আম্বানিদের বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন, হঠাৎই অনন্ত আম্বানির কাঁধে মাথা রেখে ছবি তুলতে দেখা যায় তৈমুরের সেই ন্যানিকে। আর তাতেই হইচই পড়ে যায় নেটপাড়ায়। সকলেই প্রায় একসুরে প্রশ্ন, তৈমুরের ভাইরাল ন্যানির সঙ্গে কীভাবে এতটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আম্বানিদের? এরপরই জানা যায়, তৈমুরের মতোই অনন্ত আম্বানিকেও ছোটবেলায় দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন ললিতা। বর্তমানে অবশ্য তিনি অভিনেতা রামচরণ ও তাঁর ব্যবসায়ী স্ত্রী উপসনা কোনিদেলার মেয়ে ক্লিন কারা-র দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন।
সম্প্রতি নিজের এই কাজের বিষয়েই হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন ললতি ডি'সিলভা। নিজের কাজের বিষয়ে তাঁর সাফ কথা, তিনি ঠিক 'ন্যানি' বা আয়া হিসাবে কাজ করেন না, সবাই আসলে তাঁকে বিশ্বাস করে দায়িত্ব দেন।
ঠিক কী বলেছেন ললিতা ডি'সিলভা?
ললিতা ডি'সিলভা জানিয়েছেন, ‘আমি পেডিয়াট্রিক নার্স হিসাবে প্রায় ৩০ বছর কাজ করছি। আর আমার এই কাজের শুরুই হয়েছিল অনন্তকে দিয়ে। ও-ই ছিল প্রথম শিশু, যাঁর মাধ্যমে আমি এই কাজ শুরু করেছিলাম। আর আজ যখন আমি ওঁরই বিয়েতে নিমন্ত্রিত, এই অনুভূতি আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। ও শিশু থেকেই ভীষণই বাধ্য ছেলে ছিল, এখনও একই আছে। অনেকেই আমাকে ওই ভাইরাল হওয়া ছবি সম্পর্কে প্রশ্ন করেছেন। আমার পরিবারের অনেকে, বন্ধুবান্ধবও আজকাল এটা নিয়ে আমায় মেসেজ পাঠাচ্ছেন। আমি ওদের বলেছি, এটাই তো স্বাভাবিক একটা ঘটনা। আজ লোকজন আমায় চিনতে পারছেন।’
ব্যক্তিগত জীবনে ললতি ডি'সিলভা বছর ৩৫-এর এক সন্তান রয়েছে। তিনি জানান ‘আম্বানি পরিবারের সঙ্গে আমি প্রায় ১১ বছর ছিলাম, আম্বানিরা কখনওই আমায় ভোলেনি। এখনও আমার সঙ্গে ওই পরিবারের যোগাযোগ রয়েছে। এটা ঈশ্বারের আশীর্বাদ। শুধু অনন্ত নয়, আমি ইশা ও আকাশেরও দেখাশোনা করতাম। নীতা বৌদি, এই নামেই আগে ওঁকে ডাকতাম, এখন ম্যাম বলি। হতে পারে ওঁরা ধনী, তবে এখনও আমাকে ওঁরা ভুলে যায়নি। আসলে কঠোর পরিশ্রমের ফল পাওয়া যায়। আমি অনন্তের জন্য একসময় নিবেদিত প্রাণ ছিলাম। ওঁরা আমায় আকাশ ও ইশার বিয়েতেও নিমন্ত্রণ করেছিলেন। তবে আমি তখন তৈমুরকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, ওকে নিয়ে আমায় এদিক-ওদিক যেতে হত। তবে এবার রামচরণ স্যার উপাসনাজি আমায় অনন্তের বিয়েতে যোগ দিতে সাহায্য করেছেন, ওঁরাই আমাকে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন।’
বর্তমানে রামচরণ ও উপাসনার মেয়েকে দেখাশোনার পাশাপাশি, তাঁদের সঙ্গে ইতালি, থাইল্যান্ডে যেতেও দেখা গিয়েছিলেন ললিতা। আবার করিনা যখন লাল সিং চাড্ডার শ্যুটিং করছিলেন, তখন তিনিই তৈমুরকে সামলে রাখতেন। ললিতার কথায়, ‘করিনা ভীষণই ভালো একজন মা, শৃঙ্খলাপরায়ণ, তাই ওঁর বাচ্চারাও তেমনই হয়েছে। সইফও বচ্চাদের বড় করে তুলে সাহায্য করেন।’
ললিতার কথায়, তৈমুরকে দেখভালের সময় তাঁর উপর অন্যকোনও টেনশন ছিল না, শুধু পাপারাৎজির ছবি তোলার চাপ ছিল। তৈমুর বাইরে বের হলেই সকলে ছবি তুলতে চলে আসতেন। ললিতার কথায়, ‘জনগণ ও মিডিয়ার চাপ ছিল। আমিও লোকজনকে বলতাম, ও তো শিশু, ওকে তাড়া করো না, আপনারা কেন এমন আচরণ করছেন! আমাকেও অনেক মায়েদের বলতে হয়েছিল যে আমি জানি তৈমুর খুব কিউট, ওর বাবা-মাও খুব কিউট এবং হ্যান্ডসাম। তবে আপনারও নিজেদের সন্তানের যত্ন নিন। তাদের ছবি তুলুন।’ এরপরই ললতি বলেন, ‘তৈমুরের সময় খুবই প্রেসার ছিল, তবে সামলে নিয়েছি। আমি তখন তৈমুরের নিরাপত্তার জন্য আমি খুবই উদ্বিগ্ন ছিলাম, ওকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করেছি।'