২০২২ সালের ২২শে জুলাই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মন্দিরা পাত্র বন্দ্য়োপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্য়ায়। ভালোবাসার দিব্যি গেলে সমাজের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে ঘর বেঁধেছিলেন সমকামী দুই নারী।
দু-বছর পর ফের বিয়ের পিঁড়িতে তাঁরা। দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকীর দিন ধুমধাম করে বিয়ে করলেন নদিয়ার এই সমকামী যুগল। ভারতে সমলিঙ্গ বিয়ের আইনি স্বীকৃতি নেই, কিন্তু সে-সব থোড়াই কেয়ার! ভালোবাসা আবার কবে বাধা মেনেছে?
টুকটুকে লাল বেনারসিতে সেজে মন্দিরা। লাল পাঞ্জাবি আর ধুতিতে বৈশাখী। স্ত্রীর সিঁথি ফের একবার রাঙিয়ে দিলেন বৈশাখী। শুধু মূল বিয়ের অনুষ্ঠানই নয়, হিন্দু রীতি মেনে আইবুড়ো ভাত, গায়ে হলুদ-সহ বিয়ের সব আচার মেনে হল বিয়ে। কিন্তু কেন ফের একবার বিয়ে করার সিদ্ধান্ত? সোশ্যাল মিডিয়ায় বৈশাখী জানান, ‘আমাদের তো রিচুয়াল মেনে (আগে) বিয়েটা হয়নি।’ তাই এবার সকলকে সাক্ষী রেখে সব নিয়ম পালন করে বিয়ে! বিয়ের ছবি পোস্ট করে এদিন বৈশাখী লেখেন, ‘ফাইনালি কমপ্লিট’।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সমকামী যুগলের ফলোয়ার সংখ্যা অগুণতি। প্রায় আড়াই লক্ষ নেটিজেন ফেসবুকে ফলো করেন তাঁদের। অন্যদিকে তাঁদের ইউটিউব ভিডিয়োতেও আসে লাখ লাখ ভিউজ। নিজদের দাম্পত্যের ঝলক, খুনসুটি ডেইলি ভ্লগসে তুলে ধরেন তাঁরা।
দিন কয়েক আগে এক ভিডিয়োতে বৈশাখী জানিয়েছিলেন, দু-বছর তাঁদের বিয়ের সময় মন্দিরা ও তাঁর স্বামীর আইনি বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি। পারিবারিক সূত্রে চেনা দুজনের। বিয়েতে খুশি ছিলেন না মন্দিরা। পরে স্বামীর হাত ছেড়ে বৈশাখীর সঙ্গে ঘর বাঁধেন তিনি। একটা সময় পালিয়ে বিয়ের সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন তাঁরা। মন্দিরাকে ইতিমধ্যেই বউমা হিসাবে মেনে নিয়েছে বৈশাখীর বাবা-মা।
বিয়ের সময় আর্থিক সমস্যায় ভুগেছেন দুজনেই। কষ্ট করে মাসে দুজনে মাত্র ৮ হাজার রোজগার করতেন। মন্দিরার ১২ বছরের কিশোর-পুত্রও রয়েছে। এখন তাঁর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন বৈশাখী-র মা।
বৈশাখী-মন্দিরার সংসারের চাকা এখন গড়গড়িয়ে এগিয়ে চলেছে। আজীবন এই ভাবেই পরস্পরের হাতটা ধরে রাখতে চায় এই সমকামী যুগল।