সুশান্তের আত্মহত্যার খবরে মন ভেঙে গেছে কৃতীর। রাবতা কো-স্টার সুশান্ত যে এভাবে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে চলে যাবেন সেটা বোধহয় দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি অভিনেত্রী। একদিকে বন্ধু হারানোর যন্ত্রণা,অন্যদিকে মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় চলতে থাকা আক্রমণ,পাল্টা আক্রমণ,কটাক্ষের জেরে জর্জরিত কৃতী।
একটা সময় সুশান্তের সঙ্গে কৃতীর প্রেম সম্পর্কের খবর সংবাদ শিরোনামে থেকেছে। যদিও প্রকাশ্যে সেই সম্পর্কের কথা কোনওদিনই মেনে নেননি কৃতী। বরং সুশান্তের মৃত্যুর পর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে কৃতী ইঙ্গিত দিয়েছেন সুশান্ত নাকি তাঁকে দূরে ঠেলে দিয়েছিলেন। তবে সম্পর্ক ভাঙা-গড়ার ইতিহাসটা যাই থাক না কেন, সুশান্তের প্রতিভার প্রতি সবসময়ই বিশ্বাস দেখিয়েছেন কৃতী। জনসমক্ষে সবসময় সুশান্তকে এগিয়ে রেখেছেন অন্য সকলের থেকে। সুশান্তের আত্মহত্যার পর সোশ্যাল মিডিয়ার রোষের মুখে পড়েছেন করণ জোহর,সলমন খান, আলিয়া ভাট,সোনম কাপুররা। এবং এই বিতর্কের সঙ্গে বারবার জড়িয়ে করণের টক শো কফি উইথ করণের নাম। এই শো'তেই আলিয়া কিংবা সোনম সুশান্তকে ‘তাচ্ছিল্য’ করেছেন বলে দাবি করেছেন নেট নাগরিকরা। কিন্তু এই শো'তে হাজির হয়েই সুশান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন কৃতী।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে লুকা ছুপি কোস্টার কার্তিক আরিয়ানের সঙ্গে কফি উইথ করণের মঞ্চে পৌঁছেছিলেন কৃতী। সেখানে সুশান্ত সিং রাজপুত সম্পর্কে ব়্যাপিড ফায়ার রাউন্ডে প্রশ্ন করলে কৃতী বলেন-সুশান্ত 'কিউটেস্ট'। অন্যদিকে প্রতিভার বিচারে সমসাময়িক অভিনেতাদের মধ্যে কৃতীকে সেরা পাঁচ সাজাতে বলেছিলেন করণ। কৃতীর তালিকায় সবার উপরে ছিল সুশান্তের নাম। তিনি বলেন, সুশান্ত, বরুণ ধাওয়ান, কার্তিক আরিয়ান,আয়ুষ্মান খুরানা, এবং টাইগার শ্রফ। অর্থাত্ পাশে বসা কো-স্টারকে তিন নম্বরে রেখে সুশান্তকে প্রথমস্থানে রেখেছিলেন কৃতী! এই ভিডিয়ো এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
সুশান্তের শেষযাত্রাতেও শামিল হন কৃতী। সজল চোখে বিদায় জানান বন্ধুকে। কিন্তু ভিলে পার্লে শ্মশানে কৃতীর ছবি তুলতে ব্যস্ত সংবাদ মাধ্যমের উপর ক্ষোভ উগরে দেন নায়িকা। সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে বিস্ফোরক পোস্টে কৃতী লেখেন, 'সোশ্যাল মিডিয়া সবচেয়ে ফেক এবং বিষাক্ত জায়গা..যদি তুমি RIP লিখে কাউকে নিয়ে পোস্ট না কর অথবা কাউকে নিয়ে জনসমক্ষে কোনও মন্তব্য না কর তাহলে তুমি কারুর চলে যাওয়ার জন্য শোকার্ত নয়, অথচ বিষয়টা একে বারেই উল্টো। সুশান্তের আত্মহত্যা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের অসংবেদনশীল ভূমিকাতে ক্ষুদ্ধ কৃতী।'মিডিয়ার কিছু মানুষজন একেবারেই নিজের উদ্দেশ্য এবং সংবেদনশীলতা হারিয়ে ফেলেছে। এইরকম একটা সময়ে গাড়ির জানালায় ধাক্কা দিয়ে কেউ বলে ম্যাডাম কাঁচটা নামান না? কেউ একজনের শেষকৃত্য যাচ্ছে তার নাকি স্পষ্ট ছবির দরকার। শেষকৃত্য একটা খুব ব্যক্তিগত বিষয়…মানবিকতাটাকে নিজের পেশার আগে রাখুন,প্লিজ!!
সুশান্তের মৃত্যুর দুদিন পর ইনস্টাগ্রামে বন্ধুকে স্মরণ করে একটা মন ছোঁয়া পোস্ট লেখেন কৃতী। তিনি বলেন, ' প্রিয় সুস… তোমার জীবনে একটা মুহূর্ত এসেছিল যখন তোমার মনে হয়েছিল বেঁচে থাকার থেকে মরে যাওয়া ভালো। যদি তোমার সঙ্গে সেই সময় কেউ থাকত..সেই মুহূর্তটাতে, যদি তুমি সেই মানুষগুলোকে দূরে না ঢেলে দিতে যারা তোমায় ভালোবাসত..যদি আমি পারতাম তোমার ভিতর ভেঙে যাওয়া সেই জিনসটাকে জুড়ে দিতে…আমি পারিনি.. আমি অনেক কিছু চেয়েছিলাম…আমার হৃদয়ের একটা টুকরো তুমি নিয়ে গেলে, আর একটায় তুমি বেঁচে থাকবে..তোমার জন্য প্রার্থনা করা কোনওদিনও বন্ধ করিনি,কোনদিনও করব না…!