দীপের 'অপরাধ' সে থ্যালেসেমিক। এই কারণ দেখিয়েই তাঁকে ছেড়ে চলে গেছে তাঁর বাবা-মা দু'জনেই! পুরো নাম দীপ হালদার। সোনারপুরের বাসিন্দা দীপ ছোট্ট থেকেই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। দাদু ও ঠাকুমার কাছেই মানুষ হয়েছে সে। দাদু রিক্সা চালান এবং ঠাকুমা পরিচারিকার কাজ করে। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হওয়ার কারণে কয়েক মাস অন্তর রক্তের প্রয়োজন হয় তাঁর। গত বছর লকডাউনের সময়ে ছোট্ট দীপের জন্য রক্ত না পাওয়ায়, তা জোগাড় করার তাগিদে পায়ে হেঁটে সোনারপুর থেকে কলকাতা চলে এসেছিলেন দীপের ঠাকুমা।
এ বছর খাতায় কলমে না হলেও পুরোপুরি লকডাউন না হলেও গণ পরিবহন প্রায় সবই বন্ধ। সম্প্রতি ফের দেখা গেছিল দীপের জন্য রক্ত জোগাড় করা নিয়ে সমস্যা। এহেন পরিস্থিতিতে একপ্রকার অয়হায় হয়ে পড়ে সেই পরিবার। তবু হন্য হয়ে রক্তের খোঁজ শুরু করেছিলেন দীপের পরিবার। পুরো ঘটনাটি কানে যেতেই সময় নষ্ঠ না করে সামনে এগিয়ে এলেন মীর। হ্যাঁ, জনপ্রিয় টলিউড-ব্যক্তিত্ব মীর আফসর আলি। করলেন রক্তদান। আপাতত এবারের মতো দীপের রক্ত না পাওয়ার চিন্তা দূর করলেন তিনি। তবে হ্যাঁ, মীর নিজে কিন্তু তাঁর এই রক্ত দানের ছবি কিংবা এই বিষয়ে একটি কথাও নেট মাধ্যমে শেয়ার করেননি। যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দৌলতে মীর জানতে পেরেছিলেন এই খবর এবং যাঁদের উদ্যোগেই এই গোটা ব্যাপারটি সম্ভবপর হয়েছে, সেই ব্লাড মেটস সংস্থার সোশ্যাল মিডিয়া পেজেই মীরের রক্তদান করার ছবি ও গোটা বিষয়টি সামনে এসেছে।স্বাভাবিকভাবেই মীরের এই মানবিক গুণের ভূয়সী প্রশংসা করেছে নেটিজেনরা। নেটদুনিয়ায় শুভেচ্ছা ও কুর্নিশ ভেসে এসেছে মীরের উদ্দেশে। মানুষ যে আজও মানুষের পাশে দাঁড়ায় তা এহেন কঠিন পরিস্থিতেও চোখে আঙ্গুল দিয়ে ফের একবার দেখিয়ে দিলেন মীর!
তবে শুধু মীরই নন, এই করোনাকালে সাধারণ ও দুঃস্থ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বহু টলি-ব্যক্তিত্ব। অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং রক্তের আকাল যাতে না দেখা যায় তার জন্য এগিয়ে এসেছেন তাঁরা। শ্রীলেখা মিত্র, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের মতো তারকারাও রক্ত দিয়েছেন।