অনিরুদ্ধ ধর
দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পেলেন মিঠুন চক্রবর্তী। সঙ্গে সঙ্গেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি কথা উঠে আসতে শুরু করেছে, তিনি এই পুরস্কারের যোগ্য কি না। এমনও অনেকে বলছেন, শুধুমাত্র বিশেষ রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বলেই তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়া হল। ইত্যাদি ইত্যাদি। তিনি যোগ্য নাকি যোগ্য নন, সেই আলোচনায় পরে আসছি। আপাতত ফিরে যাই, পুরনো একটা গল্পে। তার প্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা তুলনায় সহজ হবে।
১৯৮৮ সাল। আমি তখন বাংলার এক জনপ্রিয় লাইফস্টাইল পত্রিকায় কর্মরত। পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন অপর্ণা সেন। তিনি নির্দেশ দিলেন মিঠুন চক্রবর্তীকে নিয়ে স্টোরি লিখতে হবে। দায়িত্ব বর্তায় দু’জনের উপর। আমি এবং পত্রিকার সহকারী সম্পাদক রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনকার যুগে একটু খুঁজলে স্টারেদের ফোন নম্বর পাওয়া যেত। মিঠুনের ফোন নম্বরও পেতে অসুবিধা হল না। মুম্বইয়ে (তখনকার বম্বে) ফোন করে মিঠুনের সঙ্গে কথা হল। তিনি বললেন, ‘চলে আসুন।’ আমরা হাজির হলাম জাদুনগরে।
ফিল্মসিটিতে মিঠুনের শ্যুটিং। আমরা পৌঁছে গেলাম আগেই। মিঠুনের আসতে মিনিট ২০ দেরি হল। এটা সেই সময়ের কথা, যখন রঞ্জনদা স্কটিশচার্চ কলেছে ইংরেজি পড়াতেন। তথ্যটা এই কারণেই গুরুত্বপূর্ণ কারণ অনেকেই জানেন, মিঠুন ওই কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্র। তবে কি না, রঞ্জনদা তার আগেই বলে দিয়েছিলেন, উনি কস্মিনকালেও মিঠুনকে কলেজে বা ক্লাসে দেখেননি। যাই হোক, মিঠুন এলেন। হলুদ রঙের স্পোর্টস অ্যাটায়ার। হলুদ প্যান্ট। হলুদ জামা। আমি এগিয়ে গিয়ে পরিচয় দিলাম। বললাম, কলকাতা থেকে আসছি। মিঠুন বললেন, একটা মারপিটের দৃশ্যের শ্যুটিং আছে, একটু অপেক্ষা করতে হবে।
এই সুযোগেই রঞ্জনদার পরিচয়টাও দিয়ে দিলাম। বললাম, আপনার কলেজের অধ্যাপক। ততকালীন বলিউডের সুপারস্টার এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে ঢিপ করে একটা প্রণাম ঠুঁকে দিলেন রঞ্জনদার পায়ে। চারপাশের সবাইকে বিস্মিত করে দিয়ে বললেন, ‘ও স্যার, আপনাকে চিনতে পারিনি।’ এদিক ওদিক দাঁড়িয়ে থাকা কলাকুশলীরা অবাক বলিউড তারকার এহেন ‘মাটি ছোঁয়া’ আচরণে। এই আমার মিঠুনের সঙ্গে প্রথম আলাপ।
