আজ ভারতীয় ক্রিকেটের ক্যাপ্টেন কুল মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্মদিন। তবে ধোনির নাম উচ্চারণ করলেই আরও একটা নাম ভারতীয়দের মনের পাতায় পরিষ্কার ফুটে উঠে তিনি সুশান্ত সিং রাজপুত। যিনি রুপোলি পর্দায় জীবন্ত করে তুলেছিলেন মাহিকে। ধোনির ম্যানারিজম থেকে তাঁর হেলিকপ্টার শট-নিঁখুতভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত! যাঁর মৃত্যুর খবরে গত তিন সপ্তাহ ধরে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। স্মৃতির পাতায় বারেবারে ফিরে আসছেন যিনি।
২০১৬ সালে মুক্তি পেয়েছিল পরিচালক নীরজ পাণ্ডের ছবি এম এস ধোনি:দ্য আনটোল্ড স্টোরি। এই ছবির প্রস্তুতিতে জান লড়িয়ে দিয়েছিলেন সুশান্ত। যে ছেলেটা স্কুলের ক্রিকেট টিমেও নিয়মিত জায়গা পেত না-তাঁর পক্ষে ধোনির প্রতিবিম্ব হয়ে উঠা সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু সহজ পথের পথিক ছিলেন না সুশান্ত সিং রাজপুত। তাঁর মাত্র সাত বছর দীর্ঘ ফিল্ম কেরিয়ার সেকথাই বলে। ধোনি হয়ে উঠতে কড়া প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন সুশান্ত।
এম এস ধোনি:দ্য আনটোল্ড স্টোরির ট্রেলার লঞ্চে সাংবাদিকরা ধোনিকে প্রশ্ন করেছিলেন বায়োপিক নিয়ে কতটা নাভার্স তিনি? স্বমহিমায় ধোনি বল ঠেলে দিয়েছিলেন সুশান্তের কোর্টে। বলেছিলেন, সুশান্ত আমার চেয়ে বেশি নার্ভাস কারণ ওকে ফুটিয়ে তুলতে হবে আমার ভিতর কোনসময় ঠিক কী চলছিল,দর্শককে সেটা বিশ্বাস করাতে হবে। আর সেটা করতে গিয়ে সত্যি বলছি আমাকে জ্বালিয়ে খেয়েছে ও। আমি ওই সময় কী ভাবছিলাম, ওই মুহূর্তটায় কী ফিল করছিলাম..বাপ রে! আমি তো বলেই ফেলেছিলাম.. ভাই তুই এত প্রশ্ন কেন করিস? বাস্তবকে কিন্তু আমরা প্রয়োজনের চেয়ে কম সময় কাটিয়েছি'। সুশান্ত বলেন,'আমি একবারই এমএসকে ওর কুল হারাতে দেখেছি। প্রথম দু,তিন দিন যখন আমি ছিলাম ওঁনার সঙ্গে মাহি খুব শান্তভাবে,স্থিরভাবে সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন। তবে তারপর বলল,তুই বড্ড প্রশ্ন করছি,আমি দু মিনিটে আসছি'। নিজের ডিফেন্সে মাহি বলে উঠেন, ‘একই প্রশ্ন ও বিভিন্নভাবে করত, প্রথমে একভাবে তারপর অন্যভাবে, নিজের সম্পর্কে কথা বলা দীর্ঘক্ষণ ধরে..সম্ভব মানুষের পক্ষে, অদ্ভুত লাগত’।
ধোনি ট্রেলার লঞ্চের মঞ্চে আরও যোগ করেন, যে পরিশ্রমটা এই ছবির জন্য ও করেছে তা সত্যি কুর্নিশযোগ্য। ছবির সবচেয়ে জরুরি অংশ ছিল ক্রিকেট। আমরা সবাই ক্রিকেট খেলি কিন্তু পর্দায় সেটা যথার্থভাবে ফুটিয়ে তুলতে কিছু জিনিস রপ্ত করতে হয়,বিশেষত ক্রিকেটের শট। ছবিতে ও হেলিকপ্টার শট মেরেছে, আর হ্যাঁ, ওটা একদম আমার রেপ্লিকা'।
সুশান্ত সেই সময় বলেছিলেন চাপে নয় এই ছবি নিয়ে এক্সাইটেড বেশি ছিলেন। ‘২০০৬ সালে আমি ধোনির সঙ্গে একটা ছবি তুলেছিলাম। কিছু ছবি হয় যেখানে অভিনয় করলে তুমি একজন ভালো অভিনতো হয়ে উঠ। তবে খুব কম ছবি হয় যার অংশ হতে তুমি একজন ভালো মানুষ হয়ে উঠ। এটা সেই ছবি’। দিল বেচারার ম্যানি আরও যোগ করেছিলাম, 'আমার সবাই নয় অতীতকে আঁকড়ে ধরে থাকি, নয়ত ভবিষ্যতের চিন্তা করি। কিন্তু তুমি বর্তমানকে নিয়ে বাঁচ, সবকিছু খোলা চোখে দেখ এবং সেটা উপলব্ধি করো, সেটা দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা।