বাঙালির চা প্রেম কারুর অজানা নয়! সকাল-বিকাল দু-কাপ চা না হলে দিন ভালো যায় না এমন বাঙালির সংখ্যা অগুণতি। বাঙালিরা মূলত কফি নয়, চা-পার্সন। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে, তবে সংখ্যায় অনেক কম।
এক কথায় চা নিয়ে বাঙালির আদিখ্যেতার শেষ নেই। সকালে ঘুম ভাঙাতে চা চাই, অফিসের কাজে মন দিতে চা চাই, প্রেয়সীর সঙ্গে আড্ডা দিতে চা চাই। চা-এর দরকার সর্বত্র। রাস্তার চায়ের ঠেকের ৫ টাকা- ১০টার চা থেকে সাজানো-গোছানো ক্যাফেতে শতাধিক টাকায় এক পেয়ালা চা-এর কাপে চুমুক, সবই চলে সমান তালে। কিন্তু যদি বলি এক কেজি চায়ের দাম এক লক্ষ টাকা, তাহলে? হ্যাঁ, এই বাংলাতেই মেলে সেই বহুমূল্য চা, যা পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবং দামী চা। সেই চা কোথায় মেলে, কীভাবে তৈরি হয়, পূর্ণিমার রাতের সঙ্গে তাঁর কী যোগ- সবটা জানালেন অভিনেতা নীল ভট্টাচার্য।
নীল মানে বাংলা মিডিয়ামের নায়ক একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারও। অভিনয়ের পাশাপাশি ঘুরতেও দারুণ ভালোবাসেন নীল। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের কার্শিয়াং-এ ঘুরতে গিয়েছিলেন নায়ক। বা বলা ভালো মকাইবাড়ির চা বাগান ঘুরতে গিয়েছিলেন। চা নিয়ে চর্চা হলে দার্জিলিং টি-র নাম থাকবে একদম উপরের দিকে, আর দার্জিলিং টি-র মধ্যে স্বর্ণ মুকুটটি রয়েছে মকাইবাড়ির চা বাগানে।
জানেন সেই মুকুট রয়েছ কার মাথায়? ‘চায়ের রাজা’ হল সিলভার টিপস ইম্পেরিয়াল। যে চায়ের মূল্য প্রতি কেজি এক লক্ষাধিক। দার্জিলিং-এর চা মূলত বিখ্যাত তাঁর ফ্লেভারের জন্য। দার্জিলিং-এর আবহাওয়া এবং মাটির গুণই এর জন্য দায়ী।
দার্জিলিং টি বিখ্যাত তার মাস্কেটেল ফ্লেভারের জন্য। দার্জিলিংয়ের উচ্চতা, আঞ্চলিক আবহাওয়া এবং মাটির গুণেই দার্জিলিং টি-র এই বিরল স্বাদ এবং অনন্য সুবাস। সিলভার টিপস ইম্পেরিয়ালর বিশেষত্ব হল এটি তৈরি হয় শুধু কুঁড়ি থেকে। এখানেই শেষ নয়, এই চায়ের জন্য পাতা সংগ্রহ হয় শুধুমাত্র পূর্ণিমার রাতে। তাও যে কোনও পূর্ণিমায় নয়, বিশেষ বিশেষ পূর্ণিমা রাতে সংগৃহীত কুঁড়ি থেকে তৈরি হয় এই বহুমূল্যবান চা। চা-শ্রমিকদের সঙ্গে নীল ও তৃণা নিজেরাও সেই কাজে যোগ দিলেন মন খুলে।
বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত চা পাতা বাছাইকারীরা দ্রুত সংগ্রহ করে এই চা-এর কুঁড়ি। সংগৃহীত পাতা মাঝরাতেই পাঠিয়ে দেওয়া হয় ফ্যাক্টরিতে, আর পরের দিন সূর্যিমামা মুখ দেখানোর আগে চা নির্মাণের কাজ শেষ! সিলভার টিপস ইম্পেরিয়াল মূলত ওলোং টি, এই চা-তে সাধারণ চা-এর চেয়ে অনেক বেশি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। ২০১৪ সালে এই চা বিক্রি হয়েছিল এক কেজি ১ লক্ষ ২২ হাজার টাকায়।