মানবতাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম- একথা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন অভিনেতা,সঞ্চালক মীর আফসার আলি।সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বরাবর ফুটে উঠে মীরের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে। এর জেরে কম আক্রমণের মুখে পড়তে হয়নি, কিন্তু সেই নিয়ে মাথা ঘামান না মীর। কিন্তু দুর্গাপুজোর স্মৃতির কথা শেয়ার করে আক্রমণের মুখে পড়ে ‘হতাশ’ হলেন মীর। আক্ষেপের সুরে জানালেন, ‘অশেষ ধন্যবাদ তাঁদের যাঁরা বার বার মনে করিয়ে দেন আমি শুধুই একজন মুসলমান, আর অন্য কোনো পরিচয় নেই মীরের'।
ছেলেবেলায় দুর্গাপুজোয় কী করতেন তিনি? কেমন কাটত দিনগুলো? সেই পুরনো অভিজ্ঞতার ঝুলি উপুড় করেছেন এক প্রমোশ্যানাল ভিডিয়ো বার্তায়। বিতর্ক সেই ভিডিয়ো ঘিরেই। দুর্গাপুজো নিয়ে মুখ খুলতেই ধর্মের ধ্বজাধারীদের রোষের মুখে মীর। সোশ্যাল মিডিয়াতেই তাই আক্ষেপ মীরের, ‘এত যুগ বাদেও মানুষকে বোঝানো গেল না যে, ধর্ম যার যার নিজের ব্যাপার। কিন্তু ‘উৎসব’ সবার'।
অভাবের সংসার ছিল মীরের। ছেলেবেলায় তাঁর নতুন জামা হলেও বাবা-মা কোনওদিন নতুন পোশাক কেনেননি নিজেদের জন্য। ‘সঙ্গীতের মহাযুদ্ধ’ রিয়্যালিটি শো-এর সঞ্চালক গড়গড়িয়ে বলে চলেন,'পুজোয় প্রত্যেক বছর মা-বাবা আমায় নতুন জামা-কাপড় কিনে দিতেন। কিন্তু কোনও দিন তাঁরা নিজেদের জন্য জামা-কাপড় কিনতেন না। অনেক বছর পর্যন্ত আমার মনে প্রশ্ন জেগেছিল, কেন আমার হয় ওঁদের হয় না?'
মীরের বাবা সে দিন ছেলেকে বুঝিয়েছিলেন, সে দৈর্ঘে-প্রস্থে বড় হচ্ছে, তাই তাঁর জন্য নতুন জামা কেনা হচ্ছে। কিন্তু মা-বাবা বড় হয়ে গিয়েছেন। তাঁদের আর নতুন পোশাক কেনারও কোনও দরকার নেই। কিন্তু পরবর্তী সময়ে মীর উপলব্ধি করেন, একসঙ্গে তিনজনের নতুন পোশাক কেনবার সামর্থ্য তাঁর বাবার ছিল না. এই ঘটনাই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এই স্মৃতিচারণা যেমন অনেকের মন ছুঁয়েছে, তেমনই কটাক্ষ ধেয়ে এসেছে ভুরিভুরি।যাঁরা মন্তব্য করেছেন মুসলমান মীরের হিন্দুদের শ্রেষ্ঠ উত্সব দুর্গাপুজো নিয়ে শেয়ার করা এই স্মৃতিকে ঘিরে।
সেই প্রসঙ্গে মীর লেখেন, ‘ইতিমধ্যে ধর্মের নামে কিছু বিজ্ঞ মানুষ জ্ঞান ফলাতে চলে এসেছেন। এত যুগ বাদেও মানুষকে বোঝানো গেল না যে ধর্ম যার যার নিজের ব্যাপার কিন্তু উৎসব সবার।যাক গে। বড় বড় মনীষিরা যেটা করে যেতে পারেননি, সেটা আমার মতন একজন অতি সামান্য ক্ষুদ্র মানুষ কি করে পারবে…..বড্ড হতাশ হলাম। আবার।’।