মিনিট ১৫ ধরে চলল মারপিটের দৃশ্যের শ্যুটিং। কাজ শেষ করে ফের হাজির মিঠুন। বললেন, এর পরে আরও একটা শ্যুটিং আছে। সেখানে যেতে হবে। মাঝে যেন আমরা ওঁর সঙ্গে দুপুরের খাবারটা খেয়ে নিই। খাওয়াদাওয়া হল। তার পরে ওঁর গাড়িতেই আমরা রওনা হলাম পরের শ্যুটিং স্পটের দিকে।
যাওয়ার পথে আর এক কাণ্ড। আমি ঝট করে বসে গিয়েছি সামনের সিটে। রঞ্জনদা পিছনে। তাতে মিঠুন বললেন, ‘এই রে অনিরুদ্ধ, সামনে বসলেন!’ আমি জানতে চাইলাম কোনও সমস্যা আছে কি না। তাতে কিছুটা উদ্বেগ লক্ষ্য করলাম মিঠুনের গলায়। বললেন, ‘থাক, বসেই যখন পড়েছেন।’ বিষয়টা কোন দিকে এগোচ্ছে, তা তখনও বুঝিনি।
(আরও পড়ুন: ডিস্কো ড্যান্সার থেকে ফাটাকেষ্ট-শাস্ত্রী হয়ে ওঠার সফর, দেখুন মিঠুনের অদেখা ছবি)
গাড়ি ছাড়ল। মিঠুন বললেন, ‘এতটা রাস্তা! একটু গান শোনা যাক।’ এই বলে একটা ক্যাসেট বাড়িয়ে দিলেন চালকের দিকে। গান শুরু হল। অদ্ভুত গান। বাংলা ভাষায় গান। কিন্তু এমন গান জম্মে শুনিনি। আমি অবাক হয়ে বললাম, ‘এটা কার গলা?’
মিঠুন বললেন, ‘কেন, আমারই গলা!’
- ‘আপনি গান গেয়েছেন?’
- ‘হ্যাঁ, ভালো হয়নি?’
- ‘তা তো হয়েছেই। কিন্তু আপনি যে গান রেকর্ড করেছেন, তা তো জানতাম না।’
- ‘এই প্রথমবার করলাম। আসছে পুজোয় বাজারে ছাড়ব।’
সেই রেকর্ড বাজারে এসেছিল কি না, আমি জানি না। মিঠুনও আর কখনও গান রেকর্ড করেছেন কি না, আমি জানি না। কিন্তু বাতানুকুল গাড়ির ভিতরে সেই দুপুরে যে ‘মাহল’ তৈরি হয়েছিল, তা আজও ভোলার নয়।
মিঠুনের গান ছেদ পড়ল, তাঁর নিজের কথাতেই।
_- ‘ও একটা কথা, যেখানে শ্যুটিংয়ে যাচ্ছি, ওখানে আমার নায়িকা রেখা।’
- ‘ও মা, তাই নাকি!’
- ‘হ্যাঁ, ওঁর সঙ্গে কিন্তু আমার টকিং টার্ম নেই।’
- ‘সে কী! কেন?’
- ‘আমার সঙ্গে শ্রী’র একটা সম্পর্ক ছিল জানেন তো?’
- ‘হ্যাঁ, সেটা তো শুনেছি।’
মুহূর্তে বদলে গেল পরিবেশ। বদলে গেল বলিউড সুপারস্টারের গলা। এত ক্ষণে গলায় যে সম্ভ্রম, যে শ্রদ্ধামিশ্রিত দূরত্ব ছিল, তা আরব সাগরে জলাঞ্জলি দিয়ে সুপারস্টার বলে উঠলেন, ‘আরে গুরু, এসব জানিস, আর এত ক্ষণ ধরে চুপ করে বসে আছিস!’
১৯৮৮ সালের সেই প্রথম আলাপের দিন থেকেই মিঠুনের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা হয়ে দাঁড়াল ‘তুই-তুকারি’র। যা আজও বদলায়নি। আমি মৃদু হেসে বললাম, ‘কানে তো সবই আসে। আপনি এত বড় স্টার!’
একগাল হেসে মিঠুন বললেন, ‘এই দেখো, ‘আপনি’ আবার কী রে ব্যাটা! ‘তুই’ করে বল!’
