গোটা বিশ্বে করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। করোনা সংকটে জর্জরিত দেশগুলির মধ্যে অন্যতম ইংল্যান্ড। এইরকম অবস্থায় মিস ইংল্যান্ডের মুকুট খুলে স্টেথোস্কোপ হাতে তুলেনিলেন 'মিস ইংল্যান্ড ২০১৯' ভাষা মুখোপাধ্যায়। মহামারী করোনার সঙ্গে যুদ্ধে কাজে ফিরলেন পেশায় চিকিত্সক এই সুন্দরী।
সিএনএন-কে দেওয়া সাক্ষাত্কারে ভাষা জানিয়েছেন, একটি এনজিও-র কাজে মার্চের শুরুতে ভারতে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু ব্রিটেনে করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল আকার ধারণ করছে দেখে নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি তিনি। তাঁর কথায়, ‘আমি যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরতে চেয়েছিলাম। সেখানে ফিরে কাজে যোগ দেওয়াই ছিল আমার একমাত্র লক্ষ্য’। বস্টনের যে হাসপাতালে একসময় কাজ করতেন ভাষা, সেখান থেকেই তাঁর প্রাক্তন সহকর্মী তাঁকে জানায় রোগীর সংখ্যা মাত্রাধিক। এরপরেই পূর্ব ইংল্যান্ডের পিলগ্রিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ভাষা। এবং কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলেন।
ভাষা নিজের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানান, ‘ আমার মনে হয়েছিল এই জন্যই তো আমি ডিগ্রীটা নিয়েছিলাম, এর থেকে ভালো সময় আর কি হতে পারে চিকিত্সার কাজে ফেরার জন্য। এটা দুর্দান্ত গোটা বিশ্ব যেভাবে চিকিত্সা ক্ষেত্রে যুক্ত ব্যক্তিদের মনোবল বাড়াচ্ছে, আমিও তো এই দলেরই অংশ, তাই সাহায্য করতে চেয়েছিলাম’।

২৩ বছরের এই প্রবাসী বঙ্গতনয়া ডার্বির বাসিন্দার। চিকিত্সক হিসাবে দুটো ডিগ্রী রয়েছে ভাষার। তাঁর ‘আইকিউ ১৪৬’ যার সুবাদে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে একজন জিনিয়াস হিবাসেই চিহ্নিত। পাঁচটি পৃথক ভাষা জানেন এই সুন্দরী। ট্রেনিং পিরিয়ড শেষ করে বস্টনের হাসপাতালে জুনিয়ার ডাক্তার হিসাবে কাজে যোগ দেওয়ার কয়েক ঘন্টা আগেই গতবছর মিস ইংল্যান্ড প্রতিযোগিতায় সেরার শিরোপা ওঠে ভাষার মাথায়।
কলকাতায় জন্ম ভাষার। ন’ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে ইংল্যান্ডে যান ভাষা। নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিক্যাল সায়েন্স এবং মেডিসিন ও সার্জারিতে জোড়া স্নাতোক ডিগ্রী লাভ করেছেন ভাষা।
জানা গিয়েছে বুধবার থেকে কাজে যোগ দিয়েছেন ভাষা। ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৪৮ হাজার ছাড়িয়েছে, গোটা দেশে মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজারেরও বেশি।