জমিয়ে শুরু হয়ে গেছে 'কৌন বনেগা ক্রোড়পতি'-র ১৩ নম্বর সিজন। কয়েক সপ্তাহ আগেই শুরু হয়েছে এই নতুন সিজনের সম্প্রচার। সোম থেকে শুক্র সোনি টিভিতে সম্প্রচারিত হয় এই গেম শো। পাশাপাশি সোনি লিভ অ্যাপ এবং জিও টিভি-তে দেখা যায় কৌন বনেগা ক্রোড়পতি।সপ্তাহ তিনেক কাটতে না কাটতেই ছোটপর্দায় রমরমিয়ে চলছে কেবিসি-র এই নতুন সিজন।চলতি সপ্তাহের 'শানদার শুক্রবার' এর এপিসোডের অতিথি হিসেবে হাজির হয়েছিলেন দেশের দুই রত্ন নীরজ চোপড়া ও পি আর শ্রীজেশ।
জ্যাভলিনে দেশকে প্রথম সোনা এনে দিয়েছেন নীরজ চোপড়া। অন্যদিকে, ছেলেদের হকি টিমের সদস্য পি আর শ্রীজেশও হাজির ছিলেন নীরজের সঙ্গে। হকিতে টোকিও অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জিতেছে ভারতীয় টিম। শো চলাকালীন পরিবারের প্রসঙ্গ উঠতে অমিতাভকে শ্রীজেশ বলেন তাঁর হকি খেলার সরঞ্জাম কিনে দেওয়ার জন্যে পরিবারের অন্যতম আয়ের উৎস বাড়ির গরুটিকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা। যা শুনে দৃশ্যতই হতবাক হয়ে পড়েন 'বিগ বি'।
কেবিসি-তে প্রশ্নোত্তর করার ফাঁকফোকরে দুই অলিম্পিকজয়ীর সঙ্গে নানান গল্প-আড্ডাতেও মেতেছিলেন অমিতাভ। সেসব চলাকালীন শ্রীজেশের পরিবার এবং তাঁর বাবার সঙ্গে ওঁর সম্পর্ক কেমন তা জানতে চান 'শাহেনশাহ'। জবাবে যা বলেন অলিম্পিকজয়ী ভারতের হকি টিমের কিপার শুনে সামান্য আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন অমিতাভ। শ্রীজেশ জানান তাঁদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা কোনওদিনই খুব একটা স্বচ্ছল ছিল না।তাই যখন শ্রীজেশ জি ভি রাজা স্পোর্টস স্কুলে সুযোগ পেয়েছিলেন প্রথমেই তাঁর বাবা তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে হকি খেলে কোনও চাকরি জোটাতে পারবে কি না সে। কোনওরকমে বাবাকে তিনি বলেছিলেন যে তাঁকে যেন বছর তিনেক সুযোগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে সে যদি উন্নতি করতে না পারে তাহলে আর কোনোদিক না দেখে সোজা খেলা ছেড়ে দেবেন তিনি। চাকরির ধান্ধায় অন্য কিছু করবেন। এইভাবেই হকির গোলকিপার হিসেবে ট্রেনিং শুরু হয় তাঁর।
সামান্য থেমে অলিম্পিকজয়ী আরও জানান যে হকির গোলকিপারের ট্রেনিং নেওয়াটা যথেষ্ট খরচসাপেক্ষ। সেখানে তাঁদের মতো পরিবারের ক্ষেত্রে এর খরচ চালানোটা আরও বেশি কষ্টসাধ্য ছিল। এদিকে কোচ শ্রীজেশকে ততদিনে বলে দিয়েছেন যে কিপিংয়ের প্যাড ও বাকি সরঞ্জাম কেনার জন্য যার মূল্য বেশ মোটা অঙ্কের টাকা। উপায় না দেখে তাঁর বাবাকেই জানান শ্রীজেশ। ফোনের ওপর থেকে 'দেখছি' বললেও এরপর সেই টাকা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। অনেক পরে বাড়ি ফিরে মায়ের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে শ্রীজেশ জানতে পারেন যে তাঁদের পরিবারের আয়ের অন্যতম উৎস গরুটি বিক্রি করে দিয়েছেন তাঁর বাবা। স্রেফ শ্রীজেশের খেলার সরঞ্জামের জিনিসপত্রের খরচ ওঠাবেন বলেই!
নিজের বক্তব্য শেষে শ্রীজেশ যোগ করেন, ' যখনই হাল ছেড়ে দেওয়ার কথা মনে হয়, বাবার ওই ত্যাগ স্বীকারের কথা আমার মনে ভেসে ওঠে। অদ্ভুত জোর পাই। তখন মনে হয় উনি এতবড় ঝুঁকি নিয়েছিলেন স্রেফ আমার প্রতি তাঁর অটুট বিশ্বাসের থেকে যে ভবিষ্যতে তাঁর ছেলে সফল হবেই। সেই কথা ভেবেই নিজেকে উজ্জীবিত করি'।