আরজি করের ঘটনায় এরাজ্য থেকে শুরু করে গোটা দেশ উত্তাল। তারই মাঝে মালায়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে চলা দীর্ঘদিনের যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি সামনে এসেছে হেমা কমিটির রিপোর্ট। এখানেই শেষ নয়, সম্প্রতি দক্ষিণী পরিচালক রঞ্জিতের বিরুদ্ধে আনা শ্রীলেখা মিত্রের যৌন হেনস্থার অভিযোগে আগুন জ্বলেছে দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। এবার সেই আগুনেই নতুন করে ঘি ঢাললেন দক্ষিণী অভিনেত্রী মিনু মুনীর।
মালায়ালম অভিনেত্রী মিনু মুনীর তাঁর প্রাক্তন সহ-অভিনেতা এবং অন্যান্য প্রযোজনা কলাকুশলীদের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মৌখিক যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন। এমনকি নিজের বিস্ফোরক পোস্টে দক্ষিণের বিশিষ্ট তারকাদের নাম নিতেও দ্বিধা করেননি মিনু মুনি। নিজের বিস্ফোরক ফেসবুক পোস্টে এম মুকেশ, ইদাভেলা বাবু, মানিয়ান পিল্লা রাজু, জয়সূর্যর মতো বিশিষ্ট তারকাদের নাম নিয়েছেন মিনু। যে ঘটনাগুলিকে তিনি ‘অসহনীয় নির্যাতন’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে শুধু এই অভিনেতারাই নয়, মিনুর অভিযোগের তালিকায় প্রোডাকশনের আরও অনেকেই রয়েছেন।
ফেসবুক পোস্টে অভিনেত্রী মিনু মুনীর লেখেন, ‘২০১৩ সালে একটা প্রজেক্টে কাজ করার সময় আমি এসব ব্যক্তির দ্বারা শারীরিক ও মৌখিক নির্যাতনের শিকার হই। আমি সহযোগিতা করার এবং কাজ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু নির্যাতন অসহনীয় হয়ে উঠেছিল। প্রতিবাদ করেও কোনও লাভ হয়নি। এক সংবাদ পত্রেও বিষয়টা জানিয়েছিলাম, তাতেও কিছু হয়নি। অগত্যা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকেই বের হয়ে আসি। তাই এখন বিচার চাইছি।’
মিনু মুকেশ ও জয়সূর্য ছাড়াও মানিয়ানপিল্লা রাজু, ইদাভেলা বাবু, অ্যাডভোকেট চন্দ্রশেখরন, প্রোডাকশন কন্ট্রোলার নোবেল এবং ভিচুর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনেছিলেন। তাঁর কথায় এঁদের কারণেই তিনি মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে পরে চেন্নাইয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে বাধ্য হন।
হেমা কমিটির রিপোর্ট
সম্প্রতি হেমা কমিটির রিপোর্টে মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একাধিক যৌন নির্যাতম, কাস্টিং কাউচ, পারিশ্রমিক বৈষম্য় সহ অসংখ্য অভিযোগ উঠে এসেছে। এরই মাঝে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যৌন হেনস্থা নিয়ে অভিযোগ আনলেন মিনু মুনীর।
এমনকি এক তরুণী অভিনেত্রীর যৌন নিপীড়নের অভিযোগের পরে অভিনেতা সিদ্দিক অ্যাসোসিয়েশন অফ মালয়ালম মুভি আর্টিস্টস (AMMA) এর সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। অন্যদিকে কেরালা রাজ্য চলচিত্র একাডেমির চেয়ারপার্সন রঞ্জিত একটা প্রকল্প নিয়ে আলোচনার সময় বাঙালি অভিনেতা শ্রীলেখা মিত্রর সঙ্গেও অশালীন আচরণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও শ্রীলেখার এই অভিযোগ অস্বীকার করেন রঞ্জিত। তবে অভিযোগ ওঠার পরই কেরালা চলচ্চিত্র অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি।
এদিকে মালায়ালম ইন্ডাস্ট্রিতে ঘটে চলা একের এক ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য ইতিমধ্যে SIT গঠন করেছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজায়ন।