আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নেমেছে সমাজের সর্বস্তরের মেয়েরা। তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস খুন ও ধর্ষণ নিয়ে গর্জে উঠেছেন সকলে। আম জনতা, তারকা নির্বিশেষে সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিচারের দাবিতে সরব হয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামের টাইমলাইনে ঘুরে বেড়াচ্ছে মাত্র ৫ সেকেন্ডের একটা ভিডিয়ো।
মোমবাতি মিছিলে বলীয়ান কন্ঠে স্লোগান দিচ্ছেন এক তরুণী। সেই কলেজ পড়ুয়াকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘Wherever I go, however I dress, NO MEANS NO, yes means yes’। যার বাংলা তর্জমা করলে খানিক দাঁড়ায়, ‘আমরা যেখানেই যাই, যে ধরণের পোশাক পরি, না মানে না, আর হ্যাঁ মানে হ্যাঁ’। অর্থাৎ কোনও মেয়ের সম্মতি ছাড়া কোনও পুরুষ যেন তার দিকে হাত বাড়ানোর সাহস না পায়।
এই ভাইরাল কন্যের ভিডিয়ো ঘিরে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ, তবে জানেন কি এই প্রতিবাদী কন্যে কিন্তু ওপার বাংলার ছাত্রনেত্রী। হ্যাঁ, এই ভাইরাল কন্যের নাম ইলা লালালালা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেভেলিউশনারি স্টুডেন্ট ইউনিটি- বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সহ সভাপতি ইলা। ‘ডিমোক্রেজি ক্লাউনস্’ নামের এক মিউজিক্যাল ব্যান্ডের সদস্যা ইলা। যাদের মূলমন্ত্র হল- ‘পথে, ক্ষতে, ভিন্নমতে, পিরীতি আর বিপ্লবে...’। গানে গানেও বিপ্লবের কথাই বলেন ইলা।
অনেকেই বুঝতে না পেরে এই প্রতিবাদী ভিডিয়োকে কলকাতার বলে ভুল করেন। কেমন কী রিল ভিডিয়োর লোকশন হিসাবেও কলকাতার নাম উল্লেখ করা হয়। এতে বেশ ক্ষুব্ধ বাংলাদেশিরা। একজন লেখেন, ‘ভারতীয়দের অভ্যাস ভালো কিছু দেখলেই নিজের বলে চালিয়ে দেয়’। অপর একজন লেখেন, ‘এটা তো আমাদের বাংলাদেশের মেয়ে, ঢাবির ইলা’। কনফিউশন দূর করতে ইলার ফেসবুক প্রোফাইলের লিঙ্কও শেয়ার করা হয় ভিডিয়োয়। কেউ ট্যাগ করেন বাংলাদেশের ছাত্রনেত্রীকে। অবশেষে ভিডিয়োর কমেন্ট বক্সে ইলা জানান, ‘হ্যাঁ, এটা ঢাকার ভিডিয়ো, আমি জীবনে কলকাতা যাইনি। এটা আমার ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে করা প্রতিবাদ, আপনাদের সাথে একাত্মতা জানিয়ে করা প্রতিবাদ। তবে ভুল তথ্য ছড়াবেন না’।
এই বামপন্থী ছাত্রনেত্রী দিন কয়েক আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আরজি কর কাণ্ডে সমবেদনা জানিয়ে ‘ঢাকা টু কলকাতা’ নামের প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেন ইলা, ভিডিয়োটি সেই সময়ের। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচণ্ড অ্যাক্টিভ ইলা। ফেসবুকে তাঁর অনুগামীর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। প্রয়োজনে অন্তর্বতী সরকারকে বিঁধতে ছাড়েননি, এমনকি ‘ফেনীর বন্যা’কে কৃত্রিম বন্যা বলে ভারতকে তোপ দাগতেও ছাড়েননি।