আরজি করে জুনিয়র ডাক্তারকে ধর্ষণ ও তারপর অমানবিক খুনের ঘটনা নিয়ে রীতিমতো উত্তাল গোটা বাংলা। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের ডাক উঠেছে। ১৪ অগস্ট রাতে বিভিন্ন জাগয়ায় জমায়েতের পরিকল্পনা হয়েছে। তারকারাও সরব হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমাগত প্রতিবাদ চলছে। তবে এবার লালবাজারের তরফে এক জনপ্রিয় আরজে-কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হল।
মঙ্গলবারই লালবাজারে তলব করা হয়েছে সেই রেডিয়ো জকিকে। প্রথম থেকেই এই মহিলা ডাক্তারের মৃত্যুতে প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন তিনি। শহরের নাম করা একটি রেডিও স্টেশনের মুখ তিনি। কিন্তু কেন তলব করা হল তাঁকে?
জানা যাচ্ছে, আরজি করের ঘটনা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট করেছিলেন। বেশ কিছু তথ্য় জানতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই তথ্যের উৎস জানতেই তলব করা হয়েছিল বলে খবর আসছে।
ওই মহিলা ডাক্তারের পোস্টমর্টেম রিপোর্টে উঠে এসেছে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। চিকিৎসকের গোপনাঙ্গ, চোখ ও মুখ থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। মুখে ও নখেও আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার পেট, বাঁ পা, ঘাড়, ডান হাতে ও ঠোঁটেও ছিল আঘাতের চিহ্ন। ঘাড়ের হাড়ও ভেঙে যায়। ইতিমধ্যেই সঞ্জয় রায় নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সরকার ও কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে স্বচ্ছ তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।
তবে এই রেডিও জকিকে ডেকে পাঠানোর ঘটনায় ফের উত্তেজনা সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও সেই আরজে-কে একা ডাকা হয়নি, আরও ১৫ সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারকে তলব করা হয়। যদিও সঠিক কী কারণ রয়েছে এর পিছনে, তা স্পষ্ট করেনি পুলিশ। তবে বারবার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে উস্কানিমূলক পোস্ট করা থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াতে।
গতকালই কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পোস্টে লেখা হয়েছিল, 'একটি কথা সবিনয়ে বলার। সোশ্যাল মিডিয়ায়, বিশেষত ফেসবুকে ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন অসত্য, অনুমাননির্ভর এবং বিভ্রান্তিকর তত্ত্ব ছড়িয়ে দিচ্ছেন নেটিজেনদের একাংশ। আমাদের আন্তরিক অনুরোধ, না-যাচাই-করা এই ধরণের তত্ত্ব, তথ্য বা গুজবে কান দেবেন না। এতে তদন্তের ক্ষতি হয়, ন্যায়ের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়, এবং সর্বোপরি শোকগ্রস্ত পরিবারটি আরও বেশি করে যন্ত্রণাদগ্ধ হয়। আবার বলি, সততা, আন্তরিকতা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত চলছে। কাল্পনিক তত্ত্ব এবং গুজব ছড়ালে সেই তদন্তেরই গতি ব্যাহত হয়। বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীদের বলি, আমরা বুঝতে পারছি আপনাদের শোক, সমর্থন করছি আপনাদের ন্যায়বিচারের দাবি। আপনাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। বিশ্বাস রাখুন, যত দ্রুত সম্ভব ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। রাজ্যের মানুষকে জানাই, আমাদের তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছে। কলকাতা পুলিশ যথাসাধ্য দ্রুততায় চার্জশিট জমা করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে। ন্যায়বিচার হবেই। দ্রুতই হবে। না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না। ভরসা রাখুন।'