ভারতের ‘নাইটইঙ্গেল’, ‘সুরের সরস্বতী’ লতা মঙ্গেশকর। ৬ ফেব্রুয়ারি, তাঁর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। ৯২ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন সুর সম্রাজ্ঞী। সোমবার কিংবদন্তি গায়িকা, ভারতরত্ন পুরস্কারপ্রাপ্তকে স্মরণ করতে ইন্ডাস্ট্রির অনেক নামী-দামী ব্যক্তিত্ব একত্রিত হয়েছিলেন।
অভিনেত্রী রবিনা ট্যান্ডন ইনস্টাগ্রামে সকলের সমবেত হওয়ার ঝলক শেয়ার করেছেন। লতা মঙ্গেশকরকে স্মরণ করতে হেমা মালিনী, আশা পারেখ এবং কাজলের মতো অভিনেত্রী একত্রিত হয়েছিলেন। দুটি ছবি শেয়ার করে রবিনা লেখেন, ‘আজ রাতের কথা! কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকরজিকে সম্মান জানাতে, আশা পারেখ জি, হেমা মালিনীজিদের সঙ্গে’।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে প্রবীণ অভিনেত্রী হেমা মালিনী এবং আশা পারেখ বসে আছেন। দুই প্রবীণ অভিনেত্রী পরনে সিল্কের শাড়ি। হেমা একটি সবুজ রঙের সিল্কের শাড়ি পরেছিলেন। আশাকে একটি কালো শাড়িতে সুন্দর লাগছিল। কাজল সবুজ সিল্কের কুর্তা পরেছিলেন, আর রবিনাকে আইভরি রঙের পোশাকে দেখা গিয়েছে। আরও পড়ুন: মায়ের মৃত্যুর জন্য আদিলকে দায়ী করলেন, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘোষণা রাখির
প্রিয় মাসি লতা মঙ্গেশকরের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মৃতিচারণ ঘটালেন লেখিকা রচনা শাহ। পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, 'আমরা এখনও মেনে নিতে পারছি না যে উনি আর আমাদের মধ্যে নেই। এক বছর কেটেও গেছে। এখনও এটা অবাস্তব, অবিশ্বাস্য বলে মনে হয়। তিনি অবিশ্বাস্যভাবেই একটি বিশাল শক্তি ছিল যে শক্তি কখনওই হ্রাস পায় না। আমরা বরং এটা ওঁর মৃত্যু বলে মানতে চাই না। ওঁর গলা সারা দিন ধরে আমাদের সঙ্গে থাকে, ওঁর স্মৃতিও রয়েছে। যতবারই আমার ফোন বেজে ওঠে, আমার মনে হয়, 'মাসি কি আমাকে ডাকছেন?'
২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় লতা মঙ্গেশকরকে। করোনা কাটিয়ে উঠলেও ৯২ বছর বয়সে কোভিড পরবর্তী অসুস্থতার ধাক্কা সামলাতে পারেননি শিল্পী। দশকের পর দশক ধরে আসমুদ্রহিমাচল মোহিত থেকেছে তাঁর জাদুমাখা কণ্ঠে।
ভারতীয় সঙ্গীতের দুনিয়ায় লতা মঙ্গেশকরের অবদান ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। ১৯৮৯ সালে, তিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পান। ২০০১ সালে দেশের সর্বোচ্চ অসমারিক নাগরিক সম্মান ভারতরত্ন প্রদান করা হয়েছিল লতা মঙ্গেশকরকে। ২০০৭ সালে ফ্রান্স তাদের দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার (অফিসার অফ দি লেজিয়ান অফ অনার) দিয়ে সম্মানিত করে লতা মঙ্গেশকরকে। ১৫ 'বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ডস', ৪ 'ফিল্মফেয়ার সেরা নেপথ্য গায়িকা', 'ফিল্মফেয়ার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড'-সহ একগুচ্ছ পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।
অনিল বিশ্বাস, এসডি বর্মন, সলিল চৌধুরীর মতো সংগীত পরিচালকদের পছন্দের গায়িকা ছিলেন লতা, অনেকেই হয়ত জানেন না আরডি বর্মনের কেরিয়ারের প্রথম ও শেষ গানটি লতার কন্ঠে রেকর্ড করা। লতা মঙ্গেশকরের বিখ্যাত গানের তালিকা অগুনতি, ‘অ্যায় মেরে বতন কে লোগো’, ‘লাগ জা গলে, ‘চলতে চলতে’, ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’- এই তালিকা শেষ হওয়ার নয়।