লকডাউনের জেরে ঘরবন্দি গোটা দেশ। করোনা কাঁটায় বিদ্ধ বাঙালিও। তবে এই লকডাউন একদিকে যেমন আমাদের সমাজের থেকে একটু দূরে ঠেলে দিয়েছে, তেমনই আমাদের ভিতরে লুকিয়ে থাকা 'আমি' কেও খুঁজে বার করতে শিখিয়েছে। আমাদের অনেক ছোট ছোট ইচ্ছা, স্বপ্ন, বা হারিয়ে যাওয়া অভ্যাস কিংবা এমন কোনও জিনিস যা কাজের চাপে আগে শেখা হয়ে উঠেনি- এই সময়টা সেগুলো ঝালিয়ে নেওয়ার সময়।
এই সময় আটকে নেই সৃষ্টিশীল মানুষের মনও। সিনেমাহল বন্ধ, সিরিয়ালেরও শ্যুটিং বন্ধ-তাই দেখা যাচ্ছে না নতুন এপিসোড। বাঙালির মুখে হাসি ফোটাতে অভিনব ভাবনা উইন্ডোজের। ঘরে বসেই এবার তৈরি হচ্ছে শর্ট ফিল্ম। নববর্ষে এটাই উপহার শিবপ্রসাদ-নন্দিতার। 'উইন্ডোজ শর্টস'-এর প্রথম ছবি মুক্তি পেল বৃহস্পতিবার। ছবির নাম 'হিং'। ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় দেখা গেল অপরাজিতা আঢ্য এবং মানালি দে-কে। স্বল্পদৈর্ঘ্যের এই ছবির শ্যুটিং একদম বাড়ি বসেই সেরেছেন মানালি-অপরাজিতা। এর আগে প্রাক্তন ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন এই দুই অভিনেত্রী।
হিংয়ের বিষয়ভাবনা-
লকডাউনের জেরে অফিস বন্ধ তবে ছুটি নেই আমাদের মা-কাকিমাদের। রান্নাঘরে হেঁসেল তাদের অনান্য দিনের মতোই এখনও সামলাতে হচ্ছে। তবে পরিচারিকারা কাজে আসতে না পারায়, অনেকেই এখন নিজেদের রান্না সারতে বাধ্য হচ্ছেন। হয় ইউটিউব দেখে না হয় মা কিংবা দিদিদের ফোন করে জেনে নিতে হচ্ছে রান্নার রেসিপি। তেমনই এক দিদি-বোনের গল্প বলল হিং। জীবনে প্রতিষ্ঠিত বোন মানালির আপসোস কেন যে রান্নাটা শিখিনি! অগত্যা সে স্মরণাপন্ন তাঁর হোমমেকার দিদি,অপরাজিতা আঢ্যর। হিং দিয়ে ডাল রান্না শেখালেন অপরাজিতা।আর সব শেষে তিনি সকলকে শেখালেন 'সংসার সামলানোটাও একটা আর্ট'। হিংয়ের পরিমাণের উপর যেমন ডালের স্বাদ নির্ভর করে, তেমনই একটা সংসারের খুশি আর আনন্দের চাবিকাঠিটা ধরা থাকে সেইসব হোমমেকার-হাউসওয়াইফদের হাতে, যাঁরা তাঁদের কাজের জন্য প্রকৃত কদর বা বেতন কোনটাই সারাজীবন পান না!
হিংয়ের কাহিনি লিখেছেন জিনিয়া সেন। সঙ্গীতের দায়িত্বভার সামলেছেন প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামিদিনেও আরও বেশ কয়েকটি শর্টফিল্ম সামনে আনতে চলেছে উইন্ডোজ। তবে সেই নিয়ে আপতত মুখ খুলতে না-রাজ প্রযোজক জুটি। কারণ বাকিটা ক্রমশ প্রকাশ্য। কিন্তু লকডাউনের এই মরসুমে শিবপ্রসাদ-নন্দিতার এই প্রয়াসকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সিনেপ্রেমী বাঙালি।