আমিও বললাম, ‘হ্যাঁ, এই আপনি-আজ্ঞে-টা সরিয়ে রেখে কথা বলাই ভালো।’
মিঠুনের থেকে এর পরে শুনলাম, রেখার সঙ্গে ওঁর ‘কুসম্পর্ক’-এর কারণ। সেটা এই পর্বে না লিখে পরের পর্বের জন্য তোলা থাক। আপাতত মনোনিবেশ করা যাক শিল্পী এবং অভিনেতা মিঠুনের মূল্যায়ণে, যিনি পেলেন দাদাসাহেব ফালকে সম্মান।
গাড়ি স্টুডিয়োর সামনে থামল। টের পেলাম, সামনের সিট নিয়ে সন্দেহের কারণ। মিঠুনের এই গাড়িটা ছিল এমন একটি মডেলের, যাতে পিছনের সিটের যাত্রীদের গাড়ি থেকে নামার জন্য সামনের সিটের যাত্রীকে আগে গাড়ি থেকে নামতে হয়। তার পরে সিটটা তুলে দিলে পিছনের সিটের যাত্রীরা বেরোতে পারেন। গাড়ি থামল। দরজা খুলে আমি নামতেই বিপুল জনতার ঢেউ আছড়ে পড়ল আমার উপর। কয়েকটা মালাও এসে পড়ল গলায়। আর তার সঙ্গে কলরব, ‘দাদা, দাদা, দাদা...’
কিন্তু কয়েক মুহূর্তে ‘পাগল’ জনতা টের পেল, এই দাদা সেই দাদা নয়। নিমেষে ছত্রভঙ্গ হয়ে যে যাঁর মতো ছড়িয়ে গেলেন। পিছনের সিট থেকে মুখ বার করে একগাল হেসে মিঠুন বললেন, ‘কী! আগেই বলেছিলাম।’
রেখার সঙ্গে শ্যুটিং শুরু হল। দু’জনে কোনও কথা বললেন না। একটি দৃশ্যে রেখার হাত ধরে ঝাঁপ দিয়ে কাচ ভেঙে মিঠুন বাইরে এলেন। দু’-চার জন দুশমনকে ধোলাইও বোধহয় দিলেন। ক্যামেরার সামনে ভয়াতুরা কপোতীর মতো রেখা হয়তো মিঠুনের দিকে দৃকপাতও করলেন। কিন্তু ক্যামেরা কাট বলতেই যেন দুটো সম্পূর্ণ অচেনা মানুষ।
যাই হোক, শ্যুটিং শেষ হল। রঞ্জনদা এবার মিঠুনকে বললেন, আমরা বাঙালি পোশাকে, মানে ধুতি-পাঞ্জাবি পরিয়ে তাঁর ছবি তুলতে চাই। ক্যামেরা রঞ্জনদার সঙ্গেই ছিল। কিন্তু ছবি তোলা হবে কোথায়?
(আরও পড়ুন: দাদাসাহেব ফালকে পেতেই মহাগুরুর 'নম্রতা'র ঝলক পোস্ট বিজেপির অমিত মালব্যর! পুরোনো ভিডিয়োতে কী বলেছিলেন মিঠুন?)
