বুধবার রাতে নিভল তিলোত্তমার আলো! অন্ধকারের মাঝে মোমবাতি হাতে নতুন আশার আলোর খোঁজে কলকাতাবাসী। এই আলো নিভল আর জি করের নির্যাতিতা তরুণীর জন্য বিচার চেয়ে। ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’ স্লোগানে মিলে মিশে একাকার কল্লোলিনী তিলোত্তমা!
যাদবপুর, শ্যামবাজার, সাউথ সিটি থেকে কলেজ স্কোয়ার- সর্বত্র এক ছবি। প্রতিবাদের এই অনন্য ভাষা সত্যি নজিরবিহীন। মানুষ বলছেন,'বিচার যত পিছোবে, মিছিল তত এগোবে'। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি ইতিমধ্যেই বাতিল হয়েছে। বসবে না প্রধান বিচারপতি-র বেঞ্চ। সন্ধ্যায় সেই খবর সামনে আসার পর হতাশা নেমে আসে গোটা বাংলা জুড়ে। শুনানি পিছোনোয় হতাশাগ্রস্ত তরুণী চিকিৎকের পরিবারও।
শুরু থেকে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নেমেছেন সোহিনী-শোভনরা। এদিন সুপ্রিম শুনানির পিছিয়ে যাওয়ার কথা কানে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব শোভন। গায়ক লিখলেন- ‘বিচার গড়ায় যতদূর..মিছিল ছড়ায় ততদূর’। সেই পোস্ট শেয়ার করে নেন স্ত্রী সোহিনী।
এদিন যাদবপুরে পথে নেমে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান মিমি। মোমবাতি হাতে প্রতিবাদে পথে নেমেছেন গায়ক অজয় চক্রবর্তীও। বাড়ির আলো নিভিয়ে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন অভিনেতা রাহুল দেব বসু। অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায় ফেসবুকে তাঁর প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন। তিনি লেখেন, ‘শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হলো! তাই মিছিল আরো বাড়বে আজ! থামবো না!’
পথে নেমে মমতা শঙ্কর জানান, ‘সে-বোধহয় নিজের প্রাণটা দিয়ে এইটা করে গেল। এতগুলো অন্যায়ের আমার কূলকিনারা দেখতে পাচ্ছি। আশা করছি মাথা যারা তারা বেরোবে.. ‘। ধর্ষকদের কঠিন শাস্তির দাবি করে তিনি বলেন,'….. টাঙিয়ে রাখা উচিত যারা এইরকম (ধর্ষণ) করবে। ছেলে-মেয়ে যেই হোক’। রাজনীতির রং ছাড়া এমন সংগঠিত আন্দোলন ভারতবর্ষের ইতিহাসে আগে কখনও দেখা গেছে কিনা সন্দেহ!
অভিনেত্রী হিসাবে নয়, এই রাজ্যের নাগরিক হিসাবে এদিন বেহালার পথে অপরাজিতা আঢ্য। তিনি বললেন, ‘আমাদের বোনের সঙ্গে এটা ঘটেছে, আমরা বিচার চাই। কোন রং নেই নয়, আমরা সাধারণ মানুষ যদি এটার প্রতিবাদ না করি তাহলে কোনওদিনই বিচার পাব না।’
দোষীদের শাস্তি চাই, নির্যাতিতার সুবিচার চাই। এর বাইরে অন্য কোনও ভাবনা নেই গোটা বাংলার। বিদ্রোহের এই আগুন এত সহজে নিভবে না, কোনও ‘তারখি পে তারিখ’ প্রতিবাদীদের টলাতে পারবে না। রাত দখলের এই প্রতিবাদ দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছে দিতে চায় শহর কলকাতা।