'অনুরাগের ছোঁয়া' দিয়ে অভিনয়ের দুনিয়ায় পা রেখেছেন প্রয়াত অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে সাইনা। যদিও অভিষেক-সংযুক্তা কন্যা এখনও স্কুলের গণ্ডি পার করেনি। অনেকটা কম বয়সেই অভিনয় দুনিয়ায় পা রেখেছে সে। বাবার মতোই অভিনয়কেই পেশা করতে চায় সাইনা। একথা আগেই জানিয়েছিলেন অভিষেকের স্ত্রী সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায়। এদিকে সাইনার বয়স এখন অনেকটাই কম, আর তাই পড়াশোনা, একই সঙ্গে অভিনয়, দুটোই চালিয়ে নিয়ে যাওয়াতে সমস্যা হচ্ছিল সাইনার জন্য। কারণ প্রায় ১৪ ঘণ্টা শ্যুটিং করতে হচ্ছে তাঁকে। আর তাই বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায়।
মেয়েকে রেগুলার স্কুল থেকে সরিয়ে 'হোম স্কুলিং'-এ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায়। তিনি Hindustan Times Bangla-কে এবিষয়ে জানান, তাঁর বিশ্বাস সবকিছুই আসলে তাঁর প্রয়াত স্বামী অভিষেকই তাঁকে দিয়ে করিয়ে নেন। তিনি এখনও তাঁদের জীবনের সঙ্গে একইভাবে জুড়ে রয়েছেন।
মেয়ে সাইনার পড়াশোনা নিয়ে আমাদের সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত নেওয়া’ খুব কঠিন ছিল। তবে আমার মুম্বইয়ের বন্ধুরা পরামর্শ দিল যে সাইনাকে চাপ না দিয়ে আমি যেন ওকে হোম স্কুলিং করাই। আমিও খোঁজ নিয়ে দেখলাম ব্যাপারটা মন্দ নয়। আর এতে শিশুদের উপর চাপও সৃষ্টি হয় না।'
সংযুক্তার কথায়, ‘হোমস্কুলিং-এর মাধ্যমে এখন বিদেশ থেকে পড়াশোনা করা যায়। সাইনা এখন বস্টন থেকে পড়াশোনা করছে। আগে আমরা এটা ভাবতেও পারতাম না। ডল (সাইনার ডাক নাম) এমনিতেও লন্ডনে গিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। আগে বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করতে হত। আর এখন আমার মনে হয় হোমস্কুলিং হল সবচেয়ে ভালো বিকল্প কারণ সন্তানকে বিদেশে পাঠানোর প্রয়োজন নেই বরং তারা ঘরে বসেই বিদেশ থেকে পড়াশোনা করতে পারে। ভারত সরকারও এটাকে সমর্থন করে। বহু খেলোয়াড় এখন এই হোমস্কুলিং-এর মাধ্যমে পড়াশোনা করেন।’
এটার খরচও তো তাহলে অনেক?
সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘হ্যাঁ, তা খরচ অনেকটাই বেশি। এখন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়তে অ্যাডমিশন সহ খরচ প্রায় ২-আড়াই লক্ষ টাকা। তবে হোম স্কুলিং-এর ক্ষেত্রে আমাকে ৪ লক্ষ টাকা দিতে হয়েছে। তবে সুবিধা এটাই যে বাড়িতে বসেই আন্তর্জাতিক স্তরের পড়াশোনা করা যায়। আমার মনে হয় হোম স্কুলিং-এ উৎসাহ দেওয়া উচিত। আগে সাইনাকে অন্তত ৩ দিন স্কুলে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তবে শ্যুটিংয়ের চাপে ও ওটাও করতে পারছিল না। তাই আমার মনে হল, এটা বেস্ট অপশন।’
তাঁর ও অভিষেকের মেয়ে সাইনা বাবার মতোই অভিনয়কেই পেশা করতে চায়। আর তাই সাইনার কীসে ভালো হবে, সুবিধা হবে, সেকথা ভেবেই সংযুক্তা মেয়ের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আরও পড়ুন-ছোট্ট কৃষভির মুখেভাত, কবে, কখন, কোথায় হচ্ছে শ্রীময়ী-কাঞ্চন কন্যার অনুষ্ঠান?
আরও পড়ুন-সুদীপ্তার টেলিভিশন শো-এ হাজির ইমন চক্রবর্তী, কী ‘লক্ষ্মীলাভ’ করলেন গায়িকা?
কিন্তু এই এই 'হোম স্কুলিং'?
হোম স্কুলিং হল বিশেষ শিক্ষা পদ্ধতি, যেখানে বিদেশি বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সেখানকার শিক্ষকরা অনলাইনে শিক্ষার্থীদের সুবিধামতো সময়ে তাদের পড়ায়। কিছু কাজও দেয়। যা একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করে দিতে হয়। তাতে কোনও শিক্ষার্থী পড়াশোনা ছাড়াও তাঁর পছন্দের বিষয়গুলির সঙ্গে সহযেই যুক্ত থাকতে পারেন। খানিকটা যেভাবে জোড়াসাঁকোতে ছোট্ট রবির জন্য বিকল্প শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন ঠাকুরবাড়ি গুরুজনেরা। এই বিষয়টা ঠিক তেমনই।
প্রসঙ্গত, হোম স্কুলিং বিষয়টি আমেরিকা, ইউরোপে বেশ জনপ্রিয়। এমনকি মুম্বই, পুণে, বেঙ্গালুরুর মতো শহরেও বহু অভিভাবক হোম স্কুলিং -এর সাহায্যে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা শেখাচ্ছেন। যদিও কলকাতায় এখনও এই প্রথার তেমন চল নেই।