বর্তমানে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা তাঁদের লুক ও চরিত্র নিয়ে যে এক্সপেরিমেন্ট শুরু করেছেন। আদ্যোপান্ত বাণিজ্যিক সিনেমার পরিচিত মুখেরা এখন মেতেছেন ছক ভাঙার নেশায়, বেছে নিচ্ছেন ভিন্ন স্বাদের কাজ। নানা লুকে, নানা চরিত্রে অভিনয় করে তাঁরা যেমন দর্শকদেরও মন কাড়ছেন, তেমনই নজর কাড়ছেন সমালোচকদের। আর এই তালিকায় যে নামগুলি রয়েছে তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন কৌশানী মুখোপাধ্যায়। 'আবার প্রলয়'-তে 'মোহিনী মা' রূপে নজর কেড়েছিলেন নায়িকা, এবার তিনি ‘বহুরূপী’-তেও ফিরছেন একেবারে নতুন লুকে, 'ঝিমলি'-এর চরিত্রে। সোমবার 'বহুরূপী'-এর পোস্টার লঞ্চের অনুষ্ঠানে 'ঝিমলি' হয়ে ওঠার নানা খুঁটিনাটি জানালেন কৌশানী।
খোঁপায় পলাশ, কপালে চন্দন, নাকে নোলক, টলিপাড়ার চেনা কৌশানীর থেকে একেবারে ছকভাঙ্গা অবতারে প্রথম লুকেই ধরা দিয়েছিলেন নায়িকা। তাঁর এই রূপ ফুটিয়ে তুলতে তোলার জন্য সারা শরীরে তাঁকে মেকআপ করতে হত বলে জানান নায়িকা। এর জন্য নাকি সময় লাগত প্রায় দেড় থেকে দু' ঘণ্টা। এ প্রসঙ্গে নায়িকা বলেন, ' যেহেতু আমার পুরো শরীরে মেকআপ করা হত, তাই রোজ প্রায় দেড় থেকে দু' ঘণ্টা মেকআপ করতে সময় লাগত। আমার গায়ের রঙের থেকে অনেকটা টোন ডাউন করা হত। এই নিয়ে একটা মজার গল্পও রয়েছে। আমরা যে গ্রামে শুট করতে যেতাম, সেখানে আমাকে মেকআপ ছাড়া সবাই চিনতে পারলেও মেকআপের পর আর কেউ চিনতে পারত না। তাই অনেক সময় আমাদের টিম থেকে মজা করেই কেউ কেউ গ্রামবাসীদের বলতেন, যে আমি নবাগতা। আর ওঁরা তা বিশ্বাসও করে নিতেন। তবে সত্যি বলতেন কী আমি নিজেও তো নিজেকে মেকআপের পর চিনতে পারতাম না। এই চেহারাটার সঙ্গে ধাতস্থ হতে আমারও প্রায় পাঁচ দিন মতো সময় লেগেছিল।'
আরও পড়ুন: ‘আয়না দেখে মনে হচ্ছিল, একটা অন্য মনামীকে দেখছি’, জানালেন পদাতিকের গীতা সেন
তথাকথিত ডিগ্ল্যাম লুক ছাড়াও ছবির প্রথম লুকে নায়িকার একটি গ্ল্যামারেস ছবিও দেখা গিয়েছে। তা নিয়ে অভিনেত্রী একটু রহস্য করেই বলেন, 'এই পোস্টারে আমাকে দু'টো লুক দেখা গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু আমি বহুরূপী কিনা তার উত্তর ছবিতে পাওয়া যাবে। তবে গ্ল্যামারেস লুকে তো আমাকে সব সময়ই দেখা যায়, তাই আর একটা যে লুক সেটা আমার বেশি মনের কাছের, ওভাবে নিজেকে দেখে আমি সত্যি খুব খুশি।'
আরও পড়ুন: হইচই ফেলে দিয়েছেন অপর্ণা-অঞ্জন জুটি! নেপথ্যে রয়েছেন পরমব্রত! কীভাবে?
তবে শুধু মেকআপ নয় কথা বলার ধরণও এই চরিত্রের জন্য খুবগুরুত্বপূর্ণ সে কথাও নায়িকা জানান। তিনি বলেন, 'এই চরিত্রের কথা বলার ধরনটাও অনেকটা আলাদা, সেটার জন্য আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। ভাষায় অনেক ছোট ছোট পরিবর্তন করতে হয়েছে। সব 'শ'-কে 'স'-এর মতো করে উচ্চারণ করা। র, ড়, ঢ়- এগুলো ভুল উচ্চারণ করা। আসলে আমাকে জোর করে ভুল উচ্চারণে কথা বলতে হয়েছে। ডাবিংয়ের সময় একটা মজার ঘটনা ঘটেছিল, আমি ইচ্ছে করে ভুল উচ্চারণ করেছিলাম। তারপর আবার দু'দিন পর আমাকে ফোন করে বলা হয়েছিল যে ঠিক ভাবে উচ্চারণ করে বলতে হবে, কিন্তু আমি এদিকে 'শ'-এর ভুল উচ্চারণ করতে করতে ঠিকটা আর বলতেই পারছিলাম না। আসলে এটা ভাবে আমার অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। আমি তো ভয়ে ভয়ে থাকতাম যে সবার সামনে না আবার ভুল উচ্চারণে কথা বলে ফেলি।'