আরজি কর কাণ্ড নিয়ে সুপ্রিম শুনানির কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা- ‘পুজোয় ফিরে আসুন। উৎসবে ফিরে আসুন।’ মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি জানান, বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো! সেই নিয়ে কোনওরকম ‘ভুলভ্রান্তি, ষড়যন্ত্র, কুৎসা, অপপ্রচার, চক্রান্ত’ বরদাস্ত করা হবে না রাজ্য সরকারের তরফে।
একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার কথাও বলেন মমতা। সঙ্গে জানান, প্রয়োজনে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তিনি আলোচনায় বসতেও রাজি। রাস্তা আটকে প্রতিদিন রাতে প্রতিবাদ নিয়েও অনীহা প্রকাশ করেন মমতা। এর জেরেই ফের নেটপাড়ার একাংশের রোষের মুখে মুখ্যমন্ত্রী।
শুধু আম জনতাই নয়, মমতার এহেন মন্তব্যে হতাশ টলিপাড়ার তারকারাও। যাঁরা শুরু থেকে আরজি কর আন্দোলনে পথে নেমেছেন। মানসী সিনহা বরাবরই স্পষ্টবক্তা। শাসক দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে কোনওদিন কুণ্ঠাবোধ করেন না। এদিন ফেসবুকে একটি পোস্টার শেয়ার করেন ‘এটা আমাদের গল্প’ পরিচালক। সেখানে লেখা- ‘উৎসবে ফিরছি না’। ক্যাপশনে মানসী লেখেন, 'মা' হওয়া নয় মুখের কথা! বল্লেন কি করে?? ছি:'। কোনওভাবেই মমতার সঙ্গে সহমত হতে পারছেন না অভিনেত্রী-পরিচালক।
এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিদিন রাতে আপনারা যদি রাস্তায় থেকে.....অনেক মানুষ তো ডিস্টার্বডও হন। অনেক বয়স্ক মানুষও আছেন। মাইক লাগালে তাঁদের ঘুমেরও অসুবিধা হয়। সেজন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নিয়মও আছে যে রাত ১০ টার পরে মাইক বাজানো যাবে না বা এত সীমার মধ্যে মাইক বাজাবেন। তার থেকে জোরে বাজাবেন না। তা সত্ত্বেও আমরা সব ছেড়ে দিয়েছি।’
মানসীর সুরে সুর মিলিয়ে প্রতিবাদী অনিন্দিতাও। অভিনেত্রী ফেসবুকে মমতার সাংবাদিক বৈঠকের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেন। তাতে লেখা রয়েছে- ‘এক মাস হয়ে গিয়েছে, এবার উৎসবে ফিরুন’। ক্যাপশনে অভিনেত্রী লেখেন- ‘এটারই তো ওয়েট করছিলাম আমরা !!!!!!!!!!!!!!! কি কিউট না!!!!!!!!!!’
সুপ্রিম কোর্টে এদিন জানিয়েছে, আগামিকাল বিকাল ৫টার মধ্যে জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে ফিরলে রাজ্য কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে না। সেই সংক্রান্ত টুইট শেয়ার করে অনিন্দিতার আশঙ্কার- ‘এরপর কী?’
চিকিৎসকরা কি তবে আন্দোলন প্রত্যাহার করে কাজে ফিরবেন? এই ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কোনও তথ্য মেলেনি। তবে স্বাস্থ্য সচিব জানান, জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে ব্যহত রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা। গত এক মাসে রাজ্যের ৬ লক্ষ মানুষ স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে জানান মমতা।