পয়লা বৈশাখ মানেই হালখাতা, নতুন জামা আর জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া আর আড্ডা। শত ব্যস্ততার মধ্যে বাঙালি নববর্ষে এই রুটিনে সামন্য হেরফের হলেও কোনও না কোনও অনুসঙ্গ জুড়ে থাকবেই আজকের রোজনামচায়। বাইরে একদিকে যেমন করোনার প্রকোপ বাড়ছে, তেমনই চড়চড়িয়ে বাড়ছে গরমও। তবে একুশের বিধানসভা ভোটকে ঘিরেও উত্তাপের পারদ চড়ছে। নির্বাচনী ব্যস্ততা তুঙ্গে, তাই এই বছর কী সত্যি আড্ডা বা জমিয়ে খাওয়া-দাওয়ার সময় রয়েছে তারকা প্রার্থীদের হাতে?
আজকের এই দিনে ঠিক কীভাবে সময় কাটাচ্ছেন যশ দাশগুপ্ত, রাজ চক্রবর্তী, সায়নী ঘোষরা? এক সাক্ষাত্কারে চণ্ডীতলার বিজেপি প্রার্থী যশ জানিয়েছেন, ‘অন্যবারের মতো বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তরাঁয় গিয়ে জমিয়ে খাওয়া সম্ভব নয়। যদিও আমার কেন্দ্রের নির্বাচন শেষ, কিন্তু দলের অন্য প্রার্থীদের প্রচারে রাতদিন ব্যস্ত। ২ মে পর্যন্ত সেলিব্রেশন তুলে রেখেছি’। প্রচারের কাজে বছরের প্রথম দিনই খুব সম্ভবত কলকাতার বাইরে যাচ্ছেন যশ। অগত্যা এবার আড্ডা-খাওয়া-দাওয়া বাদ!
আগামী দিন সকলের জন্য সুস্থ ও সুন্দর হোক এই কামনা জানালেন রাজ চক্রবর্তী। তবে সামনে তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রে ভোট। তাই চরম ব্যস্ত তিনি। ছেলের জন্মের পর এটাই প্রথম পয়লা বৈশাখ, তবে আজকের দিনে শুভশ্রী বা ইউভানকে নিয়ে কোনও প্ল্যান নেই কারণ তিনি ব্যস্ত থাকবেন টিটাগড়ে প্রচারের কাজে, সঙ্গী দুই তৃণমূল প্রার্থী কাঞ্চন মল্লিক ও সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রচারের কাজে ব্যস্ত থাকলেও ছেলের জন্য পয়লা বৈশাখ স্পেশ্যাল শপিংটা ফাঁকতালে সেরে রেখেছেন কাঞ্চন মল্লিক।
শ্যামপুরের ভোট শেষ, আজকের দিনে নিজের জন্য কিছুটা সময় বার করেছেন তনুশ্রী। তবে দলের অন্য প্রার্থীদের হয়ে প্রচার সারবেন তিনিও। বাইরে গিয়ে খাওয়া-দাওয়ার সুযোগ না থাকলেও এই বিজেপি প্রার্থীর বাড়িতে এদিন পুরোদস্তুর বাঙালি রান্নাবান্না। মেনুতে রয়েছে- বাসন্তী পোলাও,মাছের কালিয়া, আমের চাটনি সঙ্গে মিষ্টি দই। অন্যদিকে সোনারপুর দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী লাভলি মিত্র মেয়ের জন্য নতুন জামা কিনেছেন। ইচ্ছা আছে স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে রাতে কোনও বাঙালি রেঁস্তোরায় নৈশভোজ সারবার, তবে সেটা নিশ্চিত নয়।
দলীয় সদস্যদের সঙ্গে বছরের প্রথম দিনটা কাটাবেন বরাহনগের বিজেপি প্রার্থী পার্নো মিত্র। তবে করোনার জেরে কোনও সেলিব্রেশন ছাড়াই উদযাপন করবেন এই দিনটা। অন্যভাবে এই বাংলা বছরকে স্বাগত জানাচ্ছেন আসানসোল দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ। এদিন বার্নপুরে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের ছেলেমেয়েদের নববর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন সায়নী।
বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষ আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, ‘আমার নির্বাচন কেন্দ্র ভবানীপুর হওয়ায় মিশ্র সংস্কৃতির মানুষদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। এখানে নববর্ষটা কেবল বাঙালির নয়, নানা প্রদেশের’। সোনারপুরের
নববর্ষটা যেমনভাবেই কাটুক না কেন, তারকাপ্রার্থীদের সেলিব্রেশন কিন্তু ২-রা মে'র জন্য তোলা থাকছে। ওই দিন ভোটের রেজাল্ট প্রকাশ্যে আসরবার পর ক'জনের সেলিব্রেশনের সৌভাগ্য হয়, সেটা এখন দেখবার।