‘আয় তবে সহচরী’র গল্প নিয়ে আপত্তি তুলেছে দর্শকদের বড় একটা অংশ। অনেকের মনেই প্রশ্ন যেখানে ট্রেলার শুরু হলে একজন মধ্যবয়সী মহিলার ঘুরে দাঁড়ানো, লেখাপড়া শেখা দিয়ে, সেখানে কীভাবে গল্পে এল পরকীয়া। সেই একই ধাঁধাঁয় কেন ফেলা হল এই ধারাবাহিককে। এমনকী কেউ কেউ দাবি করেন কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অভিনেত্রীর থেকে তাঁরা মোটেও এমনটা আশা করেননি। তারপরই দর্শকদের উলটে দোষ দেন অভিনেত্রী। প্রেস কনফারেন্সে বলেন, ‘দর্শকরা দেখতে চায় বলেই তো দেখানো হয়। কলেজ-পড়াশোনা চাকরি দেখালেই তো পড়ে যায় টিআরপি।’
‘আয় তবে সহচরী’র লেখিকা ও প্রযোজক সাহানা দত্ত অবশ্য এই নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। তবে অনেকেই মেনে নিয়েছেন এটা ঠিক। সঙ্গে কনীনিকার কথা যে ঠিক তা বোঝা যায় TRP -র দিকে চোখ রাখলেই। দেবিনা ম্যাজিকেই টিআরপি উঠেছে ধারাবাহিকের তাই শুধু কি নির্মাদের দোষ দিলে চলে?
সঙ্গে আরেকটা প্রশ্ন তৈরি হয়, সত্যি কি এমনটা হয় টলিউডে?
বাংলা ধারাবাহিকের লেখিকা লীনা গঙ্গোপাধ্যায় এক বাংলা সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া নিজের বক্তব্যে এই বিষয়ে জানান, আমার ধারাবাহিকের গল্পগুলোর ক্ষেত্রে এরকমটা কোনওদিন হয়নি। হ্যাঁ এরকম হয়েছে যে, মূল অভিনেত্রী ভালো ফল করেননি, সে জন্য ধারাবাহিকের অন্য অভিনেত্রীকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছি। সঙ্গে দর্শকের চাহিদা ওরকমভাবে বোঝাও তো মুশকিল। ‘আয় তবে সহচরী’র মতো অভিজ্ঞতা সত্যিই আমার হয়নি। আমাকে কখনও চ্যানেলের কথা শুনে চলতে হয়নি। দর্শকের কথা ভেবেও কাহিনি পাল্টাতে হয়নি। আমি আমার ভাবা বা লেখা গল্পের উপর বিশ্বাস রেখেই কাজ করি। যখন দেখি কোনও অভিনেতা-অভিনেত্রী বেশি ভালো কাজ করছে, চিত্রনাট্যে তাঁদের প্রাধান্য দেই। তবে সেই সিদ্ধান্ত আমি নিজে নেই। দর্শক বা চ্যানেলের কোনও হাত থাকে না এতে।
ঠিক কী বলেছিলেন কনীনিকা?
অভিনেত্রী প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘দর্শকদের প্রশ্ন, ওরা কেন এই সেকেলে চিন্তাধারার জিনিসপত্র দেখে টিআরপি বাড়ায়? ওরা বাড়ায় বলে আমাদের করতে হয়, ভাই আপনারা দেখা বন্ধ করুন।
‘আয় তবে সহচরী’ এক অসাধারণ ধারাবাহিক। যখন আমি সই করি, একটা পড়াশোনা, মধ্যবয়সী মেয়ে তাঁর স্বপ্ন নিয়ে ধারাবাহিক শুরু হয়েছিল। এখনও প্রযোজক, চ্যানেল পাগলের মতো চেষ্টা করে যাচ্ছে কী করে কন্টেন্টে ফেরত আসা যায়। কিন্তু টিআরপি তো পড়ে যায়, যেই পড়াশোনা দেখানো হয় সবাই দেখা বন্ধ করে দেয়। এ কী রে ভাই!’
একটা মেয়ে আর একটা মেয়ের উপর অত্যাচার করছে, দেখতে খুব ভালো লাগে। রোমের কলোসিয়ামের কথা মনে পড়ে যায়, যখন একটা মানুষের উপর অত্যাচার করলে অন্য মানুষেরা দেখে হাততালি দিত। আমরা একই সমাজে একই জায়গায় বসে আছি। শুধু শিক্ষিত মানুষের মুখোশটা পরে নিয়েছি।’