মিঠুন বললেন, পরের দিন মাড আইল্যান্ডে তাঁর ফার্ম হাউসে যেতে। জানতে চাইলেন, আমরা কোন হোটেলে উঠেছি। সেই আমলে সংবাদমাধ্যমের হাতে বিরাট টাকা ছিল, তা নয়। আমরা উঠেছিলাম, বেশ সস্তার একটা হোটেলে। কিন্তু রঞ্জনদাও রসিক লোক। তিনিও ফট করে একটা দামি পাঁচ তারা হোটেলের নাম বলেদিলেন। মিঠুন বললেন, ‘বেশ, ওই কথাই রইল। কাল সকাল ৯টায় আমার গাড়ি তোদের তুলে নেবে।’
সন্ধ্যায় আমরা আমাদের সস্তা হোটেল থেকে চেকআউট করলাম। এবং সেই দামি হোটেলে চেকইন করলাম। রঞ্জনদা স্বভাব গাম্ভীর্য নিয়ে বললেন, ‘একটু বেশি খরচ হয়ে গেল অনিরুদ্ধ। কিন্তু আমাদেরও তো সম্মান আছে।’
পরদিন নির্দিষ্ট সময়ে গাড়ি। আমাদের নিয়ে হাজির করল মাড আইল্যান্ডে মিঠুনের ফার্ম হাউসে। মিঠুন নিজে ধুতি-পাঞ্জাবি পরে তৈরি হলেন। রঞ্জনদা ছবি তুললেন। গোটা দিনটা কেটে গেল ওঁর সঙ্গে।
এই ভাবেই শুরু। এর পরে মিঠুনের সঙ্গে বহু বার দেখা হয়েছে। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর ‘কালপুরুষ’ ছবিতে আমি অভিনয় করেছিলাম। সেই ছবির অন্যতম প্রধান চরিত্রেও ছিল মিঠুন। মানে, একই সঙ্গে একজন সুপারস্টার এবং একজন অভিনেতাকে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পেয়েছি আমি। প্রথম পর্বের এই লেখায় যেহেতু অভিনেতা মিঠুনের মূল্যায়ন করতে বসেছি, তাই সুপারস্টারের বিষয়টি পরের কোনও পর্বের জন্য তোলা থাক। আপাতত অভিনেতা মিঠুনের কথায় আসা যাক।
মিঠুন তিন বার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। পার্শ্ব চরিত্রের অভিনেতা হিসাবে ‘স্বামী বিবেকানন্দ’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য। সেই ছবিতে উনি রামকৃষ্ণদেবের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। আর ‘মৃগয়া’ ও ‘তাহাদের কথা’ ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের জন্য। এই ছবিগুলিতে তিনি কেমন কাজ করেছিলেন, সে কথা এখন আলোচনা করার দরকার নেই। সেই সময়ে মিঠুনের রাজনৈতিক অবস্থানও তাঁকে আলাদা করে কোনও সুবিধা পাইয়ে দেয়নি। ফলে চলচ্চিত্রে তাঁর অবদান প্রশ্নাতীত।
এবার আসা যাক ‘ডিসকো ডান্সার’ ছবির মিঠুনের কথায়। এই ছবি প্রথম এমন এক বাঙালিকে তুলে ধরেছিল গোটা দেশের সামনে, যিনি নাচতে জানতেন। এর আগেও বিশ্বজিতের মতো বাঙালি তারকা বলিউডে সাফল্য পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি নাচতে জানতেন না। বলিউড প্রথম বার মিঠুনকে দেখে টের পেয়েছিল, বাঙালিও নাচতে জানে। আগে বলিউডের ডানসিং স্টার বলতে লোকে বুঝত জিতেন্দ্রকে। সেই জুতোয় পা গলিয়ে ফেললেন মিঠুন। মিঠুনের পরে যে ঘরানা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন গোবিন্দা। সেই হিসাবে দেখতে গেলে, বেশ কয়েক দশক জনপ্রিয় এক ঘরানা এগিয়ে গিয়েছে শুধু মিঠুনের একার ঘাড়ে চেপেই। সেই কারণেই তিনি হিমালয় টু কন্যাকুমারীর তারকা হয়ে উঠেছিলেন।
