নর আখড়ার মহামণ্ডলেশ্বর পদে ফিরলেন মমতা কুলকার্নি
নিখিল আডবানি আরও বলেন, ‘সেসময় তাঁরাও হাসপাতালেই ছিলেন। অমিতজি বেরিয়ে এসে যশ কাকার সঙ্গে দেখা করেন এবং বলেন, ‘একটা ছেলে আছে, যার সঙ্গে আমি একটি ছবি বানাচ্ছি। রমেশ এটার প্রযোজনা করছেন কিন্তু আপনি তাঁকে ফোন করে বলুন যে অমিত আপনার ছবির জন্য ডেট দিয়েছেন। এই ছবির বিষয় স্কারফেস, আমাদের এটা একসঙ্গে করা উচিত।’ আর এভাবেই সেসময় তৈরি হয়েছিল ’অগ্নিপথ' ছবিটি। সেসময় অমিতাভ বচ্চন যশ জোহরকে বলেছিলেন, ‘আমি জানি আপনি কী পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, আমি জানি আপনার এখন কী অবস্থা,!আমি আপনাকে ডেট দিচ্ছি, চলুন কাজ শুরু করি।’
যদিও এতকিছুর পরও 'অগ্নিপথ' ছবিটি সেভাবে বক্স অফিসে সাফল্য পায়নি। তবে সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছিল। পরবর্তী সময় এই ছবিটি আইকনিক ছবির মর্যাদা পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, পরবর্তী সময়ে ধর্মা প্রোডাকশনের সঙ্গে জুড়ে যান পরিচালক নিখিল আডবানি। তাঁর কথায়, ‘ধর্মার সঙ্গে এই তিনটি ছবিতে কাজ করার এই তিনটিকে আমি ঠিক সিনেমা হিসেবে দেখি না, আমি এটাকে এভাবেই দেখি যে সেসময় সময় ধর্মা প্রোডাকশন তৈরি হচ্ছিল। যশ কাকা ও করণ দুজনেই প্রোডাকশন হাউস স্থাপনের চেষ্টা করছিলেন। এই তিনটি ছবি (কুছ কুছ হোতা হ্যায়, কাভি খুশি কাভি গম এবং কাল হো না হো) করণের ধর্ম প্রোডাকশনের ভিত্তি।’
প্রসঙ্গত, এর আগে একটি অনুষ্ঠানে এসে করণ বলেছিলেন যে তাঁর বাবা ধর্ম প্রোডাকশন প্রতিষ্ঠার জন্য বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিলেন। তিনি ‘দোস্তানা’ ছবিটি তৈরি করেছিলেন সেটি সফল হলেও, তিনি পরবর্তীতে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হন। প্রসঙ্গত যশ জোহর ৩০ বছর ধরে প্রযোজনা নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করার পর নিজের কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। তবে যশ জোহর তাঁদের কোম্পানির সেরা সময়টি দেখে যেতে পারেননি, সেকারণেও দুঃখ প্রকাশ করেন করণ।