সুঠাম দেহ,বলিষ্ঠ চেহারার মিলিন্দ সোমন নব্বইয়ের দশকে ভারতীয় মডলিংয়ের দুনিয়ার বেতাজ বাদশা ছিলেন। বয়স বেড়েছে ঠিকই, তবে এই তারকার আবেদন যে কোনও অংশে কমে যায়নি তা বারংবার প্রমাণ করে দেন তিনি। সাহসী মনোভাবের জন্য হামেশাই চর্চায় থাকেন এই প্রাক্তন সুপার মডেল। অল্ট বালাজির পরবর্তী শো পৌরুষপুরে ট্রান্সজেন্ডারের ভূমিকায় দেখা যাবে মিলিন্দকে, সেই নিয়েও শোরগোল সোশ্যালে। এর মাঝে হিন্দুস্তান টাইমসে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ‘ন্যুড’ ছবি বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন মিলিন্দ, বললেন সর্বদাই নিজের ‘চরিত্র’কে বেছে নিয়েছেন তিনি।
অভিনেতা জানিয়েছেন, ‘পরিচালকরা এবং প্রযোজকরা হামেশাই যৌনতা এবং হিংস্রতার বিষয়গুলোকে তাঁদের গল্পের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। কারণ সেগুলো বর্তমানে ঘটছে। যেগুলোর অস্তিত্ব নেই, সেগুলোকে তুলে ধরার কি কোনও মানে আছে? আমাদের জীবনে আমরা অনেক কিছু লুকিয়ে রাখি। আমাদের আশেপাশে সমাজে ঘটা নির্যাতন, অবিচার এমন অনেক কিছুকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করি। তবে গল্পের মাধ্যমে এগুলোকে কেন আমরা তুলে ধরতে পারি না? অবশ্যই আসল ঘটনা যা প্রতিনিয়ত ঘটছে এবং একই রকম ভাবে ঘটে চলছে তা আলোচনার মাধ্যমে তুলে ধরা উচিত। তুমি কখনো সেটাকে লুকোতে পারো না। যৌনতা হলে যৌনতা, হিংস্রতা হলে হিংস্রতা’।
মিলিন্দ আরো বলেন, ‘আমি একজনের সঙ্গে ন্যায়সঙ্গত এবং অন্যায়-সঙ্গত, সেন্সরশিপ এবং আরও নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলাম। এটা সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছের ওপর নির্ভর করে। মানুষকে বোঝাতে হবে, যৌনতা দেখানো উচিত। যদি তোমার দেখতে ভালো না লাগে, তবে দেখো না। সেখানে খারাপ ভাষা থাকতে পারে, হিংস্রতা থাকতে পারে। যদি তুমি রক্ত দেখতে না চাও, একদমই দেখা উচিত নয়। এটা তোমাদের দেখানো হচ্ছে, তাঁদের নিজেদের বুঝতে হবে। কারণ, শেষ পর্যন্ত তাঁদের পছন্দ করতে না দিলে তাঁরা বুঝতে পারবে না’।
মিলিন্দ স্পষ্ট করে জানান, ‘বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে যখন সবকিছু একটা ক্লিকে অনায়াসেই মিলছে, সেখানে সেন্সরশিপ অর্থহীন। আজকে ইন্টারনেটের যুগে যখন কেউ নগ্ন ছবি আপলোড করার বিষয় নিয়ে আমাকে বলে- হ্যাঁ, আমি অবশ্যই আপলোড করেছি ইনস্টাগ্রামে। এবং কর্তৃপক্ষ সেটাকে সরিয়েও দেয়নি। ইনস্টাগ্রামে #naked দিয়ে সার্চ করলে দশ মিলিয়ানের বেশি নগ্ন ছবি তুমি খুঁজে পাবে। তাই তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তুমি নেকেড হ্যাশট্যাগ দিয়ে সার্চ বোতাম প্রেস করবে নাকি! সেটা তোমার ইচ্ছের ওপর নির্ভর করে। যদি তুমি না করো, তুমি দেখতেও পাবে না কিছু’।
অভিনেতা আরো বলেন, ‘যদি আপনি এমন কাউকে জানেন যে এর আগেও নগ্ন ছবি তুলেছে, সে আবারও সেটা তুলবে। আর কেন নয়? কারণ এতে কোনও ভুল নেই। আমি কর্মাশিয়ালি ম্যাগাজিনের, সংবাদপত্রে জন্য মডেল হিসেবে, অভিনেতা হিসেবে কাজ করেছি। একজন অভিনেতা হিসাবেও আমি যৌন দৃশ্যে অভিনয় করেছি। আর আমি এটি আমার ইনস্টাগ্রাম পেজে রাখব না কেন? আপনি আমায় অনুসরণ করতে চাইলে করবেন, নয়তো করবেন না’।
কিছু লোক অভিনেতাকে বলেছিলেন, তাঁর মা ইনস্টাগ্রামে রয়েছেন। উনি কী ভাববেন? আমি বলেন, ‘উনি (মিলিন্দের মা) পেজটাই সম্প্রতি খোলেননি’।
প্রসঙ্গত, ৫৫ বছরের জন্মদিনে গোয়ার সমুদ্র সৈকতে নগ্ন হয়ে দৌড়ে, বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছিলেন মিলিন্দ সোমান। সামাজিক মাধ্যমে সেই ছবি পোস্ট করায়, গোয়ার কোলভা পুলিশ থানায় মিলিন্দ সোমনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছিল। গোয়া সুরক্ষা মঞ্চ নামের এক এনজিওর তরফে সেই অভিযোগ আনা হয়।