নিজের কেরিয়ারে কখনও মিঠুন বলিউডের ‘এক নম্বর’ স্টার হতে পারেননি। কখনও রাজেশ খান্না, কখনও অমিতাভ বচ্চনের পিছনে থেকে গিয়েছেন। এর কারণ কী? প্রথমত, রাজেশ খান্না বা অমিতাভ বচ্চনের মতো স্ক্রিন প্রেজেন্স তাঁর ছিল না। হয়তো নাগরিক সমাজেও মিঠুনের মতো তারকার গ্রহণযোগ্যতা খুব কমই ছিল। তবু মিঠুন হয়ে উঠেছিলেন বিশেষ সম্প্রদায়ের তারকা।
পুজো এসে গিয়েছে। পুজোর মরশুমের শুরুটাই হয় বিশ্বকর্মার পুজো দিয়ে। পাড়ায় পাড়ায় রিকশা স্ট্যান্ডে যে পুজো বোধহয় সবচেয়ে ধুমধাম করে পালন করা হত আশি এবং নব্বইয়ের দশকে। তথাকথিত শিক্ষিত ভদ্রসম্প্রদায় এক সময়ে যে আর্থসামাজিক শ্রেণিকে ‘রিকশাওয়ালা ক্লাস’ বলে দাগিয়ে দিত, সেই শ্রেণির কাছেই বলিউডের সৌজন্যে মিঠুন হয়ে উঠেছিলেন সুপারস্টার। পুজোর মরশুমের শুরুতে তাই পাড়া দখল করে নিত মিঠুনের ছবির গান। বাপ্পি লাহিড়ির গান। সারা ভারতের সেই সব অলিগলিতে মৃণাল সেন, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর সিনেমা নেই, সেখানে দাঁডি়য়ে ‘ফুল অউর অঙ্গার’, ‘প্রেম প্রতিজ্ঞা’, ‘পেয়ার ঝুকতা নেহি’। সেখানে দাঁড়িয়ে ‘ডিসকো ডান্সার’।
কে এই মিঠুন? এই মিঠুন কোনও রাগী যুব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি নন, এই মিঠুন কোনও স্যুট-বুট পরা ‘ভ্দ্র-শিক্ষিত’ পুরুষের প্রতিনিধি নন, এই মিঠুন বইয়ের পাতার ফাঁকে শুকনো ফুল লুকিয়ে রাখা কোনও রোম্যান্টিক কিশোরের প্রতিনিধি নন। এই মিঠুন আসলে এক লুম্পেন শ্রেণির প্রতিনিধি। রাগ-ভদ্রতা-শিক্ষা-রোম্যান্টিসিজম, সব কিছুই হয়তো সেই ইমেজের মধ্যে মিশে আছে খিচুড়ি হয়ে, কিন্তু তার সঙ্গে আর যা আছে, তা হল এক অদ্ভুত রনেস (Rawness) বা কাঁচাপনা, যেখানে শৌখিনতার কোনও আবরণ নেই। সেই মিঠুনকে নিয়েই উত্তাল ছিল গোটা দেশ।
গোড়ার কথায় ফিরে আসা যাক। মিঠুন কি এই সম্মানের যোগ্য? দাদাসাহেব ফালকে দেওয়া হয়েছে, চলচ্চিত্রে তাঁর অবদানের জন্য। তাঁর অবদান কী, এত কিছুর পরে সেই আলোচনা বৃথা। ‘ডিসকো ডান্সার’-এর অনিল ‘তাহাদের কথা’য় এসে মেঘলা বিকেলে এক রেলগাড়িতে হাতকড়া পরে বসে এবং বিড়বিড় করে বলে, ‘ঠান্ডা লাগে, বড় ঠান্ডা লাগে’। যবনিকা নেমে আসে। কিন্তু চলচ্চিত্রে অভিনেতা মিঠুনের অবদান আরও দীর্ঘায়িত হয়। হলুদ স্পোর্টস অ্যাটায়ারই হোক, কিংবা নোংরা কমলা শাল গায়েই হোক, সেই সুপারস্টার ঢিপ করে প্রণাম করেন। শুধু মাস্টারমশাইয়ের পায়ে হাত দিয়ে নয়, সারা ভারতের খেটে খাওয়া লুম্পেন ক্লাসের পায়ে হাত দিয়ে।
(চলবে)
(সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে অনুলিখন)