বিছিন্ন অশান্তির সঙ্গে সম্পন্ন হল রাজ্যের সপ্তম ও শেষ দফা নির্বাচন। এদিন সকাল থেকেই নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন টলি তারকারা। ভোট দিতে গিয়েও তালিকায় নাম না থাকায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, তবে ভোট দিতে গিয়ে বিরল অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকলেন অনীক দত্ত। আরও পড়ুন-প্রেম নিয়ে জল্পনা জারি! ‘ঝগড়াটাই আর্শীবাদ’, কেন ১৫ বছর দূরে ছিলেন ঋতুপর্ণা-প্রসেনজিৎ?
ফেসবুক লাইভে এসে পরিচালক অভিযোগ করেন, ভোট দিতে গিয়ে তৃণমূল আশ্রিত গুণ্ডাদের হাতে হেনস্থার মুখে পড়েছেন তিনি। তাঁকে ‘পুঁতে ফেলা’, ‘মেরে সাবার করে দেওয়া’র হুমকি দেওয়া হয়েছে। স্বভাবতই পরিচালকের আর্জি, ‘যদি দেখেন ৪ তারিখ আমার পঞ্চত্বপ্রাপ্তি (মারা যাওয়া) হয়েছে, তাহলে জানবেন এর জন্য কারা দায়ী!’
ফেসবুক লাইভে এসে ঘটনার বিররণ দেন বামমনস্ক পরিচালক। তিনি বলেন, ১১ নম্বর ডোভারলেনের বাসিন্দা তিনি। হিন্দুস্তান রোড দিয়ে তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করতে হয়। বাড়ি থেকে বেরিয়েই ২৮৮, ২৮৯ নম্বর বুথে ভোট দিতে যান তিনি। বাড়ি থেকে বেরিয়ে সদর দরজার ও পারে দেখলেন একাধিক রাজনৈতিক দলের ক্যাম্প। পরিচালককে বলতে শোনা গেল, ‘তৃণমূলের ক্যাম্পে অনেক লোক, সিপিএমের দুই জন টিমটিম করছে। আর বিজেপি তথৈবচ’। হঠাৎ জনৈক ব্যক্তি তাঁকে বলেন, ‘এখানে এত জন কী করছেন? হয় ভোট দিতে যান না হলে বাড়ি চলে যান।’ শুরুতে পরিচালক ভেবেছিলেন জনৈক ঠিক কাজ করছেন।
তবে দশ হাত দূরে তৃণমূলের আরও ক্যাম্প। সেখানে এলাকার প্রার্থী-সহ মুখ্যমন্ত্রী এবং ‘কোটিপতি না সেনাপতি’ (পড়ুন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়)-এর বড় বড় ফ্লেক্স ঝোলানো। এটি দেখেই প্রতিবাদী পরিচালক বলে ওঠেন, ‘এটাও তো নিয়মবিরুদ্ধ। আজ ভোটের দিনে বুথের এত কাছে এই সব। শুধু পতাকা লাগানো যায় বোধহয়’। এই কাজ নিয়মবিরুদ্ধ তা মেনে নিলেও ক্রমেই বচসা বাঁধে। সেই সময় ক্যাম্পের কিছু জিনিস সরিয়ে নিলেও ক্যাম্প সরায়নি। পরিচালক ভোট দিয়ে ফেরার সময় বেশকিছু ছেলে বাইক নিয়ে ‘খেলা হবে’ স্লোগান দেন অনীক দত্তকে উদ্দেশ্য করে।
এরপরে ঝাঁকে ঝাঁকে লোক চলে আসে। ধীরেধীরে পাশের বস্তি থেকে ছেলেদের দল, কিছু মহিলা এসে ‘ঝাঁপিয়ে পড়ে’ পরিচালকের উপর। তাদের মধ্যে কিছু মানুষ অনীক দত্তের মুখচেনা। ছোটবেলা থেকেই সেই ছেলেগুলোকে দেখেছেন, অনেকেই দুষ্কর্মের জন্যও এলাকায় কুখ্যাত। রীতিমতো গালিগালাজ করা হয় পরিচালককে।
‘ভূতের ভবিষ্যত’ পরিচালক আরও যোগ করেন, ‘আমাকে বলেছে, কী করে সাহস হয়। জলে থেকে কুমিরের সঙ্গে লাগতে এসেছ!’ কেউ কেউ বলে বসে, ‘ব্যাটা বিজেপি!’ (মুখে তাচ্ছিল্যের হাসি) তাঁকে এও বলা হয়,‘মেরে সাবাড় করে দেব।' তবে হুমকির মুখে পড়েও দমে যাননি পরিচালক। রুখে দাঁড়িয়ে বলেন, তাঁরা যা ইচ্ছে করতে পারে, তিনি সেখানেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
পরিচালক স্পষ্ট জানান, কেউ তাঁর গায়ে হাত তোলেনি তবে, ৪ তারিখের পর তাঁকে ‘ভ্যানিশ’ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। তাঁর আশা, পুলিশ হয়তো কোনও ভাবে দেখবেন বিষয়টি। এখনই এফআইআর করতে চান না তিনি। তবে জেনারেল ডায়রি করতে পারেন।
অনীক দত্তের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটার পর তাঁর বাড়িতে পৌঁছান কলকাতা দক্ষিণের বাম প্রার্থী সায়রা হালিম। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়।