বাংলা সিনেমায় অভিনয়ের নিশ্চিত সুযোগ করে দেওয়ার নাম করে রাজ চক্রবর্তী সেজে ৫৫ হাজার টাকার প্রতারণা করার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ। শুক্রবার ভুয়ো রাজ চক্রবর্তী, যার আসল নাম সুভাষ দাস, তাকে বর্ধমান জেলার মেমারী থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিনব কায়দায় প্রতারণার ছক কষেছিল সে।
ঘটনায় রীতিমতো চোখ কপালে উঠেছে খোদ পুলিশ কর্তাদের। অভিযুক্ত জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে রাজ চক্রবর্তীর নামে একটি অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। এরপর বেশকিছু তরুণীকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায় সে। ফেসবুকেই মধ্যগ্রামের দোলতলা এলাকার গৃহবধূ অর্পিতা দাসের সঙ্গে রাজ চক্রবর্তীর নাম নিয়েই আলাপ জমায় সুভাষ। ফেসবুকে বেশ কিছুদিন চ্যাট করবার পর ওই ভুয়ো রাজ চক্রবর্তী অর্পিতা দাসের কাছে তাঁর কিশোরী কন্যাকে ছবিতে সুযোগ করে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। পরিবর্তে ৫৫ হাজার টাকা দাবি করে সে। অভিযুক্ত যুবকের প্রতারণার জালে সহজেই পা দেন অর্পিতা দেবী। ৫ মার্চ চুঁচুড়া পুলিশ লাইনের উলটোদিকে কোর্টের কাছে এক পুলিশের হাতে সেই টাকা তুলে দিতে বলে ভুয়ো রাজ চক্রবর্তী। এরপর নিজেই পুলিশ সেজে সেই টাকা নিয়ে চম্পট দেয় সুভাষ দাস। অর্পিতা দাসের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ১০ দিন যেতে না যেতেই এই প্রতারণা কাণ্ডের কিনারা করল পুলিশ।
গোটা ঘটনায় হতবাক পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন, ‘আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাউকে টাকাপয়সা নিয়ে কাজ দেওয়া হয়না। পারফরম্যান্সের বিচারে কাজ দেওয়া হয়’। সাধারণ মানুষকে এই ধরণের প্রতারণার জাল থেকে দূরে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
দেখুন এই ব্যাপারে রাজ চক্রবর্তীর ফেসবুক পোস্ট-
গ্রেফতারির পর সাংবাদিকদের সামনেই অভিযুক্ত সুভাষ দাস স্বীকার করে নেয়, রাজ চক্রবর্তীর নামে তৈরি তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলের ফ্রেন্ডলিস্টে একাধিক মহিলা রয়েছেন। তবে ৫-৬ জনের সঙ্গেই নিয়মিত কথা হত। যাদের মধ্যে দুজনের থেকে সিনেমায় সুযোগ করে দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়েছে সে।
চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার ডঃ হুমায়ুন কবীর জানান, ধৃত যুবকের কাছ থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা সহ দু’টি স্মার্ট ফোন ও একাধিক সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। এই প্রতারণায় আর কেউ জড়িয়ে রয়েছে কিনা , কোন কোন মহিলার থেকে এইভাবে টাকা হাতিয়েছে সে-অভিযুক্তকে জেরা করে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।