বাংলা নিউজ > বায়োস্কোপ > দু'বছর আগেই ইরফান টের পেয়েছিল ওঁর মৃত্যু এগিয়ে আসছে, আমাকেও বলেছিল: নাসিরুদ্দিন

দু'বছর আগেই ইরফান টের পেয়েছিল ওঁর মৃত্যু এগিয়ে আসছে, আমাকেও বলেছিল: নাসিরুদ্দিন

একাধিক ছবিতে একসঙ্গে দেখা গেছে ইরফান ও নাসিরুদ্দিনকে। (ছবি সৌজন্যে - হিন্দুস্তান টাইমস)

সম্প্রতি, এক সাক্ষাৎকারে ইরফান খানের স্মৃতিচারণ করলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ।

২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে চিরঘুমে শায়িত হয়েছেন ইরফান খান। এই কিংবদন্তি অভিনেতার মৃত্যুর পর দেড় বছর পরেও তাঁর কথা উঠলে চোখ ভিজে ওঠে ছবিপ্রেমী দর্শকের। সম্প্রতি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরফানের স্মৃতিচারণ করলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। প্রয়াত অভিনেতার কথা বলতে গিয়ে তাঁর দাবি, তিনি যে মৃত্যুমুখী, তা নাকি বহু আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিলেন ইরফান। শুধু তাই নয়, একাধিকবার নিজের মুখে নাসিরুদ্দিনকেও একথা স্বয়ং জোর গলায় জানিয়েছিলেন তিনি!

নিউরো এন্ডোক্রিন টিউমারের সঙ্গে আপ্রাণ লড়েও জীবনযুদ্ধে হেরে গেছিলেন ইরফান। দীর্ঘ দু'বছর বিদেশে থেকে শরীরে বাসা বাঁধা এই মারণরোগের চিকিৎসা চালিয়েছিলেন তিনি। সেইসময় বহুবার নাসিরুদ্দিনের সঙ্গে তাঁর ফোনের ওপর থেকে কথা হতো। বর্ষীয়ান বলি-অভিনেতার কথায়, 'ইরফান অন্তত দু'বছর আগে থেকেই জেনে গিয়েছিলেন যে তাঁর মৃত্যুর আর বেশি দেরি নেই। অথচ কী অদ্ভুত সেই নিয়েও নিজের উপলব্ধির কথা শেয়ার করতে ছাড়েননি তিনি। আমাকে বলতো, আমি রোজ পর্যবেক্ষণ করছি, কীভাবে মৃত্যু এগিয়ে আসছে। শেষ সময় সামনে এগিয়ে আসছে জেনেও কটা লোক সুযোগ পায় এটা দেখার? আমি তো একপ্রকার মৃত্যুকে স্বাগত-ই জানাচ্ছি!' নাসিরুদ্দিন আরও বলেন, 'ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পরে নিজের হাতে যেভাবে ও গোটা বিষয়টা সামলেছিল তা সত্যিই ভীষণ শিক্ষণীয়।তবে শরীর যখন নিজে থেকে কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তখন সেটা কারও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। ওঁর চলে যাওয়াটা অপূরণীয় ক্ষতি'।

কথাশেষে নাসিরুদ্দিন যোগ করেন যে, 'মৃত্যু নিয়ে ক্রমাগত চিন্তা করাটা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয় কিংবা কাজের কথা নয়। আমার নিজের কত প্রিয় বন্ধু আজ নেই। ওম পুরি, ফারুখ শেখ-এর চলে যাওয়াটা তো আজও মেনে নিতে কষ্ট হয়। কিন্তু সেই দুঃখ নিয়ে পড়ে থাকা উচিত নয়। আমার মতে, এই জীবনে মৃত্যুকে যেমন এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই তেমন এটাও ঠিক মৃত্যু সবথেকে অপ্রয়োজনীয় একটি ব্যাপার। আমি নিজেও মৃত্যু নিয়ে একটুও ভাবিত নই। যখন যাওয়ার হবে চলে যাব। ব্যাস। কিন্তু যতক্ষণ আছি প্রাণ ভরে বাঁচব, কাজ করব। আমার মৃত্যুর পর দুঃখ না করে আমি কেমন কাজ করেছি, ছবি করেছি সেসবের মধ্যে দিয়ে যদি আমাকে মনে রাখা হয় আমি খুশি হব'।

বন্ধ করুন