ক্যাঙারুর দেশে বাজিমাত ভারতীয় উপমহাদেশের হেঁশেলের। মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার ১৩ নম্বর সিজনের ফাইনাল জিতে নিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত জাস্টিন নারায়ণ। দ্বিতীয় ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিসাবে এই নজির গড়লেন ২৭ বছর বয়সী জাস্টিন। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার এই বাসিন্দা মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার খেতাবি লড়াইয়ে পরাজিত করলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশোয়ার চৌধুরীকে ও পিট ক্যাম্পবেল-কে।
মঙ্গলবার মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার অফিসিয়্যাল ইনস্টাগ্রাম পেজ থেকে ঘোষণা করা হয় প্রতিযোগিতার বিজয়ীর নাম। জাস্টিন এই প্রতিযোগিতা জেতায় উচ্ছ্বসিত ভারতীয়রা, তবে কিছুটা মন খারাপ বাঙালির, কারণ মাস্টারশেফের মতো মঞ্চে গ্রাম বাংলার খাবার পান্তা ভাত আর আলু ভর্তা রেঁধে সকলের মন জিতে নিয়েছিলেন কিশোয়ার।
কেমন লাগছে মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার খেতাব জিতে? জাস্টিন নারায়ণ জানান- ‘একদম অবিশ্বাস্য, অদ্ভূত একটা অনুভূতি… আমি জিতে গিয়েছি সেটা বিশ্বাস করতে আরও একটু সময় লাগবে। তবে সত্যি আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই বিচারকদের… আমার সহ-প্রতিযোগি পিট এবং কিশোয়ারকে। এটা আমার জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা এইটুকু বলতে পারি। আমি ধন্যবাদ জানাব দর্শকদেরও। যাঁরা এই সফরে আমাদের সঙ্গী হয়েছেন, আমাদের উত্সাহিত করেছেন’।
ফাইনাল ডিশ রান্না নিয়ে কিশোয়ার বিচারকদের বলেন যে "প্রতিযোগিতায় এমন রান্না সত্যিই চ্যালেঞ্জের। সাধারণ রেস্টুরেন্টে এমন রান্না হয় না। কিন্তু বাঙালির কাছে এটা পরিচিত রান্না।" আর ফাইনাল ডিশ হিসেবে এটা রেঁধে নিজের তৃপ্তির কথাও জানান কিশোয়ার।
১৩ বছর বয়স থেকে রান্নার প্রতি মন দিয়েছেন জাস্টিন, তাঁর স্বপ্ন একটা রেঁস্তোরা খোলবার। মাস্টারশেফের খেতাব তাঁর এই স্বপ্নপূরণে অনেকখানি সহায়ক হবে তা বলাই যায়। পাশাপাশি জাস্টিন আরও জানিয়েছেন, নিজের অর্জিত অর্থ দিয়ে ভারতের দরিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী শিশুদের জন্য খাদ্য আর শিক্ষার বন্দোবস্ত করতে চান তিনি।
অর্ধেক ভারতীয় এবং অর্ধেক ফিজিয়ান জাস্টিনের রান্নায় দুই দেশের খাবারের স্বাদ বিদ্যমান। ভারতীয় চিকেন ট্যাকোস, চার্কোল চিকেন উইথ টোম (Charcoal Chicken with Toum), ভারতীয় চিকেন কারি, ফ্ল্যাটব্রেড আর আচারের স্যালাড-এর মতো রান্না করে মাস্টারশেফের মঞ্চে বিচারক ও দর্শকদের মন জিতে নিয়েছেন জাস্টিন।
এর আগে ২০১৮ সালে ভারতীয় বংশোদ্ভূত শাশী চেলিয়া মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার খেতাব জিতেছিলেন। ডিজনি প্লাস হটস্টার প্রিমিয়ামে স্ট্রিমিং হচ্ছে এই শো-এর।