আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস খুন ও হত্যার ঘটনার পর ৩৬ দিন অতিক্রান্ত। বিচার চেয়ে টানা ৬ দিন ধরে রাস্তায় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বসে রয়েছে জুনিয়র ডাক্তাররা। অনেক আশা নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে পৌঁছেছিল আন্দোলনকারীদের ৩০ জনের প্রতিনিধি দল। ভিডিয়ো নিয়ে জটের পরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরে তাঁরা হতাশায় ভেঙে পড়েন। আরও পড়ুন-সহযোদ্ধাকে জড়িয়ে হাউ হাউ করে কান্না কিঞ্জলের! জোর হাতে বললেন-'চেয়ার চাই না, বিচার চাই'
মমতার কালীঘাটের বাড়ির সামনেই সংবাদমাধ্যমের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকেই। যার মধ্যে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে দেখা গিয়েছিল এক মহিলা চিকিৎসকে। তাঁকে কান্নায় ভেঙে পড়ে বলতে শোনা গিয়েছিল- ‘আমাদের মুখের উপর দিয়ে ওঁনারা গাড়ি নিয়ে চলে গেলেন। যখন আমরা মিনিটস-টুকু নিয়ে ভিতরে যেতে চাইলাম, ওঁনারা মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিলেন, বললেন যে বাস ডেকে দিচ্ছি, তোমারা চলে যাও… ম্যাডামের রেসপেক্টটা রেখে আমরা সব কিছু মানতে রাজি ছিলাম…।’ তাঁর কান্না দেখে চোখের কোণ ভিজেছে গোটা বাংলার। কে এই আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসক?
রবিবার তাঁর সঙ্গে পরিচয় করালেন পরিচালক বিরসা দাশগুপ্ত। পরিচালকের চোখে বাস্তব জীবনের সুপারহিরো তিনি। এই চিকিৎসকের নাম ডাঃ অমৃতা ভট্টাচার্য। বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউড অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের এএনটি বিভাগের জুনিয়র রেসিডেন্ট তিনি।
বিরসা লেখেন, ‘গত রাতে ডাঃ অমৃতা ভট্টাচার্য একজন বাচ্চার মতো ফুঁপিয়ে কেঁদেছেন। কিন্তু তিনি সুপার স্ট্রং, অন্য সকল আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের মতোই। সামনে যাই আসুক না কেন, তাঁরা সুবিচারের দাবিতে এই লড়াই চালিয়ে যাবেন।’ এরপর অমৃতার ভিডিয়ো বার্তা মন দিয়ে শোনার অনুরোধ করেন বিরসা।
অমৃতাকে বলতে শোনা গেল, ‘আমাদের কলিগ, আমাদের দিদির সঙ্গে যে জঘন্য অপরাধ ঘটেছে, তার প্রতিবাদে সুবিচারের দাবিতে আমরা পথে নেমেছি। শুধু আমি একা নয়, আপনারা সকলে এই লড়াইয়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। স্বাস্থ্যভবনের সামনের রাস্তায় বসে আমরা শুধুই বিচার চেয়ে চলেছি। আমরা শুধু একটা সহজ অনুরোধ রেখেছিলাম, লাইভ স্ট্রিমিং-এর। কিন্তু একটা নোংরা রাজনীতির খেলা চলছে, যদিও প্রথম দিন থেকে আমরা বলে আসছি আমাদের এই আন্দোলনে কোনও রাজনীতির রং নেই। আমরা শুধুই বিচার চাই। আমরা এখানে আছি, আমরা শুধুই বিচার চাইছি, আপনাদের সমর্থন রয়েছে বলেই আমরা এখানে টিকে থাকতে পেরেছি। চলুন এই লড়াইকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাই, যতক্ষণ না পর্যন্ত বিচার মিলছে। আমরা রাস্তাতেই থাকব, এবং লড়তে থাকব’।