আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক তরুণীর খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় আম জনতার পাশাপাশি টলিউড তারকাদের একটা বড় অংশ প্রকাশ্য়ে মুখ খুলেছেন। মিছিলে হেঁটেছেন, কেউ কবিতা লিখেছেন আবার কেউ গান বেঁধেছেন। এই সবের মাঝে হাতেগোনা বেশ কিছু তারকাকে ট্রোলের মুখেও পড়তে হয়েছে। যার অন্যতম নচিকেতা চক্রবর্তী। এমন নয়, এই ইস্যুতে নীরব থেকেছেন নচিকেতা। তবুও অনর্গল কটাক্ষে বিদ্ধ গায়ক। আরও পড়ুন-‘আমার মেয়ে বসনহীন হাসপাতালে…’, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে সরব ‘মহানায়ক’ নচিকেতা
গত ১৪ অগস্ট আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে ফেসবুকে নিজের লেখা একটি কবিতা পাঠ করেছিলেন নচিকেতা। ‘বুদ্ধিজীবী গায়ক’দের কটাক্ষ করেছিলেন গায়ক অনিন্দ্য বসু, তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভিডিয়ো পোস্ট করেন নচিকেতা। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘মা তুমি এসো না’ শীর্ষক কবিতা। কিন্তু তাতেও থামেনি ট্রোলপুলিশরা। বরং সময় যত গড়িয়েছে ‘মহানায়ক’ নচিকেতাকে নিয়ে কটাক্ষের বহর আরও ফুলে ফেঁপে উঠেছে।
এই প্রসঙ্গে তিনি আনন্দবাজারকে কষ্টের কথা জানালেন। গায়ক বলেন, ‘প্রথম প্রতিবাদ তো আমিই করেছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি কারুর পক্ষ না নিয়ে প্রতিবাদ করলে ট্রোলিং শুরু হবে’। কেন রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন না, এই প্রশ্নে জর্জরিত নচিকেতা, যা তাঁর কাছে অকল্পনীয়। গায়কের মতে, কোনও ব্যক্তির প্রতিবাদের ভাষা কেমন হবে, তা তাঁর ব্যক্তিগত। কিন্তু বাঙালির এমন চেহারা আগে কখনও দেখেননি নচিকেতা।
সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় বিরোধী দলনেত্রী মমতার সমর্থনে পথে নেমেছিলেন নচিকেতা। অতীত হাতড়ে বললেন, ‘এত বছরে রাস্তায় নেমে আমার সারা শরীরে ধুলো জমে গিয়েছে। এখন বয়স হয়েছে।’ তবে পথে নামলেও সেলেবরা রেহাই পাননি। অপর্ণা সেনের প্রসঙ্গ টেনে জানালেন ‘বৃদ্ধাশ্রম’ গায়ক। আরজি কর ইস্যুতে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদকে সাবুধাদ জানালেও প্রতিবাদ আন্দোলনে রাজনীতি ঢুকে পড়ায় উষ্মা প্রকাশ করেন নচিকেতা।
তিনি আরও বলেন, ‘৩১ বছর যে বাঙালির জন্য নিজেকে সঁপে দিলাম, সেই বাঙালিই আজ আমাকে ট্রোল করছে! আমি সত্যিই দুঃখ পেয়েছি।’ আর জি করের চিকিৎসক তরুণীর খুন ও ধর্ষণের তদন্তভার এখন সিবিআইয়ের হাতে। তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে অবশ্য চুপ কেন্দ্রীয় সংস্থা। সুপ্রিম কোর্টে চলছে মামলার শুনানি। তার মাঝেও রাজ্যজুড়ে আন্দোলনের নামে হিংসা ও ভাঙচুরকে ‘লাশের রাজনীতি’ বলেই মনে করছেন নচিকেতা চক্রবর্তী।