অশান্ত বাংলাদেশ। সেদেশে চলছে হিন্দুদের উপর অত্যাচার। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর থেকেই ক্রমাগত উত্তাল হয়েছে সেদেশের পরিস্থিতি। সেদেশের সাম্প্রদায়িক অশান্তির আঁচ লেগেছে এপার বাংলা ও ত্রিপুরাতেও। এরই মাঝে সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিলেন সঙ্গীতশিল্পী মহীতোষ তালুকদার তাপস। দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও ভারতের পারস্পরিক বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখার বার্তা দিলেন তিনি।
৩ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার নিজের ফেসবুকের পাতায় 'ও মোদের দেশবাসী রে' খালি গলায় গেয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্ব বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন শিল্পী।মহীতোষ তালুকদার তাপসকে ভিডিয়ো বার্তায় বলতে শোনা যায়, ‘বন্ধুরা চলুন আমরা বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে বন্ধুত্ব বজায় রাখি। আমরা সবাই মিলে সাম্প্রদায়িকতা রুখে দিই। মানুষের জয় হোক, মানবতার জয় হোক। আমি মহীতোষ তালুকদার তাপস বলছি বস্টন থেকে, জীবন সুন্দর, আনন্দম।’
এই ভিডিয়োর সঙ্গে বাংলাদেশের বংশোদ্ভূত এই শিল্পী লেখেন, 'বন্ধুরা, চলুন সবাই মিলে সাম্প্রদায়িকতা রুখে দিই। বাংলাদেশ ও ভারতের পারস্পরিক বন্ধুত্ব টিকে থাকুক। প্রতিবেশী দুইদেশের মানুষ শান্তিতে বসবাস করুক। আজ থেকে ঠিক ৭৫ বছর আছে শ্রদ্ধেয় সলিল চৌধুরী এই গানটি লিখেছিলেন, সুর দিয়েছিলেন। আজকের দিনেও কতটা প্রাসঙ্গিক এই গান। সলিলদা'র জন্মশতবর্ষে আবারও তাঁকে প্রণাম জানাই, জানাই সেলাম। শান্তির জয় হোক। মানুষের জয় হোক। মানবতার জয় হোক। জীবন সুন্দর, আনন্দম।'
আরও পড়ুন-নিখোঁজ কমেডিয়ান সুনীল পাল, পুলিশের দ্বারস্থ শিল্পীর স্ত্রী, শুরু হয়েছে তদন্ত
তাঁর এই পোস্টের নিচে সহমত প্রকাশ করেছেন বহু নেট নাগরিক। একজন তাঁর গাওয়া গানে কথা ধরে লিখেছেন, ‘কালো নদী পার হতেই হবে।’ আরও একজন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের পারস্পরিক সম্পর্ক অটুট থাকুক সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হোক মানবতার জয় হোক জীবন সুন্দর আনন্দময় হোক’। তবে এরই মাঝে একজন দ্বিমত প্রকাশ করে লেখেন, ‘জাতীয় পতাকাকে অপমান করার মতো, জঘন্য কাজ করেছে, বাংলাদেশের মানুষ,, কিভাবে ভালো সম্পর্ক হবে? মানবতা থাকলে মানবিকতার জয় হবেই,, আসুন মানববন্ধন করি।’
তবে আরও একজন লেখেন, ‘গানে গানে ভালো ভাবনা দিয়ে আমরা মানবিকতার জয়গান গাই। মনুষ্যত্ব জাগ্রত হোক সকলের মধ্যে…হিন্দু নয়, মুসলমান নয়,আমাদের পরিচয় আমরা মানুষ।’
কিন্তু কে এই মহীতোষ তালুকদার তাপস?
তিনি একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভত শিল্পী। তাঁর জন্ম বাংলাদেশের ময়মনসিংহে, তবে বর্তমানে তিনি আমেরিকার বাসিন্দা। তাঁর বাবা চাকরি সূত্রে আমেরিকায় চলে যান। এরপর থেকে তিনি ৩২ বছর ধরে মার্কিন মুলুকেই রয়েছেন। আমেরিকার রোড আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের প্রভিডেন্স শহরের মেয়রের হিসাবরক্ষক পদে চাকরি করেন মহীতোষ । তবে এত বছর ধরে বিদেশে থাকলেওবাংলা ভাষা এবং বাংলা গান ভুলতে পারেননি তিনি।
মাত্র ৭ বছর বয়স থেকেই তাঁর মায়ের কাছে গান শিখতে শুরু করেন মহীতোষবাবু । পরবর্তীতে ২০০৩ সাল থেকে ফের তাঁর গানের চর্চা করার ইচ্ছে হয় । আমেরিকা প্রবাসী বাঙালি বন্ধুদের জোট বাঁধেন তিনি। প্রবাসী বাঙালিদের নিয়েই শুরু করেন বাংলা গানের রেওয়াজ।