কোন ছদ্মনাম ধারণ করে ভারতীয় বংশোদ্ভূত নুর ইনায়ত খান ব্রিটিশ গুপ্তচর হিসাবে ফ্রান্সে কাজ করেছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন, এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়ে কৌন বনেগা ক্রোড়পতির প্রথম কোটিপতি হয়েছেন আগ্রার স্কুল শিক্ষিকা হিমানী বুন্দেলা। তবে ৭ কোটির প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আটকে যান এই দৃষ্টিহীন প্রতিযোগী। কোনওরকম রিস্ক না নিয়ে খেলা ছেড়ে বেরিয়ে আসেন হিমানী। জানেন কি সেই প্রশ্নের উত্তর, যার সঠিক জবাব হিমানীকে জিতিয়ে দিতে পারত ৭ কোটি টাকা?
৭ কোটি টাকা জিততে হলে হিমানীকে ইতিহাসের পাতা থেকেই উঠে আসা এই প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে হত। অমিতাভ প্রশ্ন করেছিলেন, ‘কী ছিল সেই গবেষণা পত্রের শীর্ষক যা লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্সে ডক্টরেট ডিগ্রী লাভের জন্য ১৯২৩ সালে জমা দিয়েছিলেন ডঃ বি আর আম্বেদকর?'
হিমানীর সামনে ছিল চারটি অপশন, a) দ্য ওয়ান্ট অ্যান্ড দ্য মিনস অফ ইন্ডিয়া (The Want And Means Of India) b) দ্য প্রবলেম অফ দ্য রুপি (The Problem Of The Rupee) c) ন্যাশ্যানাল ডিভিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া (National Dividend Of India) এবং d) দ্য ল অ্যান্ড লয়ারস (The Law And Lawyers)
এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর না জানা থাকায়, ১ কোটি টাকা নিয়ে খেলা শেষ করবার কথা জানান হিমানী। তবে জ্যাকপট প্রশ্নের সঠিক উত্তর দর্শকদের জানানোর আগে সঞ্চালক অমিতাভ বচ্চন হিমানীকে একটি অপশন বেছে নেওয়ার আবেদন জানান। হিমানী বেছে নিয়েছিলেন তিন নম্বর অপশনটি, c) ন্যাশ্যানাল ডিভিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া। যদিও এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর ছিল b) দ্য প্রবলেম অফ দ্য রুপি।
১৯২৩ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় ভারতীয় সংবিধানের জনক, তথা স্বাধীন ভারতের প্রথম আইনমন্ত্রীর লেখা ‘দ্য প্রবলেম অফ দ্য রুপি'। এই গবেষণাপত্রে ডঃ বি আর আম্বেদকর ব্রিটিশ শাসিত ভারতে মুদ্রা ব্যবস্থার সমস্যার কথা তুলে ধরেছিলেন। পরবর্তী সময়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রতিস্থাপনা হয় হিল্টন ইয়াং কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী। আম্বেদকরের গবেষণাপত্রে উল্লেখিত গাইডলাইন্স মেনেই হিল্টন ইয়াং কমিশন নিজেদের সুপারিশ সামনে রেখেছিলেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাত্কারে হিমানী জানিয়েছেন, এই গেম শো-তে হাজির হওয়ার আগে বেশকিছু সন্দেহ ছিল তাঁর মনে। তিনি ভেবেছিলেন হয়ত চোখে দেখতে পান না বলে তাঁকে সকলে সহমর্মিতার দৃষ্টিতে দেখবে, আর পাঁচজন প্রতিযোগির সঙ্গে যেমন ব্যবহার করা হয় হয়ত তাঁকে তার চেয়ে আলাদাভাবে দেখা হবে। তবে হিমানী জানান, সেটে পৌঁছানো মাত্র তাঁর ভয় কেটে যায়। ‘ওখানে আমাকে সকলে সম্মান দিয়েছে, সাধারণ ব্যবহার করেছে আমার সঙ্গে, সেটাই আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়’, জানান এই কোটিপতি প্রতিযোগী।