আরজি কর নির্যাতিতার হয়ে বিচার চেয়ে আন্দোলনরত ডাক্তারদের নানাভাবে পড়তে হয়েছে কুৎসার মুখে। বিশেষ করে, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ও সমর্থরা নানাভাবে নানা সময়ে মৌখিক আঘাত হেনেছেন। রাজনীতির রংও লাগানোর চেষ্টা করেছেন সাদা কোটে। তবে, জুনিয়র চিকিৎসকরা প্রমাণ করেছেন তাঁরা মানুষের স্বার্থে। শুক্রবারই ত্রাণ নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন একাংশ। এতদিনে স্বাস্থ্য ভববনের সামনে চলা আন্দোলনে খাবার-পোশাক-জল পৌঁছে দিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। এবার সাধারণ মানুষের সেই সাহায্যই পৌঁছে যাবে বন্যার্তদের কাছে।
শুক্রবার রাতের দিকে একটি পোস্ট শেয়ার করেন অভিনেতা-ডাক্তার কিঞ্জল নন্দ। প্রথম ছবিটি একটি টুরিস্ট বাসের সামনে দাঁড়িয়ে জুনিয়র ডাক্তররা। সামনে ব্যানারে লেখা, ‘আমাদের দাবি’। পরের ছবিতে দেখা গেল টোটো-তে ভর্তি খাবার। যা সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। একটা ভিডিয়োও দিয়েছেন তিনি। যেখানে দেখা যাচ্ছে, লাইন দিয়ে খাবার সংগ্রহ করছেন বন্যার্তরা।
আরও পড়ুন: 'অনেক ধাক্কা খেয়েছি, লাথি খেয়েছি…' মুখোশধারীদের নিয়ে মুখ খুললেন কৌশানী
প্রতিটা পোস্টেই ক্যাপশন ‘আমরা’ রেখেছেন তিনি। এক নেট-নাগরিক মন্তব্য করেছেন, ‘অনেক অনেক ভালোবাসা নিও তোমরা সকলে | আর এইভাবেই একটা সঠিক, স্বাস্থকর সমাজ নির্মাণে নিয়োজিত থেকো | পাশে ছিলাম, আছি, থাকবোও |’ অপরজনের মন্তব্য, ‘আপনাদের এই দৃঢ় প্রত্যয়, ঐক্য আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে।’ তৃতীয়জন লেখেন, ‘আপনারূ যোদ্ধা… জনগণের তরফ থেকে অনেক ভালোবাসা, অভিনন্দন। খুব ভালো থাকো তোমরা। সাবধানে থাকবে। আমরা আছি আপনাদের সঙ্গে।’ তৃতীয়জন লেখেন, ‘ভলেন্টিয়ার লাগলে জানিও। আমরা পৌঁছে যাবো তোমাদের পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার জন্য।’
আরও পড়ুন: মশাল মিছিলের রাতে হঠাৎ দুর্যোগ! আরজি কর নিয়ে অদম্য কলকাতা, ‘যতই আসুক বৃষ্টি ঝড়…’
বাংলার বন্যা কবলিত এলাকায় গিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বৃহস্পতিবার রাতে ঘোষণা করেছিল রাজ্যের জুনিয়র ডক্টর্স ফোরাম।
এদিকে, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি উঠে গিয়েছে ঠিকই, তবে তাঁদের তরফে ' রাজ্য প্রাসনকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, যদি সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত সরকারের পদক্ষেপ নজরে না পড়ে, তাহলে ফের কর্মিরতি শুরু করা হবে।
তাঁরা জানিয়েছেন, 'আমাদের বেশ কিছু আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে শুধুমাত্র আশ্বাসের পর্যায়েই তা রয়েছে। শুধুমাত্র ১০০ কোটি টাকা অনুমোদন করেছি, এটা বললেই তো হাসপাতালের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা আসে না। আমরা সুপ্রিম কোর্টের আগামী শুনানির আগেই সরকারের তরফে এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ আশা করছি। আমরা যদি দেখি যে শুধু মৌখিক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, কাজের কাজ কিছুই হয়নি, তাহলে আবার আমাদের আন্দোলন জারি থাকবে।'
সঙ্গে নির্যাতিতার বিচার যতদিন না আসবে, ততদিনও লড়াই জারি রাখবেন, সে আশ্বাসও দিয়েছেন সাধারণ মানুষকে। জানান, 'আমাদের আন্দোলনের চাপে গ্রেফতার হয়েছেন আরজি করের কুখ্যাত প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। টালা থানার ওসি। পদচ্যুত হয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। তা ছাড়া হাসপাতালের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু নির্দেশিকা পেলেও বহু দাবি পূরণ হওয়া এখনও। তার মধ্যে মূল হল চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার বিচার।'