অক্সফোর্ডের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার সুযোগ পাওয়া কি চাড্ডিখানি কথা? কত অধ্য়াবসায় থাকলে তবে সেই সুযোগ মেলে, অথচ গত দু-বছর ধরে সেই সুযোগ দূরে ঠেলে রেখেছেন উজান গঙ্গোপাধ্যায়। পরিচালক-অভিনেতা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী-পরিচালক চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের সুযোগ্য পুত্র তিনি।
বৃষ্টিমুখর সোমবারে উজানের মন উঁকি দিল হাজারো প্রশ্ন। কোথাউ যেন তাঁর মনে আক্ষেপের চোরাস্রোত। একদিকে পরিচালক হওয়ার ইচ্ছে, অন্যদিকে অক্সফোর্ডের হাতছানি, ‘শ্যাম রাখি না কুল’ বুঝেই উঠতে পারছেন না টলিউডের ‘লক্ষ্মী ছেলে’।
এদিন লন্ডনে কাটানো পড়ন্ত মেঘলা বিকালের দুটো ছবি নিজের ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে নেন উজান। প্রথম ছবিটি আলসেমিতে ভরা। ছাদের উপর রাখা চেয়ারে দু-পা তুলে শুয়ে রয়েছেন উজান। অন্যটিতে দিগন্তে হাত ধরাধরি করে রয়েছে টেমস আর লন্ডনের নীল আকাশ। মিলেমিশে একাএকার মন কেমনের ডাক। সঙ্গে লেখেন, 'সেদিন আকাশে লেখা ছিল, যে অক্সফোর্ডে ডিফিল করার সুযোগ ছেড়ে দিয়ে আমি কলকাতা ফিরে আসবো। অভিনয় করতে, গল্প বুনতে। হয়তো একদিন ডক্টরেট করার ছেলেবেলার ইচ্ছে পূরণ করতে আবার থাকবো সেই ঠান্ডা সূর্যহীন দেশে। কিন্তু আপাতত, আমার সিনেমার পোকা গাইছে - ‘যত ভাবি, ভুলে গেছি, তবু চুপিচুপি খোঁজে সে আমায়!’
উজানের লেখনিতে স্পষ্ট সিনেমার পোকাকে গুরুত্ব দিয়ে ঘরে ফিরেছিলেন তিনি, তবুও উচ্চশিক্ষার ডাক বারবার তাঁর কানে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। উজানের এই পোস্টের মন্তব্য বাক্সে জ্বলজ্বল করছে অভিনেত্রী সৌমিতৃষা কুণ্ডুর মন্তব্য। তিনি লেখেন, 'যা হয় ভালোর জন্য'। বন্ধু সৌমিতৃষার সঙ্গে সহমত পোষণ করে উজান লেখেন, ‘একদম’।
একদিকে যখন আদৃত-কৌশাম্বির বিয়ে নিয়ে চর্চায় সৌমিতৃষা, তখন নায়িকার সঙ্গে উজানের ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব নিয়ে শুরু হল আলোচনা। সৌমিতৃষা ও উজান ভক্তদের দাবি, ‘এবার তোমাদের জুটি হিসাবে দেখতে চাই পর্দায়’।
সামনেই মুক্তি পেতে চলেছে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের অযোগ্য এই ছবির ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টরের ভূমিকায় রয়েছেন উজান। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তরের পরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বসাহিত্যে ডিসটিংশন-সহ স্নাতকোত্তর। তাঁর কথায় তাঁর উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে বাবা-মা দুজনের অবস্থান দুই মেরুতে। কৌশিক চান ছেলে সিনেমা জগতে থেকে যাক। তবে চূর্ণীর ইচ্ছে উজান একজন স্কলার। তাই অ্যাকাডেমি জগতে আরও আনন্দে থাকবে সে।
উজানের পোস্টে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় লেখেন,'এই সিনে-পোকা আমায়, তোমার মাকেও ‘চুপিচুপি’ ডেকেছিল এক দিন…বাপ-মা তো, তাই এই পেশার চেনা অনিশ্চয়তা সন্তানের জীবনে ভাবতে শঙ্কা হয়!' উজানের পোস্টে চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস তুমি আবার পারবে। সেই সুদূর ঠান্ডা সূর্যহীন দেশের হাতছানিও বড় সাংঘাতিক। তা উপেক্ষা কোরো না।’