ক্রীড়াবিদের জীবনযুদ্ধ নিয়ে ছবি বলিউডে নতুন নয়। ক্রিকেট, ফুটবল থেকে বক্সিং, স্পোর্টস ড্রামার ছড়াছড়ি বি-টাউনে। সম্প্রতি ভারতীয় ফুটবলের সোনালি ইতিহাস ও কোচ রহিমের বায়োপিক ময়দান প্রশংসা কুড়িয়েছে। এবার রুপোলি পর্দায় আসছে ভারতের প্রথম প্যারালিম্পিক সোনার পদকজয়ী মুরলীকান্ত পেটকরের জীবনীচিত্র। নাম ভূমিকায় কার্তিক আরিয়ান।
কার্তিকের 'চান্দু চ্যাম্পিয়ন'-এর পোস্টার দেখেই মুগ্ধ হয়েছিল দর্শক। অবশেষে নিজের শহর গোয়ালিয়রে তাঁর জীবনের 'কঠিনতম' প্রকল্পের ট্রেলার সামনে আনলেন কার্তিক আরিয়ান। এই ছবি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন কবীর খান। এদিন গোয়ালিয়রের ক্যাপ্টেন রূপ সিং ক্রিকেট স্টেডিয়াম অভিনেতার ভক্তের উপস্থিতিতে ভরে উঠেছিল।
কবীর খান পরিচালিত এই ছবিতে কার্তিককে দেখা যাবে একজন বক্সার, কুস্তিগীর ও সৈনিকের ভূমিকায়। এই ছবির জন্য় কার্তিকের ফিজিক্যাল ট্রান্সফরমেশনে নিঃসন্দেহে প্রশংসীয়। ট্রেলারের শুরুতেই উঠে আসে ১৯৬৫-র যুদ্ধ। পাক আর্মির ৯টা গুলিতে বিদ্ধ চান্দু। ২ বছর পর আর্মি হাসপাতালে জ্ঞান ফেরে তাঁর।
এরপর ফ্ল্যাশব্যাকের দৃশ্য। পর্দায় উঠে আসে চান্দুর ছেলেবেলা। ছোট থেকেই কুস্তিগীর হওয়ার স্বপ্ন তাঁর, অথচ সহপাঠীরা তাকে নিয়ে মজা করে এবং 'চান্দু চ্যাম্পিয়ন' মন্তব্য করে তাকে উত্যক্ত করে। কিন্তু জীবনযুদ্ধ হার না মানা চান্দু আর্মিতে যোগ দেয়। এরপর ধীরে ধীরে বক্সার হয়ে ওঠে। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস, ভারত-পাক যুদ্ধ বদলে দেয় তাঁর জীবন।
কিন্তু চাম্পিয়ানরা হারতে জানে না, ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠতে জানে। ট্রেলারের শেষ দৃশ্যে দেখা যায় যে বৃদ্ধ চান্দু চ্যাম্পয়ান নিজের মেডেল টেবিলের উপর সাজিয়ে রেখে জানায়, দেশের রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করতে চান তিনি!
ঘাটকোপারে হোর্ডিং ধসে আত্মীয়দের মৃত্যুর যন্ত্রণা বুকে চেপেই শনিবার ছবির ট্রেলার লঞ্চ করলেন কার্তিক। সোমবার মুম্বইয়ের ঘাটকোপার এলাকায় হোর্ডিং ভেঙে পড়ে কার্তিকের আত্মীয় মনোজ চানসোরিয়া ও অনিতা চানসোরিয়া-সহ ১৬ জনের মৃত্যু হয়। স্বজনদের শেষকৃত্যেও অংশ নেন তিনি। নিজের শহরে এই ছবির ট্রেলার লঞ্চে আগেবঘন কার্তিক। অভিনেতা বলেন, ‘এটি আমার কাছে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মুহূর্ত। এখানেই আমি অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম এবং আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন চলচ্চিত্রটি এখানে আনতে পারাটা অবিশ্বাস্য’।
১৯৮৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলকে নিয়ে ৮৩ তৈরি করেন কবীর। এই ছবি মুক্তির পরেই চান্দু চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেছিলেন পরিচালক। মুরলিকান্ত পেটকারের ভারতের প্রথম প্যারালিম্পিক যিনি ১৯৭২ সালে জার্মানিতে গ্রীষ্মকালীন প্যারালিম্পিকে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন।
সাজিদ নাদিয়াদওয়ালা ও কবীর খানের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ছবিটি আগামী ১৪ জুন বড় পর্দায় মুক্তি পাবে।