ভারতীয় সিনেমার সফলতম গায়ক কুমার শানু। বাঙালি এই কণ্ঠশিল্পী একসময় দাপিয়ে কাজ করেছেন বলিউডে। নব্বইয়ের দশকের অন্যতম জনপ্রিয় প্লেব্যাক গায়ক তিনি। তাঁর সুরেলা কণ্ঠের গান ছড়িয়ে গিয়েছে বিশ্ব দরবারে। এর মধ্যে কালজয়ী, নন্দিত গানের তালিকাও বেশ লম্বা। কাজ করেছেন তাবড় তারকা সুরকারের সঙ্গে।
বলিউডের ‘কিং অব মেলোডি’ হিসেবে পরিচিত কুমার শানু হিন্দি ছাড়াও গান গেয়েছেন বহু ভাষায়। টানা পাঁচবার ফিল্মফেয়ারে শ্রেষ্ঠ গায়কের পুরস্কার পাওয়ার রেকর্ড তাঁর দখলে। ২০০৯ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী (চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা) সম্মানে ভূষিত করেছে ভারত সরকার। তবে সেই পুরস্কারপ্রাপ্তির পর ১৪ বছর কেটে গেলেও আজও কুমার শানুর হাতে জাতীয় পুরস্কার ওঠেনি। আজও তাঁর গানের সুবাদে স্মৃতিসরণিতে হারিয়ে যান শ্রোতারা। অথচ সেই গায়কের গলাতেই অভিমানের সুর! আরও পড়ুন: শাহরুখের থেকে ১৯ বছরের ছোট, 'জওয়ান'-এর মা ঋদ্ধির আসল পরিচয় জানেন কি
অগস্টের শেষে ঘোষণা করা হয়েছে চলতি বছরের জাতীয় পুরস্কারজয়ীদের তালিকা। ৬৯তম জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চে সেরা প্লেব্যাক গায়কের সম্মান পেয়েছেন কাল ভৈরব। ‘আরআরআর’ ছবির ‘নাটু নাটু’ গানটি গেয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, সেরা প্লেব্যাক গায়িকার সম্মান পেয়েছেন শ্রেয়া ঘোষাল। বাঙালি গায়িকাকে এই সম্মান পেতে দেখে নিজেও খুব খুশি কুমার শানু।
কেন ৪০ বছরের কেরিয়ারে আজও কুমার শানুর হাতে জাতীয় পুরস্কার উঠল না? এবার এক সাক্ষাৎকারে সেই বিষয়েই মুখ খুললেন গায়ক। আক্ষেপের কথা বলতে গিয়েই ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। গায়কের কথায়, ‘আমার জাতীয় পুরস্কার পাওয়া উচিত ছিল। আমার পদ্মভূষণও পাওয়া উচিত ছিল। আমি আর এগুলি নিয়ে ভাবি না। যদিও খারাপ তো লাগেই, কষ্ট হয়। তবে আমি এটাও বুঝি যে, সেই রকম তেল দেওয়ার মতো ক্ষমতা না থাকলে এই সব সম্মান পাওয়াও যায় না।’
স্পষ্ট ভাষায় কুমার শানুর বক্তব্য, ‘তেল দিতে না পারলে পুরস্কার পাবেন না। আপনার যদি পর্যাপ্ত নাগাল না থাকে এবং তেল দেওয়ার (তোষামোদ করা) গুণ না থাকে, তাহলে আপনি এটা পাবেন না। আমি এখন বুঝি। এমনকি মানুষও বোঝে। কেউ তখনই পুরস্কার পায়, যখন তার নাগাল উচ্চমহল পর্যন্ত যায়। স্বাভাবিকভাবে এই পুরস্কার পাওয়া খুব কঠিন।’
কিছুটা আক্ষেপের সুরেই কিংবদন্তি এই গায়ক বলেন, ‘আমি কখনও এসবে মনোযোগ দিইনি। কে কী করছে, তাতে আমার যায় আসে না। সরকার যখন মনে করবে আমাকে পুরস্কার দেওয়া দরকার, তখন দেবে। তারা যদি না দেয়, আমার কী করার আছে?’
একদিনে ২৮টি গান রেকর্ড করে গিনেস বুকে নাম তুলেছিলেন শানু। কর্মজীবনের শিখরে থাকাকালীনও মেলেনি জাতীয় পুরস্কার। এ ক্ষেত্রেও নিজের বক্তব্য সোজাসুজিই জানালেন কুমার শানু।