বাংলা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম ঠোঁটকাটা ব্যক্তি তিনি। আরজি কর আন্দোলনে প্রথম সারিতে দেখা মিলেছে লগ্নজিতার। ভুলকে ভুল বলতে কোনওদিনই কুণ্ঠাবোধ করেন না লগ্নজিতা। লাইভ শো-তে নিজের গাওয়া গানকে বেসুরো বলতেও কোনও দ্বিধা নেই তাঁর। আরও পড়ুন-১০ বছর লেগে গেল সুরে একটা গান গাইতে! ‘বেসুরো’ লগ্নজিতা কীভাবে নিজেকে বদলালেন?
সম্প্রতি এক পডকাস্টে বসে মনের কথা অপকটে বললেন লগ্নজিতা। জানালেন, গায়িকা হওয়ার স্বপ্ন কোনওদিনই ছিল না। পুরোটাই 'অ্যাক্সিডেন্টাল'। লগ্নজিতা বলেন, ‘আমি কনভেনশন্যাল, আন-কনভেনশ্যাল কোনও গায়িকাই হতে চাইনি। সৃজিতদা, অনুপমদা যদি আমাকে বসন্ত এসে গেছে-র জন্য না ডাকত, তাহলে আমার গান গাওয়া হত না।’
স্ট্রেট আপ উইথ শ্রী-তে লগ্নজিতা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির কাস্টিং কাউচ নিয়েও সরব হন। তিনি বলেন, না শুলে কাজ পাওয়া যায় না এটা ভ্রান্ত ধারণা। লগ্নজিতার কথায়, ‘না শুলে কাজ পাওয়া যায় না, এটা ভুল কথা। পাওয়া যায়, তবে একটু দেরিতে পাওয়া যায়’। বাংলায় অজস্র গুণী শিল্পী থাকা সত্ত্বেও এখনও মুম্বইয়ের নামজাদা শিল্পীদের দিয়ে বাংলা গান গাওয়ানোর ট্রেন্ড চালু রয়েছে। সেই প্রসঙ্গে লগ্নজিতা বলেন, ‘শচীন তেন্ডুলকর ব্যাট করতে নামলে যেমন বাচ্চাদের মাঠ ছেড়ে দিতে হয়, তেমনই বোম্বে থেকে কেউ এলে আমাদের মাঠ ছেড়ে দিতে হবে’।
আরজি কর আন্দোলনের সময় পথে নেমে শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের চক্ষূশূল হন লগ্নজিতা। পড়তে হয় হুমকি-ট্রোলিংয়ের মুখেও। গায়িকা বলেন, ‘আমি নাম নিচ্ছি না, তবে শাসক দলের বড় বড় নেতারা, যাদের সঙ্গে আমার কোনও তুলনা চলে না। তারা অন ক্যামেরা আমার নাম না নিয়ে বলেছে, শুনুন একজন জিনস পরা, ছোট চুল মহিলা ব্যানার ধরে সামনে দাঁড়িয়ে কী বলছে সেটা আমরা শুনব না’।
আরজি কর আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার জন্য কী খুইয়েছেন লগ্নজিতা? তাঁর হেঁয়ালি ভরা উত্তর, ‘আমি আন্দোলনও করব, ক্ষতিও হবে না জীবনে কিছু…. সব একসঙ্গে হয় না’।
কিছুদিন আগে ফেসবুক পোস্টে লগ্নজিতা জানিয়েছিলেন, ২০১৪ সাল থেকে পেশাদারভাবে গান করলেও তিনি রেওয়াজ করতেন না। এর ফলে স্টেজে সুরে গান গাইতে পারতেন না। কিন্তু সাধনা করলে সব হয়। করোনাকালে নিয়মিত রেওয়াজ শুরু করেছিলেন লগ্নজিতা। তার ফল পেলেন ২০২৪-এ এসে। তিনি লেখেন, '২০১৪ থেকে শুরু করেছিলাম, ২০২৪ হয়ে গেল একটা পুরো গান সুরে গাইতে। ১০ বছর। আজ মা-বাবা প্রথমবার আমাকে শিল্পী হিসাবে স্বীকার করলেন। বললেন, আজ তোমার একটাও ভুল হয়নি।’