শনিবার সন্ধ্যা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ফের স্নায়ুর যুদ্ধ! মমতার ডাকে সাড়া দিয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা এদিন কালীঘাটের বাড়িতে গেলেও শেষমেশ বৈঠক হল না! মমতার বাসভবনে গিয়ে শুরুতে বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং করার ব্যাপারে অনড় ছিল প্রতিবাদী চিকিৎসকরা। পরে অবশ্য দু-পক্ষের ভিডিয়ো রেকর্ডের কথা জানায় তাঁরা। তাতেও রাজি হয়নি রাজ্য সরকার।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বাইরে এসে চিকিৎসকের সামনে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তিন ঘণ্টাতেও জটিলতা কাটেনি। অবশেষে ভেস্তে যায় বৈঠক। জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, কার্যত ঘাড়ধাক্কা দিয়ে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য তাঁদের বার করে দেন।
লাইভস্ট্রিমিংয়ের দাবি ছেড়ে কোনওরকম ভিডিয়ো ছাড়াই বৈঠকে একদম শেষ পর্যায়ে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসকার। মুখ্যমন্ত্রীর উপর ভরসা রেখে শুধুমাত্র বৈঠকের মিনিটস অফ মিটিং নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতেন ডাক্তাররা। এমনই দাবি করলেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা দাবি করলেন, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরা এসে বলেন যে আজ অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আজ আর হবে না। বাসে করে বেরিয়ে যেতে বলেন। নাহলে বাস ডেকে বের করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন চন্দ্রিমা। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী কার্যত তাঁর ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন বলে দাবি করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এরপরেই ফেসবুকে গর্জে উঠেন কিঞ্জল।
জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের অন্যতম প্রতিবাদী মুখ তিনি। কিঞ্জল ফেসবুকে লেখেন, ‘আপোষ না সংগ্রাম?’ শুভাকাঙ্খীরা একবাক্যে জানান- ‘কোনও আপোস নয়, সংগ্রাম’। শুরু থেকেই আরজি করের নির্যাতিতা তরুণীর বিচার চেয়ে পথে নেমেছেন শোভন গঙ্গোপাধ্যায়।
এদিনের ঘটনা শেষে শোভন ক্ষোভের সুরে লেখেন- ‘জুনিয়র ডাক্তাররা মিনিটসে রাজী হওয়ার পরেও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য্য বলেছেন, ‘তিন ঘন্টা হয়ে গেছে, এখন হয় নিজেরা চলে যাও নয়তো বের করে দেওয়া হবে!’ তারপর গাড়ি চালিয়ে বেরিয়ে যান। এগুলো কী হচ্ছে?’
মুখ্যমন্ত্রী কালীঘাটের বাড়ির বাইরে এসে জুনিয়র ডাক্তারদের বৃষ্টিতে না-ভেজার পরামর্শ দেন এদিন। তাঁদেরকে দেওয়া ছাতা মাথায় নেওয়ার অনুরোধ করেন। নিজে শুকনো জামাকাপড়ও পৌঁছে দেন। শেষপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, যখনই বৈঠক করবেন না, তখন কেন তাঁকে অসম্মান করা হল? সেইসঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের আর্জি জানিয়ে তিনি বলেন যে তাঁরা যদি বৈঠক না করেন, তাহলে যেন নিদেনপক্ষে বাড়িতে ঢুকে চা খেয়ে যান।
তাতেও রাজি হয়নি জুনিয়র ডাক্তাররা। বৃষ্টিতে ভেজা প্রসঙ্গে কিঞ্জলের সাফ বার্তা, ‘আমরা বৃষ্টির মধ্যে,,ওনারা যদিও ভেতরে বসার আয়োজন করেছেন,কিন্তু আমাদের ভাই বোনেরা বাইরে ,,তাই আমরাও..’।
জুনিয়র ডাক্তার ও মমতার মিটিং ভেস্তে গেলেও শনিবার রাতে আরজি কর খুন ও ধর্ষণের মামলায় বড় খবর এল সিবিআইয়ের তরফে। তদন্তের তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে।