নজরুল মঞ্চে গুরুদাস কলেজের ফেস্টে দু-ঘন্টা ধরে পারফর্ম করবার কয়েক মিনিটের মধ্যেই পৃথিবীকে ‘অলবিদা’ জানালেন কেকে। যে প্রাণচ্ছ্বল মানুষটা দু-ঘন্টা ধরে গরম আর ঠাসা ভিড় (দর্শকাসনের চেয়ে প্রায় তিণগুন) উপেক্ষা করেই ফ্যানেদের বিনোদনের রসদ জোগালো সে চলে গেল একদম চুপিসাড়ে। বাবা কলকাতা থেকে এমনভাবে কফিনবন্দি হয়ে ফিরবে তা ভাবেননি কেকে-র দুই সন্তান নকুল আর তামারা।
কলকাতা থেকে বাবার মরদেহ ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছিলেন নকুল, তামারা মুম্বইয়ে অপেক্ষা করছিল শেষবার বাবাকে দেখবে বলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বাবার শেষকৃত্যের সব তথ্যও শেয়ার করেছে। পাশাপাশি পরলোকে পাড়ি দেওয়া বাবার উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘তোমাকে চিরকাল ভালোবাসব ড্যাড’।
কেকে-র শেষকৃত্যের সব তথ্য শুধু মেয়ে নয়, ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে নিয়েছেন স্ত্রী জ্যোতিও। কেকে-র প্রকৃত নাম কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ, তবে গোটা জগত তাঁকে চেনে কেকে নামেই। প্রথমে বিজ্ঞাপনী জিঙ্গেল, তারপর সিরিয়ালের গান, অবশেষে বলিউডের প্লে-ব্যাক দুনিয়ায় প্রবেশ।
আজ সকাল সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত ভারসোভার বাড়িতে শায়িত ছিল কেকে-র দেহ। আজ ভারসোভার হিন্দু মহাশ্মশানে গায়কের শেষকৃত্য সম্পন্ন করবে ছেলে নকুল। মঙ্গলবার রাতে হার্ট অ্যাটাকের জেরেই মৃত্যু হয়েছে কেকে-র এমনটাই জানা গিয়েছে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে। সম্পূর্ন রিপোর্ট হাতে আসতে আরও দু-দিন।
কেকে-র মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বলিউডের মিউজির ইন্ডাস্ট্রি। এদিন কেকে-র বাড়িতে তাঁর অন্তিম দর্শনের জন্য হাজির ছিলেন শঙ্কর মহাদেবন. গুলজার, অলকা ইয়াগনিক, অভিজিৎ ভট্টাচার্যরা।
বুধবার কলকাতার রবীন্দ্র সদনে প্রয়াত গায়ককে গান স্যালুট দিয়ে সম্মান জানায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। স্বল্প সময়ের জন্য রবীন্দ্র সদন প্রাঙ্গনে শায়িত ছিল কেকে-র কফিনবন্দি দেহ।
বলা যায়, একপ্রকার গান গাইতে গাইতেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন কেকে। রেখে গেলেন অনেক প্রশ্ন আর বিতর্ক। তবে সেই সবের উর্দ্ধে তাঁর সৃষ্টিরা অমর, এমন হৃদয়বিদারক গলা নিয়ে ভাঙা প্রেমিক মনের যন্ত্রণা ব্যক্ত করার ক্ষমতা ক'জন গায়কের আছে? কথায় বলে শিল্পীর মৃত্যু হয় না, তবুও সবার মনেই প্রশ্ন, আরেকটু কি অপেক্ষা করা যেত না?