করোনা সংক্রমণ বাড়ছে হু হু করে।করোনার অন্য রূপগুলির তুলনায় ওমিক্রনের সংক্রমণের হার অনেক বেশি। ফলে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এটি। ইতিমধ্যেই নাইট কার্ফু জারি করা থেকে শুরু করে করোনা যাবে নানান বিধি জোরদারভাবে পালন করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। যার মধ্যে একটি সিনেমা হলগুলোতে অর্ধেক দর্শকাসন নিয়েই ছবি প্রদর্শন। বর্তমানে কন্টেনমেন্ট জোন ছাড়া এভাবেই চালু রয়েছে সিনেমা হলগুলো। গত বছরের শেষে প্রায় একসঙ্গে হলি-বলি-টলির একাধিক ছবি মুক্তি পাওয়ায় চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল সিঙ্গল স্ক্রিন হলগুলোর ব্যবসা। তবে এর পরপরই আচমকা আছড়ে পড়েছিল করোনার তৃতীয় ঢেউ। দ্রুত আতঙ্ক ছড়াতে শুরু করে মানুষের মনে। তা বর্তমানে এই করোনা হানায় কেমন চলছে শহরের সিঙ্গল স্ক্রিনগুলো?
শহরের অন্যতম পুরনো সিঙ্গল স্ক্রিন হলগুলোর মধ্যেও অন্যতম প্রাচী। কিছুদিন আগেই ঢেলে সাজানো হয়েছে এই প্রেক্ষাগৃহ। শিয়ালদহ স্টেশনের কাছাকাছি বলে এই হল মফঃস্বল থেকেও যথেষ্ট সংখ্যক দর্শক টানতে সক্কম। এইমুহূর্তে প্রাচী সিনেমা হলে ‘স্পাইডারম্যান’, ‘টনিক’ ও ‘পুষ্পা’ চলছে। হলের কর্ণধার বিদিশা বসু জানিয়েছেন বর্তমানে 'পুষ্পা' দারুণ ব্যবসা দিচ্ছে তাঁর হলকে। অন্যদিকে, 'টনিক' দুর্দান্ত শুরু করলেও এখন খানিকটা ব্যাকফুটে। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, 'দেবের এই ছবি তো আদতে পরিবারকেন্দ্রিক। আবার এই করোনার আবহে পরিবারের সকলে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। তবুও বলব, গত রবিবারও টনিক ভালো ব্যবসা করেছে।’ আর স্পাইডারম্যান' বিগত সপ্তাহ দুয়েক ভালো ব্যবসা দিলেও এখন আর চলছে না।
আসা যাক দক্ষিণ কলকাতায়। নবীনাতে দুপুর বিকেল স্রেফ 'টনিক' দেওয়া হচ্ছে দর্শকদের। হলের মালিক নবীন চোখানি জোর গলায় জানালেন তাঁর হলে এখনও চুটিয়ে ব্যবসা করে চলেছেন দেব-পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ছবি করোনার বাজারেও ভালো দর্শক টানছে। তাঁর বক্তব্য, এমতবস্থায় দেড়শো জন মানুষও হলে সিনেমা দেখতে এলে তা দারুণ ব্যাপার। আর সেটাই হচ্ছে তাঁর হলে, ফলে যথেষ্ট খুশি তিনি।
প্রিয়া সিনেমা হলের ক্ষেত্রেও ছবিটা এক। প্রিয়ার কর্ণধার অরিজিৎ দত্ত বললেন, ‘ টনিক,পুষ্পা এবং স্পাইডার ম্যান তিনটি ছবিই চলছে এখানে। তবে সবাইকে ছাপিয়ে এখনও এক নম্বরে টনিক রয়েছে।’ ওদিকে মিনার-বিজলি-ছবিঘরের কী খবর? এই তিন সিনেমা হলের চেনের কর্ণধার সুরঞ্জন পাল জানিয়েছেন এখনও তাঁর হলে যা ব্যবসা হচ্ছে তিনি মতের উপর খুশি। বিশেষ করে এখনও রমরম করে চলছে টনিক। তাঁর দাবি, 'স্পাইডার ম্যান' হলিউডি ছবি। সে তার নিজের মতো ব্যবসা করেছে। 'পুষ্পা'ও মোটের উপর ভালো। কিন্তু 'টনিক' দারুণভাবে চলছে এখনও তাঁর হলে। তবে একইসঙ্গে তাঁর আশঙ্কা করণের সুবাদে স্থগিত হয়ে গেল বলিউড ও টলিউডের বড় বাজেটের সব ছবি। ফলে দর্শকদের জন্য তাঁদের ভান্ডারের রসদ এখন শূন্য। সেইসঙ্গে তিনি আরও জানালেন তাঁদেরও সামাজিক দায়িত্বও রয়েছে। যদি মনে হয় সংক্রমণ বাড়ছে তাহলে সিনেমা হলও বন্ধ করে দেওয়া প্রয়োজন।
সুতরাং, মোটের উপর এই করোনা আবহেও সবরকম বিধি নিষেধ মেনে ভালোই দর্শক কিন্তু হানা দিচ্ছে সিনেমা হলে। হয়ত আগের তুলনায় কম সংখ্যক দর্শকাসনে ভরছে, তবু ভরছে তো।প্রসঙ্গত, সোমবার দেশে নতুন করে মোট ১,৬৮,০৬৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। যা আগেরদিনের থেকে সামান্য কম (১.৭৯ লাখ)। তবে টানা তিনদিন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১.৫ লাখের বেশি থাকল।