সময় যত গড়চ্ছে প্রতিবাদের স্বর তত বলীয়ান হচ্ছে। আর জি করের নৃশংস খুন ও ধর্ষণ মামলার পর ৩৬দিন কেটেছে। কিন্তু সুবিচারের অপেক্ষায় দিন গুণছে গোটা বাংলা। ডাক্তার দিদির বিচার চেয়ে স্বাস্থ্য়ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। বৃষ্টিতে ভিজে, কার্যত না ঘুমিয়ে গত পাঁচ দিন ধরে স্বাস্থ্যভবনের সামনে রয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকরা। পরপর দু-দিন মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে পৌঁছেও মিটিং হয়নি!
শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্যভবনের সামনে পৌঁছেছিলেন মমতা। জুনিয়র ডাক্তারদের ‘দিদি’ হিসাবে সেখানে হাজির হয়ে কাজে ফেরার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর সন্ধ্যায় দিদির ডাকে সাড়া দিয়ে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে পৌঁছায় জুনিয়র চিকিৎসকদের ৩০ সদস্যের দল। সেই দলে ছিলেন কিঞ্জল নন্দও। যদিও রুদ্ধশ্বাস কয়েক ঘণ্টা কাটার পর বৈঠক হয়নি। শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকারের সব দাবি মেনে নিলেও ‘দেরি হয়ে যাওয়ায়’ আন্দোলনকারীদের চলে যেতে বলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
গত কয়েকদিন ধরে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদ আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছেন কিঞ্জল নন্দ। টলিপাড়ার চেনা মুখ কিঞ্জল, রুপোলি পর্দায় তাঁর অভিনয় গুণ মুগ্ধ করেছে সকলকে। তবে বাস্তবে কিঞ্জল একজন জুনিয়র ডাক্তার। কিঞ্জল ও তাঁর সহযোদ্ধাদের লড়াইকে কুর্নিশ জানাচ্ছে নেটপাড়া। এর মাঝেই সোশ্যালে ভাইরাল একটি ভিডিয়ো। শনিবার গভীর রাতের এই ভিডিয়োতে দেখা গেল মমতার দরজা বন্ধ হওয়ার পর স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ফিরে এসে সহযোদ্ধাদের জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন কিঞ্জল।
এর আগে কালীঘাটে মমতার বাড়ির সামনেও জুনিয়র চিকিৎসকদের কান্নায় ভেঙে পড়ার ছবি দেখেছে গোটা দেশ। হতাশা, কান্না বুকে চেপেও আরজি করের নির্যাতিতার জন্য বিচারের দাবিতে পথ ছাড়ছেন না জুনিয়র চিকিৎসকরা।
মমতার সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের জোর হাতে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি নিজের ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করে কিঞ্জল লেখেন, ‘আমরা চেয়ার চাই না, বিচার চাই’। প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু-দিন আগে নবান্ন থেকে বলেছিলেন- ‘আমি পদত্যাগেও রাজি, তবে ওরা বিচার চায় না, চেয়ার চায়’। তারই পালটা জবাব দিলেন কিঞ্জল।
এদিকে শনিবার আরজি করে খুন ও ধর্ষণ কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। একইসঙ্গে টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকেও গ্রেফতার করা হয়, তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে। সিবিআই- এর তরফে সুপ্রিম কোর্টে আগেই বলা হয়েছিল যে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ক্রাইম সিন বিকৃত করা হয়েছে, তথ্য প্রমাণ সঠিকভাবে সংগ্রহ করা হয়নি। সেই কারণ দেখিয়েই এবার গ্রেফতার এই মামলায় শুরু থেকে বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডল।