এতদিন ধরে যে ভয়টা ছিল, তাই সত্যি হল। অষ্টমীর রাতে হাসপাতালে ভর্তি করানো হল অনশনরত জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোকে। আরজি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অনিকেতকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে আরজি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সিসিইউতে ভর্তি করে চিকিৎসা চলছে। এদিকে অবস্থা খারাপ, আরও এক জুনিয়র ডাক্তারের। তিনি হলেন স্নিগ্ধা।
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের এক পরিচিত মুখ আশফাক উল্লাহ নায়ার জানিয়েছেন, ‘সঠিক সময় নিয়ে আসার জন্য প্রাণঘাতী হয়নি। কিন্তু আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসা চলছে।’ এদিকে, অনিকেতকে হাসপাতালে ভর্তি করার ছবি-ভিডিয়ো সামনে আসতেই, নির্ঘুম রাত কেটেছে বাংলার কিছু মানুষের। স্ট্রেচারে করে তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানোর ভিডিয়োতে কমেন্টের বন্যা।
কিঞ্জল রাতের দিকেই পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডয়াতে। সেখানে তিনি বন্ধু-সহকর্মীর উদ্দেশে বার্তা দিয়ে লেখেন, ‘এই ভালো ছবিটা থাক। তুমি তো ঠিক থাকবেই আমি জানি। সুস্থ হয়ে এসো, অনেক কথা আছে।’
এক নেটিজেন এতে মন্তব্য করেছেন, ‘সুস্থ হয়ে ওঠো অনিকেত মাহাতো। আমাদের সবার জন্য তোমাদের লড়াই। এই লড়াই আমরা জিতবোই তোমাদের জন্য। সুস্থ হও।’ আরেকজন লিখলেন, ‘অনিকেতকে সুস্থ ফেরত চাই। বাকি আর কিছু জানি না এই মুহূর্তে।’
হাসপাতাল সুত্রে খবর, অনিকেতের শরীরে আইভি ফ্লুইড চালানো হয়েছে। রক্তের একাধিক পরীক্ষা করা হয়েছে। আরজি করের ডাক্তার সৈকত নিয়োগী বৃহস্পতিবার সকালেই জানিয়েছিলেন, অনিকেতের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর মূত্রে কিটোন বডি পাওয়া গিয়েছে। তাঁকে আইসিইউতে পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার। তবে সেই সময় অনিকেত জানান, তিনি কিছুটা সুস্থ বোধ করছেন। তবে বৃহস্পতিবার রাতের রক্ত পরীক্ষার পর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলের সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তখন যে ছয় জন যোগ দেন, তাতে ছিলেন না অনিকেত। রবিবার রাত থেকে তিনি অনশন করছেন। অনশনে বসা জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে কেউ আরজি করের না থাকায়, সেই সময় একাংশ কটাক্ষ শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আওয়াজ দেওয়া হয় রাজ্যের শাসক দলের পক্ষ থেকে। তারপর রবিবার অনিকেত বসেন অনশনে। এখনও যারা রয়েছেন ধর্মতলায় অনশনে, তাঁদের মধ্যে আছেন তনয়া পাঁজা, স্নিগ্ধা হাজরা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অর্ণব মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য।