জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন এবং ১০ দফা দাবি নিয়ে সোমবার নবান্নে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি হিসাবেই এদিন নবান্নে পৌঁছেছিলে কিঞ্জল নন্দ। কিন্তু প্রশ্নের মুখে পড়ল তাঁর এক আচরণ।
মঞ্চ, বড়পর্দা থেকে ওয়েবসিরিজের জনপ্রিয় মুখ কিঞ্জল। কিন্তু হালে তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছেন। কারণ অভিনয় তাঁর নেশা হলেও পেশায় তিনি চিকিৎসক। এগরার এরেন্দা গ্রামের ছেলে, বর্তমানে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মাইক্রো বায়োলজিতে এমডি করছেন তিনি। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সামনে কিঞ্জলকে একটা সময় মাথার পিছনে হাত দু-হাত দিয়ে একদম রিল্যাক্স মুডে বসে থাকতে দেখা যায়।
তাঁর এই আচরণকেই ‘অশোভন’ বলে দাগিয়ে দিল তৃণমূল সমর্থকরা। সেই নিয়ে সমালোচনার ঝড় সোশ্যালে। এক নেটিজেন বলেন, ‘আপনার কাছে হাজারো ডিগ্রি থাকতে পারে কিন্তু পারিবারিক শিক্ষার ওপর কিছু নেই।’ অপর একজনের কথায়, ‘এটাই বলছি অনেক দিন ধরে, মেধাবী হলেই ভালো মানুষ হয় না।’
অপর এক নেটিজেন লেখেন, ‘জানি ওরা মমতা ব্যানার্জী কে সম্মান করেনা..কেও করতেও বলেনা..কিন্তু চেয়ার টাকে তো সম্মান করতে পারত..উনি ১টা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী...সঙ্গে অতগুলো উচ্চপদস্থ আইপিএস আইএএস অফিসার..কি ভদ্রতা’। তবে সকলেই যে এই ছবির সমালোচনায় মুখর এমনটা নয়। একজন লেখেন, ‘কেন? এই ছবিতে কি খারাপ আছে ? মানসিক শিক্ষা দরকার হতে পারে যদি এই ছবি থেকে অন্য কিছু ধরার চেষ্টা করা হয়।’
এদিন বৈঠক চলাকালীন কিঞ্জল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, 'ডায়মন্ড হারবারে থ্রেট কালচারে অভিযুক্ত অধ্যক্ষের ঘরে তালা দিয়েছে। আর জি কর মেডিক্যালে হামলায় অভিযুক্তরা সবাই জামিনে মুক্ত, কীভাবে?' এই বিষয় নিয়েই সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান জানতে চান তিনি। যোগ করেন, 'যৌন হেনস্থা থেকে চাঁদা আদায়, হেনস্থা--থ্রেট কালচারে কিছুই বাকি নেই। অনেকে অনেক কিছু বলতে পারে না, বলার জায়গাও নেই। অধ্যক্ষের ঘরে তালা, তাহলে কোথায় সুরক্ষা?
এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় কিঞ্জলের সঙ্গে সহমত পোষণ করে বলেন,'ডায়মণ্ড হারবারের যে কথা আপনারা বললেন সেটা এর আগেও অনেক জায়গায় হয়েছে। এই আন্দোলন চলাকালীন আমি টিভিতে দেখেছি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে হয়েছে। সেখানে এক চিকিৎসককে চাপ দিয়ে ইস্তফা দেওয়ানো হয়েছে। এটাও তো থ্রেট কালচার। কিঞ্জলের কথার সঙ্গে আমি সহমত। হাসপাতালে সুস্থ, স্বাভাবিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে।'
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ২ ঘণ্টার বৈঠক এসে ধর্মতলায় অনশন মঞ্চে ফিরে আসেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এরপর আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং মেডিক্যাল কলেজের তরুণী চিকিৎসকের বাবা ও মায়ের কথায় আমরণ অনশন তুলে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।