বলিউডের দক্ষ ও অভিজ্ঞ অভিনেতা তিনি। আবার বিতর্কিত অভিনেতাও বটে। কখনও খলনায়ক, কখনও কমেডি সবেতেই তিনি পারফেক্ট। আবার তিনি ‘বদরাগী’ও বটে, এই বদনামও রয়েছে তাঁর। তবে কেন এত রেগে যান? এই রাগের কি অন্য কোনও কারণ রয়েছে? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এবিষয়েই খোলামেলা কথা বলেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা নানা পাটেকর।
সাক্ষাৎকারে নানা উল্লেখ করেছেন যে তিনি হয়ত এই মেজাজ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। আবার এমনও হতে পারে যে মায়ের থেকে অবহেলা পেয়েই হয়ত তিনি এত বদমেজাজী হয়ে উঠেছিলেন। নানার কথায়, তাঁর মা তাঁকে রোজ মারধর করতেন, অথচ সেকারণে তাঁর কখনও অনুশোচনা ছিল না। এমনকি যখন মায়ের বড় ছেলে (নানার দাদা) একটা বিল্ডিং থেকে পড়ে কৈশোরেই মারা যায়, তখনও মায়ের কোনও অনুভূতি দেখি নি।'
এখানেই শেষ নয়, মাত্র ২ বছর বয়সেই নিজের সন্তানকে হারিয়েছিলেন নানা পাটেকর। একাধিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্ম নিয়েছিল নানার সেই ছেলে। তবে এক্ষেত্রে নানা নিজের মানসিকতাকে একজন কুৎসিত বাবা হওয়ার তকমা দিয়েছেন। নানার কথায়, ‘আমার বড় ছেলে কাটা ঠোঁট, তালু ফাটা নিয়ে জন্ম নিয়েছিল। ওর এক চোখ দিয়ে দেখতেও অসুবিধা হত। তবে সেই ছেলের জন্মের পর আমি যখন ওকে প্রথমবার দেখলাম, তখন আমার মনে হয়েছিল, ‘এ-কেমন দেখতে! লোকজন একে দেখে আমায় কী বলবে! ভাবুন তাহলে আমি কী ভয়ংকর মানুষ। লোকে কী বলবে, আমার মাথায় সেই চিন্তাই প্রথম মাথায় এসেছিল।’
নানা পাটেকরের জানান, তাঁর ছেলের নাম 'ক্রুদ্ধ ঋষি', দুর্বাসা মুনির নামে রাখা হয়েছিল। নানার কথায়, ‘ও যখন মারা গেল তখন ওর বয়স আড়াই বছর। ও মৃত্যু তাঁকে অনেক কিছু শিখিয়েছিল। তবে আমি কাঁদি না, এক ফোঁটাও চোখের জল ফেলিনি, তবে আমার কষ্টটা কাউকে বুঝতে দিইনি। সেই দুঃখ ভুলতে ধূমপানে আসক্ত হয়ে পড়ি। দিনে ৬০টা সিগারেটের প্রয়োজন হত, এমকি স্নানের সময়েও সিগারেট খেতাম। তবে আমি কখনও মদ খাইনি। কারণ মনে হত দুর্গন্ধের কারণে আমার গাড়িতে কেউ বসবে না। ’
নানা বলেন, বছরের পর বছর একসঙ্গে না থাকা সত্তেও তিনি তাঁর বৃদ্ধ মায়ের জীবনযাপন যত্ন নিয়েছেন। নানার কথায়, তিনি অতীতের সব খারাপ অভ্যাসই ত্যাগ করেছেন।