পরিশ্রম আর আত্মবিশ্বাস,এই দুটো সঙ্গে থাকলে জীবনে সব মুশকিল আসান হয়ে যায়,তা ভালোভাবেই বুঝিয়ে দিয়েছেন মিমি চক্রবর্তী। জলপাইগুড়ির পাণ্ডপাড়ার মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে মিমি। গ্ল্যামার দুনিয়ার সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ ছিল না। তবুও একরাশ স্বপ্ন আর আত্মবিশ্বাস নিয়েই কলকাতায় হাজির হয়েছিলেন মিমি। কীভাবে টলিগঞ্জে প্রথম ব্রেক পেলেন নায়িকা? শনিবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম Helo-র লাইভে এসে সে কথাই শেয়ার করলেন তারকা।
কলকাতায় এসে আশুতোষ কলেজে ইংরাজিতে আনার্স নিয়ে পড়বার সময়ই মডেলিং শুরু করেন মিমি। অংশ নেন বেশকিছু বিউটি কনটেস্টেও। মিমির প্রথম সিরিয়াল ছিল চ্যাম্পিয়ান। এই নিয়ে মিমি বলেন, আমার প্রথম সিরিয়াল চ্যাম্পিয়ান,সেটা তিন-চার মতো চলেছে। এরপর আমি জীবনেও ভাবতে পারিনি যে ঋতুপর্ণ ঘোষ…. না, ঋতুদা আমাকে ডাকেননি, আমার প্রথম সিরিয়ালের পরিচালক ডেকেছিলেন প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে অডিশনের জন্য। সেখানে গিয়ে জীবনে প্রথমবার বুম্বাদাকে দেখলাম। দেখেই সব পুরোনো সিনেমাগুলোর কথা মনে পড়ে গেল। সেদিন ঋতুদার সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। আমার খুব ইচ্ছা ছিল ঋতুদাকে দেখার। উনি কী ওইরকমই যেমনভাবে উনি টিভিতে কথা বলেন!'
বাঙালি দর্শকের সঙ্গে মিমির পরিচয় হয়েছিল গানের ওপারের পুপে হিসাবে। এই সিরিয়ালের ক্রিয়েটিভ হেড ছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। কার্যত নিজের হাতে করে মিমিকে তৈরি করেছিলেন তিনি। প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের 'আইডিয়াস ক্রিয়েশন' (এখন এনআইডিয়াস) এর প্রযোজনায় তৈরি হয়েছিল এই ধারাবাহিক। কলেজ পড়ুয়া গোরা আর পুপের প্রেম আর সেই প্রেমের মাঝখানে রবিঠাকুর। এই নিয়ে গড়ে উঠেছিল গানের ওপারে। মুখ্য ভূমিকায় মিমি ও অর্জুন।
‘ দ্বিতীয় দিন আমার লুক সেট হয়। সেই সময় আমার বব কাট চুল ছিল। একদমই পুপের মতো সেজে যাই নি। আমাকে সবাই বলেছিল এই চরিত্রটা একটা রাবীন্দ্রিক চরিত্র। তাঁর রবীন্দ্রনাথকে অসাধারণ জ্ঞান রয়েছে, একটা প্রাপ্তি রয়েছে। ছোটবেলা থেকে রবীন্দ্রনাথকে ভগবান মেনে বড় হয়েছে’, এক নাগাড়ে বলে চললেন মিমি।
জলপাইগুড়ির 'টমবয়' মিমিকে পুপে হিসাবে গড়ে নিতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি ঋতুপর্ণ ঘোষকে।অপর এক সাক্ষাত্কারে মিমি জানিয়েছিলেন, তাঁকে শাড়ি হাঁটতেও শিখেয়েছিলেন ঋতুদা। অভিনেত্রীর শাড়ি পর্যন্ত নিজের হাতে বেছে দিতেন ঋতুপর্ণ ঘোষ।
প্রসঙ্গত লকডাউনে স্টার জলসায় পুনঃসম্প্রচার শুরু হয়েছে এই চর্চিত বাংলা ধারাবাহিকের। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি মিমিকে। বাপি বাড়ি যার সঙ্গে ২০১১ সালে রুপোলি সফর শুরু করেন মিমি। পরের ছবি বোঝে না সে বোঝে না সুপারহিট। গত এক দশকে টলিগঞ্জের একাধির হিট ছবির কাস্টিংয়ের তালিকায় জ্বলজ্বল করছে মিমির নাম। আর এখন তো তিনি শুধু বাঙালির পছন্দের নায়িকাই নন, জনপ্রতিধিনিও। গত বছর লোকসভা নির্বাচনে যাদবপুর আসনে জয়ী হন মিমি চক্রবর্তী। মিমির রাজনীতিতে প্রবেশ করা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি, তবে কথায় নয় কাজে জবাব দেওয়াতেই বিশ্বাসী মিমি চক্রবর্তী। করোনা সংকট থেকে আমফান বিপর্যয় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবরকম প্রচেষ্টা করছেন এই তারকা সাংসদ।
অন্যদিকে মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে মিমির নতুন ছবি ড্রাকুলা স্যারও। যদিও করোনার জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য মুক্তি পিছিয়ে পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্যের এই ছবির।