স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে নতুন স্বাধীনতার খোঁজে বাংলার মেয়েরা। বুধবার রাত জমায়েতের ডাক দিয়েছে তাঁরা। আরজি কর-এর নির্যাতিতা তরুণীর সুবিচার চেয়ে তথা সর্বস্তরে মেয়েদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা-সহ নির্দিষ্ট দাবিদাওয়া নিয়ে সরব তাঁরা। আরও পড়ুন-'বিদ্রোহী' গায়করা চুপ? আপনারা মৃত...জানেন?' নাম না করে নচিকেতাকে খোঁচা অনিন্দ্যর?
আর জি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে নারকীয়ভাবে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল গোটা দেশ। তিনিও এক কন্যা সন্তানের বাবা। তবে আরজি করের ঘটনায় এতদিন আশ্চর্যজনকভাবে চুপ ছিলেন ‘বিদ্রোহী গায়ক’ নচিকেতা চক্রবর্তী। সেই নিয়ে নানামহল থেকে কটাক্ষও উড়ে এসেছে। মঙ্গলবার বিকালেই গায়ক অনিন্দ্য বসু নাম না করেই নচিকেতাকে খোঁচা দিয়ে লিখেছিলেন,'বুদ্ধিজীবিরা' চুপ 'বিদ্রোহী'গায়করা?….আপনারা মৃত...জানেন?'
বুধবার ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন গায়ক। সেখানে নিজের লেখা কবিতা পাঠ করলেন সঙ্গীতশিল্পী। ফের একবার প্রতিবাদের আগুন ঠিকরে পড়ল তাঁর কলমে। তাঁর আর্জি মা দূর্গা যেন এইবার মর্ত্যে না ফেরেন। কারণ জ্যান্ত উমাদেরই তো আমরা রক্ষা করতে পারছি না! তাঁর প্রশ্ন, মৃণ্ময়ী রূপের মা-কে লাখ লাখ টাকার বসনে সাজিয়ে কী লাভ যদি আমরা মেয়েদের বসন কেড়ে নিই?
নচিকেতা পাঠ করে চলেন, ‘মা তুমি এসো না, মা দুর্গা তুমি এসো না। এই পৃথিবী আমাদেরই বাসযোগ্য নেই, তোমার হবে কী করে? এখানে ধর্ষিত হয় মানবতা, মানুষ হারিয়ে গভীরতা, নারী সম্মান পথের ধুলোয়, প্রহসন নারী স্বাধীনতা!’
এরপর লেখা- 'মা তুমি এসো না,মা তুমি এসো না… পারব না দিতে সম্মান। মেয়েকই দিতে পারিনি! মা এসো না। লক্ষ টাকা খরচ করে তোমায় সাজাই, আরও কত লক্ষ টাকার বসন-ভূষণ। এদিকে আমার মেয়ে বসনহীন হাসপাতালে, আকাশ-বাতাস কালো করে ঘৃণার দূষণ। মা তুমি এসো না…এই বিচারবিহীন পৃথিবীতে। তুমি এসোই না…'।
গত শুক্রবার ভোররাতে আরজি কর হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী কর্তব্যরত অবস্থায় হাসপাতালের সেমিনার রুমেই নারকীয় যৌন নির্যাতনের শিকার হয়, এরপর তাঁকে হত্যা করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে এসেছে হাড়হিম করা তথ্য। তরুণী চিকিৎসকের গলার একটি হাড় ভাঙা। অনুমান গলা টিপে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ওই তরুণীকে। তাঁর যৌনঙ্গে মিলেছে গভীর ক্ষত।
মঙ্গলবারই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি কর মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে গিয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে সিবিআইকে তদন্তভার হস্তান্তর করেছে কলকাতা পুলিশ। আর আদালতের নির্দেশ পেয়েই এই ঘটনায় কোমর বেঁধে নেমেছে সিবিআই। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে হেফাজতে নিয়েছে তারা। সঞ্জয় রায় কি একাই এই নৃশংস ঘটনার পিছনে রয়েছে? ধর্ষণের ছক কি আগেই কষা হয়েছিল? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে নির্যাতিতার পরিবার-সহ গোটা বাংলা।