সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে ৪৪ দিন। গত কয়েকঘন্টায় এই হাই প্রোফাইল কেসের দিশা সম্পূর্ন বদলে গিয়েছে। কারণ এখন আর শুধু মুম্বই পুলিশ নয়, পাটনা পুলিশও সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত শুরু করেছে। গতকাল সামনে আসে প্রয়াত অভিনেতার বাবা কেকে সিং সুশান্তের গার্লফ্রেন্ড রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া, প্রতারণা, ষড়যন্ত্র সহ একাধিক ধারায় এফআইআর দায়ের করেছেন পাটনার রাজীব নগর পুলিশ থানায়।
বুধবার সকাল থেকেই এই মামলার সঙ্গে জড়িত নানান তথ্য উঠে আসছে। সূত্রের খবর, সুশান্তের মৃত্যুর মামলা নিয়েই আজ বিকাল পাঁচটায় জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। জি নিউজ সূত্রে খবর, বৈঠকে মুম্বই পুলিশের উচ্চ পদস্থ পুলিশ অফিসার ও সুশান্তের কেসের দায়িত্বে থাকা অভিষেক ত্রিমুখেকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য সুশান্তের মৃত্যুকে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হিসাবেই তদন্ত করছে মুম্বই পুলিশ। অন্যদিকে পাটনা পুলিশের কাছেই প্রথম এফআইআর দায়ের করা হয়েছে সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তের। দুটি রাজ্যের পুলিশ এই মামলায় জড়িয়ে পড়ায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হস্তক্ষেপ ছাড়া বাকি কোনও রাস্তা দেখছেন না আইন বিশেষজ্ঞরা। তাই অবশেষে সিবিআইয়ের হাতেই এই মামলা তুলে দিতে পারে মহারাষ্ট্র সরকার,বলে মনে করা হচ্ছে।
মুম্বই পুলিশ নিজেদের সাফাইয়ে জানিয়েছে, সুশান্তের মৃত্যুর পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিনেতার পরিবারের তরফে কারুর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়নি কিংবা রিয়া চক্রবর্তীর নাম নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে সুশান্তের পরিবারের আইনজীবীর মুম্বই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, 'মুম্বই পুলিশ এফআইআর দায়ের করছিল না। তাঁরা বেশ কিছু বড় প্রযোজক সংস্থা নাম জোর করে জড়ানোর চেষ্টা করছিল এবং মামলাটি অন্যদিকে ঘুরে যাচ্ছিল'। পাশাপাশি রিয়ার নাম না করলেও সুশান্তের শেষ সময়ে তাঁরা আশেপাশে যাঁরা ছিল তাঁদের জোর দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কথা জানিয়েছিল পরিবার, বলেই টাইমস নাওকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে জানান কেকে সিংয়ের আইনজীবী বিকাশ সিং।
উল্লেখ্য, রিয়া ও অভিনেত্রীর পরিবারের এবং ম্যানেজারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত, সুশান্তের সঙ্গে প্রতারণা (আর্থিক ও মানসিক) এবং তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মতো অভিযোগ এনেছেন কেকে সিং। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ (আত্মহত্যায় প্ররোচনা), ৩৪১,৩৪২,৩৮০,৪০৬, ৪২০-ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার এই তদন্তে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন পাটনা পুলিশকে।