প্রায় ২ দশক সময় লেগে গেল নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির নিজেকে ভারতের অন্যতম সেরা অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে। নওয়াজের বলিউডের সফরটা খুব মসৃন ছিল না আরও চার পাঁচজন স্ট্রাগলারের মতোই। তিনি প্রাথমিক ভাবে ছোটখাটো চরিত্র দিয়ে কাজ করা এবং পাওয়া শুরু করেন। তারপর একের পর এক ছক ভাঙা চরিত্রে অভিনয় করে সকলের নজর কেড়েছেন।
‘সারফারোস’, ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস', ‘মনোরমা সিক্স ফিট আন্ডার’, ইত্যাদি ছবিতে তাঁকে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এই প্রতিটা ছবিতেই তিনি ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এরপর তাঁকে ধীরে ধীরে ‘স্যাক্রেড গেমস’, ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর’, ইত্যাদিতে ছবিতে দেখা যায় প্রধান ভূমিকায়। এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নজর কাড়েন তিনি। পরিচিতি পান বলিউডের অন্যতম সেরা অভিনেতা হিসেবে।
সম্প্রতি বিবিসি হিন্দিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানান তাঁর ফেলা আসা দিনের কথা। বলেন অতীতের দিনগুলোতে তাঁর সঙ্গে কীভাবে খারাপ ব্যবহার করা হতো। প্রজেক্টের মূল অভিনেতাদের সঙ্গে বসে খেতে চাইলে দুর্ব্যবহার করা হতো বলেই জানান তিনি।
এই সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেন, 'সহস্রবার অপমানিত হয়েছি আমি। আমি কখনও যদি সেটে কোনও স্পট বয়ের থেকে জল চাইতাম ওরা আমাকে সম্পূর্ণ ইগনোর করতো। নিজেকে উঠে গিয়ে জল নিয়ে আসতে হতো। এছাড়া একাধিক প্রযোজনা সংস্থার তরফে এখানে বিভিন্ন কলাকুশলীদের জন্য আলাদা আলাদা খাবারের ব্যবস্থা রাখা হতো। জুনিয়র আর্টিস্টরা আলাদা খেত, সাপোর্টিং আর্টিস্টরা আলাদা আবার ছবির মুখ্য অভিনেতাদের জন্য আলাদা জায়গা থাকত।'
তিনি আবারও বলেন, 'যশ রাজ ফিল্মসের মতো কিছু প্রযোজনা সংস্থার তরফে যেমন সবার একসঙ্গে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, কিছু জায়গায় আবার সেই ভেদাভেদ থাকে। আমি কখনও ছবির মুখ্য অভিনেতাদের সঙ্গে খেতে চাইলে আমায় কলার ধরে টেনে নিয়ে যাওয়া হতো। ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হতো। আমার খুব অপমানবোধ হতো, রেগে যেতাম। ভাবতাম অভিনেতাদের তো অন্তত কোনও সম্মান দেওয়া হবে! কিন্তু সেসব কিছুই হতো না।'
নওয়াজউদ্দিনকে নিয়ে এই বছর বিস্তর জলঘোলা হয়েছে, একাধিকবার তিনি খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন ব্যক্তিগত কারণে। তাঁর স্ত্রী তাঁর উপর গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ আনেন। চলে কাদা ছোড়াছুড়ি। তবে এখন সেসব অতীত। অভিনেতা এখনও পুরোপুরি কাজে মনোনিবেশ করেছেন। আগামীতে তাঁকে একাধিক ছবিতে দেখা যেতে চলেছে। 'নুরানি চেহরা', ‘হাড্ডি’, ‘টিকু ওয়েডস শেরু’ ইত্যাদি ছবিতে দেখা যাবে তাঁকে।