২০২০ সালে গোটা দেশে হইচই ফেলেছে অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর খবর। বছর প্রায় শেষের মুখে, ছয় মাস আগে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু নিয়ে আজও ধোঁয়াশা কাটেনি। আপতত দেশের তিন কেন্দ্রীয় সংস্থা সুশান্ত মৃত্যু মামলা ও তার সঙ্গে জড়িত অপর দুই মামলার তদন্তের দায়িত্বে। সুশান্তের মৃত্যুর তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। এই মৃত্যু নিয়ে মহারাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে একপ্রকাশ প্রকাশ্য সংঘাতে জড়িয়েছে বিহার ও কেন্দ্র সরকার। এবার এই মৃত্যু নিয়ে সিবিআই তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানতে চাইলেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ।
অগস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই মামলার তদন্তভার মুম্বই পুলিশের হাত থেকে তুলে দেওয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে। ‘পাঁচ মাসেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত, তবে সিবিআই এখনও জানাল না এটা আত্মহত্যা নাকি খুন? আমি আবেদন জানাচ্ছি সিবিআইয়ের কাছে যে তাঁরা নিজেদের তদন্তে উঠে আসা অনুসন্ধানগুলি প্রকাশ্যে আনুক যত তাড়াতাডি সম্ভব’, রবিবার জানালেন অনিল দেশমুখ।
গত ১৪ জুন বান্দ্রার কার্টার রোডের ফ্ল্যাট থেকে মেলে সুশান্তের দেহ। মুম্বই পুলিশের তরফে এই মামলাকে নিছকই আত্মহত্যার ঘটনা বলে দাবি করা হয়েছে, যদিও পরিবারের তরফে খুনের সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে। গত ২৫ জুলাই সুশান্তের মৃত্যুর ৪০ দিনের মাথায় অভিনেতার গার্লফ্রেন্ড রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে সুশান্তকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা দায়ের করেন সুশান্তের বাবা কেকে সিং। বিহার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল সুশান্তের পরিবার। এরপর কেন্দ্রের কাছে এই মামলা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার আবেদন জানান নীতিশ কুমার। জুরিসডিকশন নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিহার পুলিশের এফআইআরকে অবৈধ বলে দাবি করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন রিয়া চক্রবর্তী, রিয়ার সুরে সুর মিলিয়েছিল মহারাষ্ট্র সরকারও। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই মামলা যায় সিবিআইয়ের হাতেই।
সুশান্ত সিং রাজপুতের অটোপসি নিয়ে AIIMS-এর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের মতামত নিয়েছে সিবিআই। মুম্বইতে গিয়ে দীর্ঘ দু-সপ্তাহ তদন্ত চালিয়েছে সিবিআইয়ের টিম, সেখানে শামিল ছিলেন AIIMS-এর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরাও। গত ২৯ সেপ্টেম্বর এইমসের ছয় ফরেনসিক চিকিৎসকের কমিটির রিপোর্ট কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে জমা পড়ে। সংবাদ মাধ্যমে ফাঁস হয়ে যায় টিমের প্রধান সুধীর গুপ্তার মেসেজ, যেখানে তিনি দাবি করেছেন আত্মহত্যায় করেছেন সুশান্ত। যদিও গত তিন মাসে এই নিয়ে মুখে কুলুপ সিবিআইয়ের।
পাশাপাশি সুশান্তের মৃত্যু সংক্রান্ত আরও দুটি মামলা খতিয়ে দেখছে দেশের অপর দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা- ইডি এবং নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। মাদক মামলায় এনসিবির হাতে গত সেপ্টেম্বরে গ্রেফতার হতে হয়েছিল সুশান্ত মামলার মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর ভাই শৌভিক চক্রবর্তীকে। আপতত জামিনে মুক্ত তাঁরা।