সম্প্রতি RG করের চিকিৎসক তরুণীকে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় মিলেছে 'বায়োলজিক্যাল এভিডেন্স'। আরজি কর কাণ্ডে DNA-রিপোর্ট সামনে এসেছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, RG করের চিকিৎসক ধর্ষণের ঘটনায় নির্যাতিতার দেহ থেকে উদ্ধার নমুনা অর্থাৎ DNA শুধুমাত্র একজনের নমুনার সঙ্গেই মিলেছে। আর সেটা হল সঞ্জয় রায়। আর এই তথ্য সামনে আসার পরপরই বহু লোকজনই অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়-এর শাস্তির দাবি তুলেছেন। তবে এক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিত্ব অরিত্র দত্ত বণিক মনে করেন, চিকিৎসক ও বিচার কোনওটাই তাড়াহুড়ো করে হয়না।
অর্থাৎ হুটোপাটি করে সঞ্জয় রায়কে শাস্তি দেওয়ার পক্ষপাতি নন অরিত্র। কিন্তু কেন? সেবিষয়টিও লম্বা একটা পোস্টে বিশদে ব্যখ্যা দিয়েছেন অরিত্র দত্ত বণিক। কী লিখেছেন তিনি?
অরিত্র দত্ত বণিক লেখেন, ‘চিকিৎসা বিজ্ঞান ও বিচার ব্যবস্থার একটা কমন জিনিস কেস হিস্ট্রি, ডকুমেন্টস ম্যানেজমেন্ট ও ইনভেস্টিগেশন। দুটোই সময় সাপেক্ষ এবং দুটোতেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রেজাল্টে বদল হয়, সেই বদল সম্পূর্ণ বিপরীতে যেতে পারে। কিছুদিন আগে আমার বন্ধুর মাঝরাতে বুকে ভয়ানক ব্যথা, ঠিক হার্ট অ্যাটাকের মতো সিম্পটম, দম বন্ধ হয়ে আসছে, দ্রুত লোকাল চিকিৎসক এসে প্রেসার অক্সিজেন ইত্যাদি মেপে আশ্চর্য হলেন, প্রেসার ও অক্সিজেন নরম্যাল অথচ বুকে ভয়ানক যন্ত্রনা এমনকি জিভ চোখ সব স্টাডি করেও কোনো কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের সিম্বল পেলেননা, তবুও পেশেন্ট যেভাবে প্রায় অজ্ঞান হয়ে পড়ছিলো তিনি ইমিডিয়েটলি হার্ট ডিকঞ্জেশানের ওষুধ দিলেন। সেই রাতটা একটু স্টেবেল হলো। এরপরে আরও বড় চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রায় মাস খানেক ধরে বুকের সমস্ত রকম টেস্ট হলো, স্ক্যান হলো, কিছুই নেই সব নর্মাল, দীর্ঘদিন পর আইডেন্টিফাই করা গেলো পেশেন্টের হয়েছে স্পন্ডালাইটিস।’
আরও পড়ুন-এই প্রভাবশালী মহিলাদের জন্যই মেয়ের নাম 'দুয়া’ রেখেছেন রণবীর-দীপিকা, উঠে এল নতুন তথ্য…
হ্যাঁ, এমনটাই ঘটেছে। অরিত্র আরও লেখেন, ‘ঘাড়ের কাছের কিছু হাড়ের সমস্যা থেকে বুকের দিকে চাপ আসছে মনে হচ্ছে বুকের ব্যইথা কিন্তু আসলে সম্পূর্ণ বিপরীত বুকে কিছুই নেই হয়েছে পিঠে ঘাড়ে, সেখানে কোনো ব্যাথা অনুভব হচ্ছেনা। অত্যাধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান ব্যবহার করেও প্রচুর টেস্ট করিয়ে দীর্ঘদিন পর জানা গেলো আসল কারণ। সেইমতো নতুন ট্রিটমেন্ট শুরু করায় পেশেন্ট ধীরে ধীরে ঠিক হলো। তার মানে এই নয় যে পেশেন্টের চিকিৎসা শুরুতে হয়নি বা শুরুর দিকের চিকিৎসকরা সব ফালতু বা তাঁরা কিছু জানেনা, চিকিৎসার এটাই নিয়ম আস্তে আস্তে উন্মোচিত হয় যে আসল সমস্যা কী! বাইরে থেকে বুকে ব্যাথা বা পেটে ব্যাথা দেখে আসল ট্রিটমেন্ট হয়ে যায়না৷ একইভাবে বিচার ব্যবস্থা, সঞ্জয়ের DNA মিলেছে মানে তাকেই কাল ধরে ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট দেওয়া যায়না।’
অরিত্রর কথায়, ‘বিভিন্ন জিনিস এক এক করে ট্রায়াল অ্যান্ড এরর করে বের করতে হবে সে করেছে কিনা বা সে একাই করেছে কিনা? আর কারা আছে? কীভাবে আছেন? করলেও কেন করেছে এবং কিভাবে যোগ্য শাস্তি দিলে বিধান পাওয়া যাবে। শুধু বিজ্ঞানের সঙ্গে বিচারের একটাই বড় ফারাক, এখানে সংবিধান বা লিখিত স্ট্যাটিউটসের বাইরে হঠাৎ র্যাডিকাল কিছু করে দেওয়া যায়না।’