প্রয়াত বর্ষীয়ান অভিনেতা দিলীপ কুমার। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। বুধবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে চলচ্চিত্রের একটা যুগের অবসান ঘটল। বর্ষীয়ান অভিনেতার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে শোক প্রকাশ করেছেন চলচ্চিত্র জগতের বিশিষ্টরা। ১৯৪৪ সালে সিনেমায় আত্মপ্রকাশ করেন। ‘নায়া দর’, ‘মুঘল-ই-আজম’, ‘দেবদাস’, ‘রাম অওর শ্যাম’, ‘আন্দাজ’, ‘মধুমতী’ এবং ‘গঙ্গা-যমুনা’র মতো একাধিক হিট ছবিতে কাজ করেছিলেন। বলা যায়, সে সময় বলিপাড়ায় সেনসেশন ছিলেন এই সুদর্শন তরুণ। ১৯৯৮ সালে শেষবার সিনেমায় অভিনয় করেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা।
১৯২২ সালে পাকিস্তানের পেশোয়ারে জন্মগ্রহণ করেন দিলীপ কুমার। তাঁর আসল নাম মোহাম্মদ ইউসুফ খান। তার বাবার নাম ছিল মোহাম্মদ সারোয়ার খান, যিনি একজন ফল ব্যবসায়ী ছিলেন। কৈশোরে মুম্বাই থেকে পুনে গিয়ে ব্রিটিশ সৈন্যদের জন্য পরিচালিত একটি ক্যান্টিনে কাজ নেন ইউসুফ খান। কিন্তু কিছু বছর সেখানে কাজ করার পপর আবারও ফিরে আসেন মুম্বইতে। বাবার সঙ্গে ব্যবসার কাজেই হাত লাগান। আর সেই সূত্রেই আলাপ হয় সেসময়ের প্রখ্যাত সাইকোলজিস্ট ডা. মাসানির সঙ্গে। যিনি তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেন 'বোম্বে টকিজ' এর মালিকের সঙ্গে।
আর তখনই তাঁর কাছে প্রস্তাব আসে ‘জোয়ার ভাঁটা’য় অভিনয়ের। প্রথম ছবিতে অভিনয় করার সময় থেকেই নাম বদলে রেখেছিলেন দিলীপ কুমার। ইউসুফ থেকে তাঁকে দিলীপ কুমার নাম রাখতে সাহায্য করেছিলেন তাঁর প্রথম ছবির প্রযোজক দেবিকা রানি। সে সময় বলিউডে নাম বদল ছিল বেশ সাধারণ ঘটনা। জনপ্রিয়তা পেতে ছোট নাম বা আকর্ষণীয় নামের পিছনে ছুটতেন অনেকেই। তবে দিলীপ কুমার নাম বদল করেছিলেন অন্য কারণে। বলা যায় বাবার কাছে মার খাওয়ার ভয়ে।
নিজের আত্মজীবনীতে এই বিষয় নিয়ে লিখেছেন অভিনেতা। তিনি জানান, প্রথমে দেবিকা রানিই তাঁকে নাম বদলানোর পরামর্শ দেন। তবে তিনি রাজি হয়েছিলেন অন্য কারণে। দিলীপ কুমার লেখেন, তাঁর বাবা অভিনয় পেশার একেবারে বিরোধী ছিলেন। এসব ‘নাটক’ মনে হত তাঁর। উপরন্তু বন্ধুপুত্র রাজ কাপুর অভিনয়ে পা রাখাতে আরো অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য বাবা মেনে নিয়েছিলেন ছেলের এই কাজ। অভিনয়ের প্রশংসাও করেছিলেন।